দেশে পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই, পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। বিশেষ করে দেশীয় পেঁয়াজের বর্তমান মজুত প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন। দেশের পেঁয়াজসমৃদ্ধ অঞ্চলগুলোর পাইকারি হাট-বাজারে বিপুল পেঁয়াজ ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে, সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিকল্প পথে এলসি’র মাধ্যমে মিয়ানমার, মিশর ও তুরস্ক থেকে জরুরিভিত্তিতে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমদানিকৃত পেঁয়াজ দেশে পৌঁছালে অল্প সময়ের মধ্যেই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
চাহিদা মোতাবেক বাজারে পেঁয়াজের মজুত, সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে গত বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পদক্ষেপগুলো হলো –
পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে ভারত সরকারের সাথে কুটনীতিক মাধ্যমে জরুরিভিত্তিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য পররাষ্ট্র সচিবকে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
আমদানিকৃত পেঁয়াজ স্থলবন্দর হতে দ্রুততম সময়ে ছাড় করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে এনবিআর-এর চেয়ারম্যান এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
আগামী মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত পেঁয়াজের ওপর ৫% আমদানি শুল্ক আপাতত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে এনবিআর- এর চেয়ারম্যানকে পুনরায় পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
পেঁয়াজের বিষয়ে দ্রুত সঙ্গনিরোধ সনদ ইস্যু করার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিং জোরদার করেছে।
দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলা (ফরিদপুর, পাবনা, রাজবাড়ী, রাজশাহী, নওগাঁ, চাপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর)-সহ সকল জেলার জেলা প্রশাসকগণকে সরবরাহের ক্ষেত্রে যাতে কোনো ধরনের সমস্যা না থাকে সে বিষয়ে মনিটরিং জোরদার করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, পরিস্থিতি পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ৩ জন যুগ্ম সচিবকে উল্লিখিত জেলায় প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি বন্দরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকগণের নিকট বাজার মনিটরিং জোরদার করতে পত্র প্রেরণ করেছেন।
পেঁয়াজ আমদানিকারকদের এলসি খোলা-সহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
দেশে পেঁয়াজের মূল্য ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অভ বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর মাধ্যমে ট্রাক সেলে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান-সহ দেশব্যাপী ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতি কেজি ৩০ টাকা মূল্যে খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রয় শুরু করে। এর ফলে বাজারে পেঁয়াজের মূল্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। পেঁয়াজ বিক্রয়ের এ কার্যক্রম আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় টিসিবি’র মাধ্যমে এবারে ব্যাপকভাবে পেঁয়াজ আমদানি ও বিক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে টিসিবি এবার ই-কমার্সের মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রয় করবে। পেঁয়াজের অবৈধ মজুত বা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মূল্য বৃদ্ধির চেষ্টা করা হলে সরকার প্রচলিত আইনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। গতকাল দেশব্যাপী ৫৩টি বাজার মনিটরিং টিম ১০৭টি অভিযান পরিচালনা করে এবং বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ৯ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করে।