সপ্তম দফায় টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের দ্বিতীয় দিন রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সোমবার সকালে পল্লবী, মিরপুর, বাড্ডা, তেজগাঁও, উত্তরা, আদাবর, মতিঝিল, শনির আখড়া, মুগদা এবং লালবাগ এবং ডেমরায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াতের উদ্যোগে এসব মিছিল অনুষ্ঠিত।
ডেমরায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের নেতাকর্মীরা অবরোধের সমর্থনে মিছিল বের করলে পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ দলটির। এসময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। সকালে আদাবরে মিছিল করেন উত্তরের নেতাকর্মীরা। এতে ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ দলটির। এই হামলায় ৩ থেকে ৪ জন আহত হয়েছেন এবং ২ জন কর্মীকে পুলিশ আটক করেছে বলেও অভিযোগ তাদের।
মিছিলে জামায়াতের নেতৃবৃন্দরা বলেন, সরকার জামায়াতকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে নির্বাচনী ময়দানকে প্রতিপক্ষমুক্ত করার জন্যই ন্যায়ভ্রষ্ট রায়ের মাধ্যমে দলের নিবন্ধন বাতিল করেছে। তারা রাজনৈতিক দলছুটদের পদ-পদবীর প্রলোভন দেখিয়ে এবং অর্থের বিনিময়ে কথিত অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের নামে ভানুমতির খেলা শুরু করেছে। কিন্তু বাকশালীদের স্মরণ রাখা উচিত জামায়াতসহ দেশের সকল দলের অংশগ্রহণ এবং কেয়ারটেকার সরকার ছাড়া এদেশে কোন নির্বাচন জনগণ হতে দেবে না। বরং যেকোন মূল্যে তামাশা ও ভাঁওতাবাজীর নির্বাচন সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করবে।
সকালে মিরপুর-১১নং পল্লবীতে রাস্তা বন্ধ করে অবরোধ সমর্থনে বিক্ষোভ করেছেন নেতাকর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য নাসির উদ্দীন।
মিরপুর কাফরুল অঞ্চলের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মিছিলে নেতৃত্ব দেন উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য টুটুল।
বাড্ডায় অবরোধ সমর্থনে মিছিল করেছেন নেতাকর্মীরা। মহানগরের মজলিশে শূরা সদস্য আব্দুস সবুর ফরহাদ এই মিছিলে নেতৃত্ব দেন। সকালে তেজগাঁও এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন কর্মীরা। উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে এ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। উত্তরায় মিছিল ও পিকেটিং করেছেন নেতাকর্মীরা। এই মিছিলে নেতৃত্ব দেন উত্তরের মজলিসে শূরার সদস্য এস কে রতন ও মো. সলিম।
সকালে আদাবরে মিছিল করেছেন উত্তর জমায়াতের নেতাকর্মীরা। এই মিছিলে ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ দলটির। এতে ৩ থেকে ৪ জন আহত হয়েছে এবং ২ জন কর্মীকে পুলিশ আটক করেছে বলেও অভিযোগ তাদের।
এদিকে অবরোধ সমর্থনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকালে রাজধানীর মতিঝিলে সড়ক অবরোধ করে মিছিল করেছেন দক্ষিণের নেতাকর্মীরা। এই মিছিলের নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. আবদুল মান্নান।
এ সময় মান্নান বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরের অপশাসন ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণ আজ রাজপথে নেমে এসেছে। এই অবৈধ সরকার তার ক্ষমতার মেয়াদকে দীর্ঘায়িত করতে আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে জনধিকৃত ও প্রহসনের তফসিল ঘোষণা করেছে। ইতোমধ্যেই দেশের জনগণ ও সকল বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি এই তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা সরকারকে স্পষ্ট বলতে চাই, অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন। অন্যথায় রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমেই আপনাদের পতন নিশ্চিত করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
রাজধানীর শনির আখড়ায় সড়ক অবরোধ করে মিছিল করেছেন দক্ষিণের নেতাকর্মীরা। এই মিছিলে নেতৃত্ব দেন দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ড. মোবারক হোসাইন। মুগদা বিশ্বরোড সড়ক অবরোধ করে মিছিল করেছেন নেতাকর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য মতিউর রহমান। লালবাগ এলাকায় সড়ক অবরোধ করে মিছিল করেছেন নেতাকর্মীরা। এই মিছিলে নেতৃত্ব দেন দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য আব্দুল বারী।
ওদিকে অবরোধের সমর্থনে রাজধানীর ডেমরায় মহাসড়ক বন্ধ করে মিছিল করেছেন দক্ষিণের নেতাকর্মীরা। এসময় অবরোধকারীদের উপর পুলিশ হামলা চালিয়ে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এই মিছিলের নেতৃত্ব দেন দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান।