রাজধানীতে বনানী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু তাহের ভুঞাঁ অপরাধীদের গডফাদার এবং টাকার কুমির হয়ে উঠেছেন। তিনি কড়াইল বিট ইনচার্জ। বনানী এলাকার চিহ্নিত বেশিরভাগ অপরাধীর সঙ্গেই তার গলায় গলায় পীড়িত, অপরাধীদের বাড়িঘরে যাতায়াত করাসহ নিয়মিত দাওয়াত খান তিনি। ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নস্থ হাসানপুরে তার বাড়ি। তিনি নিজের ইচ্ছেমতো কয়েকজন সাব ইন্সপেক্টর, কনস্টেবল ও বহিরাগতদের নিয়ে আলাদা টিম বানিয়েছেন-থানা কর্মকান্ডের বাইরে এ বাহিনী দ্বারা নিজস্ব স্টাইলে নানারকম অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে থাকেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এরমধ্যে আসামি বা টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে আটক করে অজ্ঞাত স্থানে কয়েকদিন পর্যন্ত বন্দী রাখা, দফায় দফায় নির্যাতন চালিয়ে তার পরিবার পরিজনের কাছ থেকে মুক্তিপণ স্টাইলে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করার মতো অপরাধ তারা হরদম করে থাকে। এছাড়া অএ এলাকার মাদক ব্যবসার পৃষ্ঠপোষক তিনি। নিরীহ মানুষকে গ্রেফতার করে মাদক মামলায় ফাঁসানো, মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় ও বস্তির ঘর দখলসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
আবু তাহের ভুঞাঁর সেই দাপুটে বাহিনীর মাঠ পর্যায়ের কর্মকান্ডে নেতৃত্ব দেন এসআই সোহেল রানা, এএসআই ওমর ফারুক, কালেকশনম্যান কনস্টেবল সহিদুল, (বহিরাগত) সোর্স শহীদ।
বনানী থানাধীন কড়াইলের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, এসআই আবু তাহেরকে চাঁদা না দিলে বস্তির নিরীহ মানুষকে মাদক মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়ে তাদের ঘর দখল করে নেন। মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে অনেককে এলাকাছাড়া করে তাদের ঘরও দখল করেছেন তিনি। এভাবে তিনি কড়াইল বস্তির অন্তত বিশটি ঘরের মালিক বনে গেছেন। এছাড়া কড়াইল বস্তিতে নতুন ঘর তুলতেও এসআই তাহেরকে চাঁদা দিতে হয় বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৮ সালে বনানী থানায় যোগদান করা এসআই তাহের এরইমধ্যে মাদক ব্যবসায়ীদের গডফাদার বনে গেছেন। বিভিন্ন সূএে জানা গেছে, আড়ালে থেকে তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের মদদ দিচ্ছেন। তার ইশারাতেই হচ্ছে মাদক ব্যবসা। মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সাপ্তাহিক মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করছেন। যারা তাকে ম্যানেজ করতে পারেন না তারাই হচ্ছেন গ্রেফতার। আর যারা ম্যানেজ করতে পারেন তারা অনেকটা প্রকাশ্যেই করছেন মাদক ব্যবসা।
অভিযোগ রয়েছে, এসআই আবু তাহের মাদক মামলায় এ পর্যন্ত যাদের গ্রেফতার করেছেন হাতে গোনা কয়েকজন বাদে তারা কেউই মাদক ব্যবসায়ী না। অধিকাংশই নিরীহ মানুষ, তার ফাঁসানো মামলায় জেল খাটছেন, মামলা বয়ে বেড়াচ্ছেন। ঘুরেফিরে একজনকেই বারবার গ্রেফতার করেছেন এমন ঘটনাও আছে। সন্দেহভাজন নিরীহ মানুষকে গ্রেফতার করে কিছু না পেলেও নিজের মনগড়া মাদক দিয়ে মাদক মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে তার পয়েন্টের পাল্লা ভারি করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ডিএমপির গোয়েন্দা প্রতিবেদনেও মাদকের পৃষ্টপোষক হিসেবে উঠে এসেছিল এসআই আবু তাহেরের নাম।