‘আমি বার্সায় থাকছি। এখানে আমার আচরণে কোনো পরিবর্তন হবে না, যতই এখান থেকে চলে যেতে চাই না কেনো।
আমি সেরাটাই দেবো। আমি সবসময় জিততে চাই, কোনো কিছুই হারতে চাই না। ক্লাব, ড্রেসিংরুম এবং আমার নিজের জন্য সবসময় সেরাটাই চাই।’
বার্সেলোনার প্রতিও আনুগত্যের কথা মেসিকেও মুখে বলতে হবে; অন্তত এভাবে বলতে হবে সেটা হয়তো কেউ কখনো ভাবেননি। অনেক জলঘোলার পর শেষ পর্যন্ত বার্সা সমর্থকদের স্বস্তির খবর দেন মেসি। জানান, আরো অন্তত ১০টি মাস তিনি ক্যাম্প ন্যু’তেই থাকছেন। কিন্তু আসলেই কি স্বস্তি ফিরেছে?
মেসি ক্লাব না বদলালেও গত কয়েক সপ্তাহে বদলে গেছে অনেক কিছু। ‘মেসি মানেই বার্সেলোনা, বার্সেলোনা মানেই মেসি’ এই ধারণা এখন আর নেই। আর তাইতো ক্লাবের প্রতি নিজের অঙ্গীকার মুখে বলে স্মরণ করিয়ে দিতে হচ্ছে তাকে।
সাম্প্রতিক সময়ের নাটকীয়তাগুলো অনেক কিছু সামনে নিয়ে এসেছে। এতে বার্সা সমর্থকরাও বিভক্ত হয়ে গেছেন। এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, পান থেকে চুন খসলেই বিপদ!
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কার এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে মেসির সমালোচকের সংখ্যা বেড়েছে। এখন খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে তার যে ধরণের বাজে প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে তা আগে কখনো তার সঙ্গে ঘটেনি।
ডেসিংরুমেও আগের মতো স্বস্তি পাবেন না মেসি। তার পুরনো বন্ধুদের অনেককেই পাবেন না। লুইস সুয়ারেজ এবং আর্তুরো ভিদালরা হয়তো চলেই যাবেন। শুধুমাত্র জর্ডি আলবা এবং সার্জিও বুসকেটসকে হয়তো পাবেন। এদিকে নতুন কোচ রোনাল্ড কোম্যানের অধীনে কতটুকু সম্মান পাবেন কিংবা আগের মতো মাঠের খেলায় স্বাধীনতা পাবেন কিনা সেটা নিয়েও আছে সন্দেহ।
এই বিষয়গুলো স্বাভাবিকভাবেই মেসি বাড়তি চাপে রাখবে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে মাঠের খেলায়ও। আবার পারফরম্যান্সে ঘাটতি হলেও শুনতে হবে সমালোচনা। অতএব চাপের একটা ‘দুষ্টচক্রে’ পড়ে যাবেন তিনি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে লজ্জাজনকভাবে বার্সার বিদায়ের পর টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে মেসির ক্লাব ছাড়ার ঘোষণায় কষ্ট পেয়েছেন লাখো কোটি বার্সা সমর্থক। দলকে বিপদে রেখে এভাবে চলে যাবার সিদ্ধান্তকে স্বার্থপরতা বলেছেন অনেকেই।
তবে বার্সেলোনার প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে কষ্ট পান মেসি। গোল ডটকমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, আমি কষ্ট পাই যখন কিছু মানুষ, কিছু সাংবাদিক ক্লাবের প্রতি আমার অঙ্গীকার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং এমন কিছু কথা বলেন যা আমার প্রাপ্য না। যখন তারা বার্সার প্রতি আমার ভালোবাসা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তখন সেটা আমাকে পীড়া দেয়।
‘আমি এখানে থাকি কিংবা চলে যাই, সেটি বার্সার প্রতি আমার ভালোবাসায় কোনো প্রভাব ফেলবে না।’ বলেন মেসি।
দৈনিক অপরাজিত বাংলা