বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ বেদী (শহীদ মিনার) শ্রদ্ধাহীন ভাবে পরে থাকে বছরের ৩৬৩ দিন।
পৌর শহরের প্রাণ কেন্দ্র শেখ মুজিব সড়কের ঐতিহাসিক বেলতলায় প্রতিষ্ঠিত কেন্দ্রীয় শহীদ ব্যাধিটি বর্তমানে অযন্ত আর অবহেলায় পরে আছে।
সরেজমিনে দেখাগেছ, শহীদ ব্যাধির চারপাশকে বনজঙ্গলে ঘিরে রেখেছে। রাষ্ট্র ভাষা বাংলার জন্য দেশের যে বীর সন্তানরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে আমাদের মায়ের ভাষা উপহার দিয়েছন।
আজ তাদেরকে বছরে মাত্র একটি দিন শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরাদের দায় সেরে নিচ্ছি। মনুষত্ব, মূল্যবোধ, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা যাই বলা হউক না কেন তা কেবল একদিন।
মাঝখানে ২১ ফ্রেব্রুয়ারির আগের রাতে শহীদ ব্যাধিটি ধুয়ে মুছে পরিস্কার করা হয়। এই দুটি দিন বাদে আর খোঁজ নেয়া হয়না মায়ের ভাষার জন্য প্রাণ বিসর্জন দেয়া বীর সন্তানদের স্মৃতি স্তম্ভের দিকে আর নজর পরেনা কারোরই।
সুধি সমাজ বা সচেতন মহল যেটাই বলিনা কেন শহীদ ব্যাধি নিয়ে তাদেরও কোন মাথা ব্যথা নেই।
সময় আর অসময় নেই আমরি বাংলা ভাষার জন্য যারা জীবনের মায়া ত্যাগ করলেন তদেরকে নিয়ে সব সময়ই লেখা যায়।
এই লেখাটা এ জন্য যে আজ আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ শ্রদ্ধা আর মানবিকতা অনেকাংশই গ্রাস করে ফেলেছে নীতিহীন সব দিকগুলি।
কেন্দ্রীয় শহীদ ব্যাধির কথা বাদ দিলাম যেকোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহীদ ব্যাধির দিকে লক্ষ করবেন,সেখানে প্রাথমিকের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা নির্বিচারে জুতাপায়ে শহীদ ব্যাধি পদলিত করে।
এখানে কোমলমতি শিশুদের কোন দোষ নেই। কারণ তারা দেখে আসছে প্রতি বছরের মাত্র একদিনই (২১ ফেব্রুয়ারি) শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো হয়। আর সেই দিনটিতে স্যারেরা জুতা পায়ে শহীদ ব্যাধিতে আসতে বারণ করেণ। বাকি দিন গুলোতে আর বারণ করা হয়না।
এখান থেকেও শ্রদ্ধা ও মূল্যবোধ ছোট বেলাই হারিয়ে ফেলছে আমাদের কোমলমতি সন্তানরা। আর তারপরে সমাজ তথা রাষ্ট্র গঠনের মূল স্তম্ভ রাজনীতি নীতি হারিয়ে অর্থের বেড়াজালে আটকে পরায় এবং দু”একজন বাদে নীতিহীন নেতৃত্বের কাছে রাজনীতির চাবিকাঠি থাকায় অনেকাংশেই আদর্শগত দিকগুলি রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হওয়ার ফলেও কিশোর,
যুবক ও ছাত্র সমাজ আজ পদে পদে দিক হারিয়ে ফেলছে। কেননা বর্তমানে একই দলের রাজনীতি বহু ভাগে (নেতার নেতৃত্বে) বিভক্ত হওয়ায় আলাদা আলাদা গ্রুপ সৃষ্টি হচ্ছে। আর ওই গ্রুপ গুলোতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সমস্যায় পরছে সরকারি দল।
কেননা বহু ভাগে বিভক্ত হওয়ারা তাদের দল ভারি করতে অন্যদল মনা বা পরিবারের সন্তানদের তাদের কাছে টেনে নেয়ায়,
মূলত নতুনরাই সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। যার দায়ভার বার বার স্বাধীনতার স্ব-পক্ষের ওপরে চাপিয়ে দিতে মাথাচারা দিয়ে উঠতে চায় স্বাধীনতা বিরোধী চক্ররা।
এছাড়াও আমাদের দেশে বিনদেশি আকাশ সংস্কৃৃতি আর মুঠোফোনের ভয়ঙ্কর সব খারাপ দিকগুলির ফলেও সৃস্টি হচ্ছে কিশোর গাং এবং সামাজিক অবক্ষয় ঘটানোর মতো বিপদ জনক নেতৃত্ব।
শহীদ ব্যাধি আর রাজনীতির উদাহরণ এ জন্য যারা প্রাণ ও রক্ত দিয়ে রাষ্ট্র ভাষা এনে দিলো তাদেরকে শ্রদ্ধা না করে বেশির ভাগ সময়ই করছি অবহেলা আর অযন্ত। অন্যদিকে রাজনীতির আদর্শগত দিক অনেক ক্ষেত্রে শীথিল হওয়ায় সামাজিক শ্রদ্ধা ও মূল্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে।
সর্বপরি উপজেলার সকল শহীদ ব্যাধি বেস্টনির আওতায় এনে রক্ষণা বেক্ষেণ করার দাবী উঠেছে সকল পর্য়ায় থেকে।