নিশ্চিদ্র নিরপত্তার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে উপজেলার শতবর্ষী দ্বীনিশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নাজিরহাট নছিরুল ইসলাম বড় মাদ্রাসার বহুল প্রতিক্ষিত শূরা বৈঠক। শূরা সদস্য মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে মাদ্রাসার সম্মেলনকক্ষে সকাল ১১টা থেকে শুরু হওয়া এ বৈঠক দুপুর ২টায় শেষ হয়। এতে আব্দুল হালিম বোখারী, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, নোমান ফয়জীসহ শূরার ১৩ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে শেষে শূরার সিদ্ধান্ত সমূহ ঘোষণা করেন নুরুল ইসলাম জিহাদি। এ সময় তিনি বলেন, শূরা সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে মুফতি হাবিবুর রহমান কাসেমীকে মুহতামিম (পরিচালক) মনোনীত করা হয়েছে। এছাড়া, মাওলানা ইয়াহিয়াকে নায়েবে মুহতামিম(সহযোগি পরিচালক), মাওলানা ইসমাইলকে মুঈনে মুহতামিম(সহকারী পরিচালক) এবং মাওলানা হাবিবুল্লাহ নদভীকে শিক্ষা পরিচালক নিযুক্ত করা হয়েছে।

শুরা কমিটি কতৃক প্রতিষ্ঠান হতে আজীবন বহিস্কৃত মাওলানা সলিম উল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, নিজেকে মুহতামিম দাবি করে মাদ্রাসার পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার দায়ে মাওলানা সলিমুল্লাহকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে শূরা কমিটি। একইসাথে তার অপকর্মে সহযোগিতা করায় ১২ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে বুধবারের শূরা বৈঠককে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মঙ্গলবার রাত থেকে মাদ্রাসার আশপাশসহ নাজিরহাট এলাকায় তিন শতাধিক র্যাব-পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নাজিরহাট বাজারের পাঁচ সহস্রাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং যানচলাচল ও জনসমাগম নিয়ন্ত্রিত ছিল। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সায়েদুল আরেফিনের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন।

নিরাপত্তায় পুলিশ বাহিনী।
এদিন চট্টগ্রাম -নাজিরহাট-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের চারিয়া থেকে কুম্ভারপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়কে পুলিশের টহল ও নজরদারী অব্যাহত ছিল।
উল্লেখ্য, ২৭ মে মাদ্রাসার মুহতামিম আল্লামা শাহ মুহাম্মদ ইদ্রিস ইন্তেকাল করলে সহকারী পরিচালক মুফতি হাবিবুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত মুহতামিমের দায়িত্ব দেয় শূরা কমিটি। পরবর্তিতে মাদ্রাসার শূরা সদস্য হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার প্রয়াত পরিচালক আল্লামা আহমদ শফী মাওলানা সলিমুল্লাহকে মুহতামিম ঘোষণা করেছে দাবি করে মাদ্রাসায় নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া হয়ে উঠে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা কারণে সমালোচিত সলিমুল্লাহ। যার ফলে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থী দের মধ্যে বিভাজনের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ চার মাস ধরে মাদ্রাসাজুড়ে অস্থিরতা বিরাজ করে আসছিল ।
এর মধ্যে, গেল শনিবার বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের তীব্র আন্দোলনের মুখে মাদ্রাসা ত্যাগ করতে বাধ্য হয় মুহতামিম দাবিদার মাওলানা সলিমুল্লাহ। শতবর্ষী এ দ্বীনিশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান জটিলতা নিরসনে বুধবার (২৮ অক্টোবর) বহুল প্রতিক্ষিত শূরা কমিটির বৈঠক সকাল ১১ টায় উক্ত মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হয়।