বাবরি মসজিদের রায় নিয়ে কি হতে পারে তা আগেই অনেকটা অনুমান করেছিলেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। বিশ্লেষকদের অনুমান প্রায় পুরোটাই সত্য করে আদালত তাঁর রায় প্রদান করলেন দীর্ঘ ২৮ বছর পর।
২৮ বছর আগে ১৯৯২ সালে ভারতের উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় অবস্থিত বাবরি মসজিদে হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত আসামিদের সবাইকে খালাস দিয়েছেন দেশটির আদালত। বুধবার এই ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন পর রায় ঘোষণা করছে উত্তরপ্রদেশের লখনৌউয়ের বিশেষ আদালত।
এ ঐতিহাসিক রায়ে আদালত আরও বলেন, “বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত ছিলো না”।
ভারতের প্রধান রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) তৎকালীন নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানীর নেতৃত্বে ১৯৯২ সালে দফায় দফায় রথযাত্রা হয়। এই রথযাত্রা থেকে ষোড়শ শতাব্দীর অন্যতম এই মুসলিম স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। কট্টরপন্থী করসেবকরা মসজিড় গুঁড়িয়ে দেয়। এ ঘটনার পরপর দেশটিতে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। এতে প্রাণ যায় প্রায় ৩ হাজার মানুষের।
উত্তরপ্রদেশের এই মসজিদ ধ্বংস বদলে দেয় ভারতের রাজনীতি। মসজিদ ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও শীর্ষ নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানী, মুরালি মনোহর যোশী, সাবেক মন্ত্রী উমা ভারতী ও কল্যাণ সিংয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।
প্রায় আড়াই যুগ পর বুধবার এই মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। কিন্তু আদালতে উপস্থিত ছিলেন না বিজেপির অভিযুক্ত শীর্ষ এই নেতারা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভারতের বর্তমান কট্টর হিন্দুবাদী সরকারের আমলে এ রায় আসামীদের বিপক্ষে গেলে অদীতের মতো দাঙ্গা ইতিহাসের সম্ভব্যতা দেখা দিতো। তারা আরও বলেন, অতীতে আদালতের প্রতিটি সিদ্ধান্তই হিন্দুদের পক্ষে গিয়েছে। এ রায়কে হিন্দুদের পক্ষে আনতে বাবরী মসজিদের অতীত ইতিহাসকেও বদলে ফেলা হয়েছিলো।