গত দশ বছরে প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে ২১৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা তছরুপ করা হয়েছে।মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের ২০০৯-১০ হতে ২০১৯-২০ অর্থ বছর পর্যন্ত ২২ হাজার ৯৯০টি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন থেকে এই চিত্র উঠে এসেছে।
এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি কর্তৃক অবৈধভাবে উত্তোলিত সমুদয় টাকা আদায়ে সুপারিশ করেছে। এছাড়া দেশের উচ্চ শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তদারকি বৃদ্ধির জন্য সুপারিশ করা হয়। বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ১৩তম বৈঠকে এসব তথ্য পর্যালোচনা করে সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভা্পতি আলী আশরাফ বলেন, “এই অর্থ বিধিবর্হির্ভূতভাবে সরকারি কোষাগার থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। এজন্য আমরা বলেছি মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের মাধ্যমে আবার নিরীক্ষা করতে হবে এবং এই টাকা আদায় করতে হবে।” বৈঠকে কমিটির সদস্য মো. মুজিবুল হক, গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও আব্দুল মান্নান বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
সংসদের গণসংযোগ বিভাগ দৈনিক শিক্ষাকে জানায়, বৈঠকে একাদশ জাতীয় সংসদে প্রথম অধিবেশন হতে সম্প্রতি সমাপ্ত অধিবেশন পর্যন্ত সংসদের ফ্লোরে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অগ্রগতি, প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়।
বৈঠকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের ২০০৯-২০১০ হতে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছর পর্যন্ত ২২ হাজার ৯৯০টি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।
এসময় তদন্ত কার্যক্রমে উল্লেখিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/ব্যক্তি কর্তৃক অবৈধ/বিধিবহির্ভূতভাবে উত্তোলিত ২১৫ কোটি ৫৪ লাখ ১৩ হাজার ৪৩৩ টাকা আদায়ের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের মাধ্যমে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নিরীক্ষা করার জন্য সুপারিশ করে কমিটি।
এছাড়া জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন ও অভিভাবকদের সহায়তায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতিসহ শিক্ষকদের শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং আইএমইডির অতিরিক্ত সচিব, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য, বিভিন্ন সংস্থা প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।