১৯ বছর পর বহুল আলোচিত চট্টগ্রামের নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী হত্যা মামলার চূড়ান্ত রায় দেওয়া হলো।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ সংশোধনী রায় দেন।
হাইকোর্টের দেয়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির মধ্যে রায়ের বিরুদ্ধে বাইট্ট্যা আলমগীর আপিল বিভাগে ২০০৮ সালে আপিল করেন। অপর দুজন তসলিম উদ্দিন মন্টু ও আজম ২০০৬ সালে জেল পিটিশন করেন। এসব আপিল খারিজ করে হাইকোর্টে রায় দেওয়া হয়েছিলো।
এক আসামির করা আপিল ও দুই আসামির জেল আপিলের ওপর ২৯ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগে শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত ৬ অক্টোবর রায়ের জন্য দিন রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ রায় ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। ১৯ বছর আগে এই হত্যাকাণ্ড হয়। রায়ে মৃত্যুদন্ড সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
২০০১ সালে স্ত্রী উমা মুহুরী বাদী হয়ে মামলা করলে ২০০৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। আর চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। অপর চারজন বিচারিক আদালতের রায়ে খালাস পান। ২০০৫ সালের মার্চে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গিট্টু নাছির র্যাবের ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হন।
রায়ে আদালত বলেন, “আপিলগুলো খারিজ করা হলো। সাজা সংশোধন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হলো। যেখানে যাবজ্জীবন মানে যতদিন জীবিত থাকবেন।”
দন্ডপ্রাপ্ত ৩ আসামি হলেনঃ
আলমগীর কবির,
তসলিম উদ্দিন মন্টু ও
আজম।
ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন । আসামী আলমগীরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। তসলিম উদ্দিন মন্টু ও আজমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত দৈনিক অপরাজিত বাংলাকে বলেন বলেন, “আপিল বিভাগ তিন আসামির আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন। অর্থাৎ বাকি জীবন তাঁদের কারাগারে থাকতে হবে।”
উল্লেখ্য যে, ২০০১ সালের ১৬ নভেম্বর সকালে চট্টগ্রামের জামাল খান রোডে অধ্যক্ষ মুহুরীর বাসায় ঢুকে অস্ত্রধারী দুবৃর্ত্তরা তাঁকে হত্যা করে। তার স্ত্রী উমা মুহুরী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালত থেকে মামলাটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।