বিশ্বের সকল বাবা-মা’ই চায় তার সন্তান বেড়ে উঠুক সবচেয়ে ভাল উপায়ে। প্রত্যেকটা পিতামাতই চেষ্টা করে তার শিশুকে শ্রেষ্ঠ পরিচর্যায় বড় করে তুলতে। জন্মের পর বাবা-মা’র পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও উচিত নবজাতকের প্রতি যত্নশীল হওয়া।
শিশুর জীবনের প্রথম বছর শিশুর বৃদ্ধির হার বেশি থাকে। এই সময়য়ে মা-বাবার উচিত শিশুর জন্য উপযুক্ত খাবারগুলি নির্বাচন করা এবং কিছু খাবার না খাওয়ানো। শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য সুষম খাবারে বিকল্প নেই। জন্মের পর শিশুর জন্য আদর্শ খাবার হচ্ছে মায়ের বুকের দুধ। তবে ছয় মাস বয়সের পর থেকে তাকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক খাবারে অভ্যস্ত করা জরুরি। তবে এটাও মনে রাখা দরকার, শিশুর জন্মের প্রথম বছরে কিছু নির্দিষ্ট খাবার এড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন অনেক খাবার আছে যেগুলি শিশুর শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন-
মধু:
এক বছরের কম বয়সী ছোট বাচ্চাদের মধু খাওয়াবেন না। এতে ক্লস্ট্রিডিয়াম বটুলিনাম নামে এক ধরনের রেণু থাকে, যা শিশুরা সেবন করলে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়। ফলে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য,ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। এটি এক বছরের কম বয়সী শিশুদের উপর দ্রুত প্রভাব ফেলে।
গরুর দুধ:
গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুদের গরুর দুধ খাওয়ালে তাদের স্বাস্থ্যের উপর বিপরীত প্রভাব ফেলে। গরুর দুধে আয়রনের পরিমাণ কম থাকায় শিশুদের আয়রনের ঘাটতি হতে পারে। এছাড়াও, গরুর দুধে থাকা ক্যালসিয়াম এবং কেসিন ডায়েটরি নন-হিম আয়রনের শোষণ বন্ধ করে দেয়।
ফলের রস: আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স (এএপি) এর তথ্য অনুযায়ী, ছয় মাসের ছোট শিশুদের ফলের রস খাওয়ানো ঠিক নয়। কারণ জুস শিশুদের প্রথম বছরে কোনও পুষ্টি সরবরাহ করে না।
চকোলেট:
শিশুদের প্রথম এক বছরে চকোলেট না দেওয়াই ভালো। কারণ এতে মিল্ক সলিড থাকায় অ্যালার্জি হতে পারে। এছাড়া দুধযুক্ত যেকোনও খাবার এক বছরের কম বয়সী শিশুদের দেওয়া উচিত নয়।
বাদাম:
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের বাদামে অ্যালার্জি হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এ কারণে ছোট শিশুদের পিনাট এবং পিনাট বাটার বা যেকোনও ধরনের নাট বাটার অবশ্যই এড়ানো উচিত।
সামুদ্রিক খাবার:
সামুদ্রিক খাবার, বিশেষ করে শেলফিস এবং অন্যান্য মাছে উচ্চ পরিমাণে পারদ থাকায় এটি শিশুদের না দেওয়াই ভালো।
মাংস:
জন্মের প্রথম বছরে শিশুদের মাংসজাতীয় খাবার দেওয়া উচিত নয়, কারণ তাদের পক্ষে হজম করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। এতে থাকা সোডিয়াম এবং প্রাণিজ ফ্যাট শিশুর পক্ষে ভালো নয়।
ডিম:
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা বাচ্চাকে ডিম দেওয়া এড়াতে বলে কারণ দুই শতাংশ শিশুর ডিম থেকে অ্যালার্জি হয়।
বেরি:
বিভিন্ন ধরনের বেরি যেমন-ব্ল্যাকবেরি, ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, রাস্পবেরি এবং সাইট্রাস ফল অ্যাসিডিক প্রকৃতির। এগুলি খেলে শিশুদের অ্যাসিডিটি বাড়ে সেই সঙ্গে পেট খারাপ হতে পারে।