অঢেল অর্থ, প্রাচুর্য থাকলে মানুষ তার ইচ্ছেকে আকাশ ছাড়িয়ে নিতে পারেন। কোন দেশের এক বছরের বাজেটের অর্থ হয়তো কোন একজন ব্যাক্তির বিলাশিতার এক মুহুর্তের খরচ। বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের নিত্য নতুন বিলাশিতা পূরণের খরচ শুনলে সাধারন মানুষের চক্ষু কপালে উঠে।
তেমনি সম্প্রতি জানা গেলো বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী মরক্কোর ৬ষ্ঠ বাদশা মোহাম্মদ হিসেবে পরিচিত তিনি প্রায় ৮০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে ফ্রান্সের আইফেল টাউয়ারের কাছে এক বিলাশ বহুল প্রসাদ কিনেছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার মূল্য ৮০০ কোটি টাকারও বেশী!
গনমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, প্রাসাদটির মালিক ছিলো সৌদি রাজ পরিবারের যুবরাজ খালেদ বিন সুলতান বিন আব্দুলাজিজ আল সৌদ। তাঁর কাছ থেকেই মরক্কোর ৬ষ্ঠ বাদশাহ্ মোহাম্মদ। এর আগে সৌদি যুবরাজ ১৯৮৮ সালে রিয়েল এস্টেটের ম্যাগনেট ক্লড ওট থেকে এটি কিনেছিলেন। প্রসাদটির ক্রয় করার প্রক্রিয়া রাজার ব্যক্তিগত আইনজীবী হিচাম নাসিরির মাধ্যমে পরিচালিত হয় বলে জানা গেছে।
বিশ্বখ্যাত আইফেল টাওয়ারের কাছে অবস্থিত ওই প্রাসাদে ১২টি শোয়ার ঘর, একটি সুইমিং পুল, খেলার ঘর, ব্যক্তিগত বাগান ও ব্যক্তিগত পার্কিং সুবিধা রয়েছে।
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, মরক্কোর বাদশা ষষ্ঠ মোহাম্মদের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের তুলনায় ১০ গুণ বেশি।
করোনাভাইরাস মহামারিতে মরক্কোর অর্থনীতি ৬ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতেও দেশের বাইরে প্রাসাদ কিনেছেন তিনি।
গত আগস্ট মাসে মরক্কোর বাদশা বলেন, করোনা মহামারি থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ৩২০০ কোটি মার্কিন ডলার দেওয়া হচ্ছে।
জানা যায়, প্রাসাদটি ১৯১২ সালে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি 20 অ্যাভিনিউ -মিল দেশনেলে অবস্থিত। গুগল ম্যাপস অনুসারে সেখান থেকে আইফেল টাওয়ারে যেতে সময় লাগে মাত্র নয় মিনিট। লুভর যাদুঘরটিতে যেতে সময় লাগে মাত্র চৌদ্দ মিনিট।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালের আরব বসন্তের পর মরক্কোর বাদশাহ ষষ্ঠ মোহাম্মদ বেশ কিছু সংস্কার কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন। নতুন সংবিধান হয়, পার্লামেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বাড়ানো হয়। মরক্কোর বাদশাহকে মানুষ দেখেন রাজনীতির ঊর্ধ্বে। মরক্কোর সেনাবাহিনীকেও রাজার প্রতি অনুগত বলে মনে করা হয়।
১৯৯৯ সালে বাদশা মোহাম্মদ সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন। টেলকুয়েল ম্যাগাজিন এর একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তাঁর রাজত্বের প্রথম নয় বছরে তার সম্পদের পরিমান ৪৪৩ মিলিয়ন ইউরো থেকে ২,৩০০ মিলিয়ন ইউরোতে দাঁড়িয়েছিলো। ২০০৭ সালে আমেরিকান ম্যাগাজিন ফোর্বস মোহাম্মদ ষষ্ঠকে বিশ্বের সপ্তম ধনীতম রাজা হিসাবে স্থান দিয়েছিলো। আট বছর পরে, ২০১৫ সালে, ফোর্বসের প্রকাশিত আরেকটি পরিসংখ্যানে দেখা যায় তাঁর সম্পদের পরিমান বেড়ে দাঁড়ায় ৫০০০ মিলিয়ন ইউরোর, যা ২০০৭ সালের পর দ্বিগুণেরও বেশী।