প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের এই কালে বাংলাদেশ জনগণের জীবন ও জীবিকায় সমান গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এসব পদক্ষেপ ও উদ্যোগের কথা তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৫তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর (ভার্চ্যুয়াল) পূর্বে রেকর্ডকৃত ভাষণ উপস্থাপন করা হয়।
জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৭তম ভাষণ। এরআগে ১৬ বার সশরীরে উপস্থিত হয়ে বিশ্বশান্তি ও সৌহার্দের ডাক দিয়েছেন তিনি। এবারই ব্যতিক্রম। করোনা মহামারির কারণে কোনো রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান আসেননি নিউইয়র্কে। আগে ধারণ করা ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে দেওয়া বক্তৃায় করোনা পরিস্থিতিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ প্রমাণ করেছে আমাদের সকলের ভাগ্য একই সূত্রে গাঁথা। আমরা কেউই সুরক্ষিত নই, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা সকলের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা কেউই সুরক্ষিত নই যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা সবার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনা প্রমাণ করেছে, আমাদের সবার ভাগ্য একই সূত্রে গাঁথা। আমরা কেউই সুরক্ষিত নই যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা সবার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারছি। এ ভাইরাস আমাদের অনেকটাই ঘরবন্দি করে ফেলেছিল। এর ফলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
করোনা মহামারিতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮ দশমিক ২ শতাংশ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু করোনা আমাদের এ অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করেছে।
করোনা মহামারি সংকট মোকাবিলায় সবার ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্বের বিষয়টি আবারও সামনে এনেছে মন্তব্য করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যেমন জাতিসংঘ সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্বের সব দেশের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের ওপর গুরুত্বারোপের সুযোগ সৃষ্টি করেছিল, তেমনি এ মহামারি আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সঠিক নেতৃত্ব দিতে প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে।
স্বাস্থ্যকর্মীসহ যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ও জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিয়ে চলেছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে করোনা দুর্যোগে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও বহুপাক্ষিক উদ্যোগের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব ও সংস্থাটির প্রশংসা করেন তিনি।
বিশ্বব্যাপী করোনার কারণে জাতিসংঘের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এ প্রথম বিশ্ব নেতারা বিশ্বের সর্বোচ্চ ফোরাম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভার্চ্যুয়াল অধিবেশনে অংশ নিচ্ছেন। শেখ হাসিনা বলেন ১৯৭৪ সালে এই কক্ষে দাঁড়িয়ে আমার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সদ্য স্বাধীন দেশের সরকার প্রধান হিসেবে মাতৃভাষা বাংলায় প্রথম ভাষণ দিয়েছিলেন। আমিও এই কক্ষে এর আগে ১৬ বার সশরীরে উপস্থিত হয়ে বিশ্বশান্তি ও সৌহার্দ্যের ডাক দিয়েছি। সরকার প্রধান হিসেবে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে এটি আমার ১৭তম বক্তৃতা।
এ বছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘আমরা ভবিষ্যৎ চাই, জাতিসংঘ আমাদের প্রয়োজন: বহুমুখীতার প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্নিশ্চিতের মাধ্যমে। ’