অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের মুহুর্মুহু হামলায় হাজারো নিরীহ ফিলিস্তিনির প্রাণ গেলেও, বিশ্বে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম মূল প্রতিষ্ঠান মেটা তাদের প্লাটফর্মে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে স্বাধীন ভাবে কথা বলতে দিচ্ছে না। ফিলিস্তিন ইস্যুতে কথা বললেই ঘটছে আইডি ডিলেট করে দেয়ার মত ঘটনা। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বা এইচআরডব্লিউ এক বিশেষ প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বলা হয় মেটা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিশ্বের কণ্ঠরোধ করছে।
‘মেটাস ব্রোকেন প্রমিজেস: সিস্টেমেটিক সেন্সরশিপ অব প্যালেস্টাইন কনটেন্ট অন ইনস্টাগ্রাম অ্যান্ড ফেসবুক’—শীর্ষক শিরোনামে মানবাধিকার গোষ্ঠীটি প্যালেস্টাইনের সমর্থনে শান্তিপূর্ণ মতামত ও বক্তব্য তাদের প্লাটফর্ম থেকে কীভাবে সরিয়ে দিচ্ছেন তা তুলে ধরেন।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, বিনা নোটিশে পোস্টগুলো সরিয়ে ফেললেও এ ব্যাপারে কোন আপিল করারও সুযোগ দিচ্ছে না ব্যবহারকারীদের। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ৬০ টিরও বেশি দেশ থেকে অনলাইন সেন্সরশিপের ১০৫০টি ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখেছে ফিলিস্তিন ইস্যুতে মেটা বরাবরই একচোখা নীতি প্রয়োগ করে।
এইচআরডব্লিউ আরও উল্লেখ করেন, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বললে ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম সেই পোস্ট ডিলিট, রিচ কমিয়ে দেয়া হয়। যাতে অন্যরা পোস্ট দেখতে না পায়, ট্যাগ ও লাইভ করতে না দেয়া, এমনকি আইডি মুছে দেয়া বা ডিলিটের ঘটনাও ঘটেছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রযুক্তি ও মানবাধিকার বিষয়ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সহযোগী পরিচালক ডেবোরা ব্রাউন বলেছেন, একেতো ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলিরা অমানবিক নির্যাতন করছে। এর মধ্যে আবার তাদের পক্ষে বিশ্বকে কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়ে মানবাধিকার পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করছে। তাছাড়া নৃশংসতা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে মানুষের কথা বলা ও সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজিরের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একটি অপরিহার্য প্ল্যাটফর্ম কিন্তু মেটার সেন্সরশিপ বরং ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগকেই আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
পোস্ট সরিয়ে ফেলা ছাড়াও সহিংসতা ও উসকানি, ঘৃণামূলক বক্তব্য, নগ্নতা ও যৌন ক্রিয়াকলাপ বিষয় নীতিগুলোও ‘ভুলভাবে প্রয়োগ’ করার অভিযোগ করা হয় এইচআরডব্লিউ এর প্রতিবেদনে।