বাংলা টেলিফিল্ম “আয়না” ছবির কথা মনে আছে? সারা জাগানো চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত আয়না ছবিতে টাকার বিনিময়ে অপরাধীদের সাজা নিজে নিতো। এমনই এক বাস্তব ঘটনা ঘটে ২০১৯ সালের একটি মাদক মামলায় গত ৮ জুলাই আদালতে আত্মসমর্পণ করে মামলার প্রকৃত আসামি আনোয়ার হোসেনের পরিবর্তে নকল আসামি কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার হানিফ।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার আনোয়ার হোসেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত আসামি। কিন্তু টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামী আনোয়ার হোসেনের পরিবর্তে আদালতে আত্মসমর্পণ করা নকল আসামী হানিফ এখন কারাগারে।
গত ১০ই আগস্ট সোমবার নকল আসামির জামিন শুনানীর সময় বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায় এবং এ সময় ওই নকল আসামির জামিন না মঞ্জুর করে আদালত জেল হাজতে প্রেরণ করে।
এ সময় সরকার পক্ষের আইনজীবী পিপি জহিরুল ইসলাম সেলিম আদালতকে জানান, ‘প্রকৃত আসামি আনোয়ার হোসেনের পরিবর্তে নকল আসামি হানিফ আত্মসমর্পণ করেছিল, নকল আসামি কারাগারে রয়েছে।’ এ সময় আদালত জামিন শুনানী মুলতবি ঘোষণা করা হয়। ঘটানাটি আদালত পাড়ায় মুখরোচক খবর হয়ে দাঁড়ায়।
এ বিষয়ে সরকার পক্ষের আইনজীবী পিপি জহিরুল ইসলাম সেলিম দৈনিক অপরাজিত বাংলা~কে বলেন, ‘কিছু দিন আগে মাদক মামলায় সদর কোর্টে আত্মসমর্পণ করেন আসল আসামি আনোয়ার হোসেনের পরিবর্তে নকল আসামী হানিফ। তখন আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। সোমবার জেলা ও সেশন জজ আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করা হয়, তখন আমি বিজ্ঞ আদালতকে বলি এ মামলায় নকল আসামি জেলে আছে।’ তিনি আরও বলেন, আনোয়ার হোসেন টাকা দিয়ে বরুড়া উপজেলার বড় হাঙ্গিনীর মৃত মনু মিয়ার ছেলে হানিফকে আত্মসমর্পণ করিয়ে ছিলেন। জামিন শুনানীর জন্য আদালত মামলাটি আবারো সদর কোর্টে প্রেরণ করে।’ এদিকে বিষয়টি জানার পর আসামি পক্ষের আইনজীবী মামলা পরিচালনা থেকে অব্যাহতি নেন।
গত ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই মাদক ব্যবসায়ী হেলাল ওরফে মুরগী হেলালকে ২ কেজি গাঁজাসহ আটক করেন মামলার বাদী কুমিল্লার ডিবির তৎকালীন এসআই নন্দন চন্দ্র সরকার। আটক আসামি হেলালের তথ্যমতে জানা যায় তার সাথে আরেক মাদক ব্যবসায়ী আনোয়ার ছিলো। এ বিষয়ে তখন কোতয়ালী থানায় একটি মাদক মামলা দায়ের করা হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই মামলার প্রকৃত আসামি আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করা যায় নায়। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়।