প্রায় প্রতিদিনই দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের নতুন নতুন তথ্য আসছে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের। গুঞ্জন উঠেছে, তুরস্কের নাগরিকত্ব নিয়েছেন বেনজীর। এর জন্য তাকে গুনতে হয়েছে ৫ কোটি টাকা। স্ত্রী জীশান মির্জার নামে সেকেন্ড হোম রয়েছে স্পেনে।
এর আগে গতকাল জানা যায়, সরকারী কর্মকর্তাদের নীল বা সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা হওয়ায় লাল পাসপোর্ট পেলেও তা না নিয়ে, তথ্য গোপন করে সাধারণ সবুজ পাসপোর্ট নেন বেনজীর।
এ প্রসঙ্গে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা পূর্বানুমোদন ছাড়া বিদেশে যেতে পারেন না। এটা এড়ানোর জন্য সরকারি চাকরির তথ্য গোপন করে পাসপোর্ট নেওয়াটা একটা কারণ।
অন্য কারণ হচ্ছে-বেসরকারি চাকরিজীবী হিসাবে তিনি যতটা সহজে বিদেশে ভ্রমণ, বিনিয়োগ ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পাবেন, সরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে অফিশিয়াল পাসপোর্ট করলে সেই সুযোগ পাবেন না। কাজেই ভয়াবহ ধরনের অপরাধের পরিকল্পনা যে তার শুরু থেকেই ছিল, এটা তারই পরিচায়ক।
এদিকে নাম প্রকাশ না করে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তিনি (বেনজীর) ৪ মে সপরিবারে সিঙ্গাপুরে গেছেন। কয়েকদিন আগে তিনি তুরস্ক গেছেন বলে আমাদের কাছে তথ্য এসেছে।
গোপালগঞ্জ ও তার শ্বশুরবাড়ির দুই ব্যক্তি তুরস্কে আছেন। তারা একসময় পুলিশ সদর দপ্তর ও র্যাব সদর দপ্তরে ঠিকাদারির কাজ করতেন। ফলে বেনজীরের অন্য দেশের নাগরিকত্ব নেওয়ার বিষয়টি ক্রমশই পরিষ্কার হচ্ছে।
এদিকে নিয়মানুযায়ী সিনিয়র সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা হিসাবে তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট পাওয়ার কথা থাকলেও মর্যাদাপূর্ণ লাল পাসপোর্টও নেননি। আইজিপি হয়েও তিনি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বেসরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে সাধারণ পাসপোর্টের আবেদন করেন।
পাসপোর্ট সংশ্লিষ্টদের মতে, আইজিপি হয়েও বেনজীরের মর্যাদপূর্ণ কূটনৈতিক পাসপোর্ট না নেওয়া অস্বাভাবিক। এর ভিন্ন কারণ থাকতে পারে। হয়তো ইতোমধ্যে তিনি ভিন্ন কোনো দেশের নাগরিকত্ব নিয়েছেন।
এ কারণে ইচ্ছা থাকলেও তিনি লাল পাসপোর্ট গ্রহণ করতে পারেননি। এছাড়া যে কোনো সময় দেশ ত্যাগের সুযোগ খোলা রাখতে হয়তো তিনি সাধারণ পাসপোর্ট নেওয়াকে নিরাপদ মনে করেছেন।
এসব তথ্য সামনে আসার ফলে বেনজীর আহমেদ অন্য দেশের নাগরিকত্ব নিয়েছেন বলে যে গুঞ্জন উঠেছে তা আরও জোরাল হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্রঃ দেশ রুপান্তর।