সরকারের প্রতিটি সেক্টরে দুর্ণীতির বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক বিষয়। এবার পাওয়া গেল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নিয়োগে বিপুল পরিমান অবৈধ অর্থের লেনদেনের তথ্য।
জানা যায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহাকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে নিয়োগে কোটা জালিয়াতি ছাড়াও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ আছে। ডজনখানিক চাকরি প্রার্থীর নিকট থেকে অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তার টাকা নেয়ার কাগজপত্রও পাওয়া গেছে। দুর্নীতি ও সরকারি নিয়োগে নীতিমালা লঙ্ঘণের অভিযোগে ইতিমধ্যে এই নিয়োগে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের টাকা নেয়ার ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নাছিমুজ্জামান নামের একজন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।
চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি প্রকাশিত ১ হাজার ৬৫০ জনের এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে অধিদপ্তরের আরো অনেকের বিরুদ্ধেই।
ময়মনসিংহের নিজামউদ্দিন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে চাকরি পেতে ১৫ লাখ টাকা চুক্তি করেন নিয়োগ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করা উপ-পরিচালক মাহবুবুল আলমের সাথে। লিখিত পরীক্ষায় কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েই আর্থিক লেনদেনের জোরে উতরে গেলেও রহস্যজনক কারণে চুড়ান্ত সুপারিশের তালিকা থেকে তার নাম বাদ পড়ে।
নিজামসহ ১২ জন মাহবুবুল আলমকে প্রায় দুই কোটি টাকা দেন। এই ১২ জনের মধ্যে ৪ জনের চাকরি হয়েছে। আরও অনেকের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মাহবুবুল আলম দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সদ্য বিদায়ী মহাপরিচালক জানান, দুর্নীতির প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুর্নীতি ও সরকারি নিয়োগে নীতিমালা লঙ্ঘণের অভিযোগে হাইকোর্টে চারটি রিট হওয়ায় নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে আদালত।
চাকরি নামের সোনার হরিণ ধরতে সুস্থ্য মানুষ সাজছেন প্রতিবন্ধি। অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় মিলছে সার্টিফিকেটও। আছে উর্ধ্বতনদের মোটা অংকের অনৈতিক বাণিজ্য। এসবের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছেন প্রকৃত মেধাবীরা। কৃষি নির্ভর বাংলদেশের কৃষিকে সমৃদ্ধ করতে মাঠ পার্যায়ের উপ-সহকারী কর্মকর্তা নিয়োগে তাই মেধাবীদের জায়গা নিশ্চিত করার দাবি সংশ্লিষ্টদের।