কিশোর অপরাধের দৌড়াত্ম দিন দিন বেড়েই চলছে। এসব অপরাধের সাথে কিশোরদের সংশ্লিষ্ট করছেন তাদের বেশীরভাগই রাজনীতি সংশ্লিষ্ট। দলের মধ্যে বিভিন্ন নেতারা গ্রুপিং সৃষ্টি করে নিজেদের শো ডাউন করতে এসব কিশোরদের ব্যবহার করছে। এভাবেই গড়ে উঠছে কিশোর গ্যাং। তুলে দেয় হচ্ছে তাদের হাতে মরনঘাতী ড্রাগস আর অস্ত্র।
ক্রমেই ভয়ংকর হয়ে উঠছে সমাজের কিশোর শ্রেণী। এদের একের পর এক সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সমাজের সাধারণ জনগন ভীত সন্ত্রস্ত। ২৭ আগস্ট, বৃহস্পতিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ নাঈম আলী (১৯) নামের এক কিশোরকে আটক করেছে র্যাব।
আটককৃত নাঈম শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের গুপ্তমানিক গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ২৬ আগস্ট, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে র্যাব মাদক উদ্ধারে যায়। সেখানে উপজেলার জামতলা ব্রিজ মোড় এলাকা থেকে কিশোর নাঈম আলীকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় শিবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
র্যাব-৫ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্প কমান্ডার এএসপি আজমল হোসেন জানান, র্যাবের একটি দল শিবগঞ্জ সীমান্ত এলাকায় মাদক উদ্ধারে অভিযানে যায়। এ সময় জামতলা ব্রিজ মোড় এলাকায় নাঈমের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে তাকে আটক করা হয়। পরে তার দেহ তল্লাশি করে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান স্যুটারগান, ২টি ম্যাগাজিন ও ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জজ কোর্টের আইনজীবি এ্যাডঃ মতিয়ার শামসুন নাহার কিশোর অপরাধ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, “দেশের বর্তমান প্রচলিত আইনের কারনে কিশোর অপরাধকে আটকানো যাচ্ছে না। তারা হত্যা, যখম, ধর্ষনের মতো ভয়ংকর অপরাধ করেও শুধুমাত্র বয়সের তারতম্যের কারনে আইন তাদের বড় বড় অপরাধধের জন্য সমুচিত শাস্তি পাচ্ছে না। মোট কথা অপরাধ অপরাধই, তার জন্য কঠোর শাস্তির বিধান আইনে রাখতে হবে যেনো যে শাস্তির ব্যাপকতায় কিশোরদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়”।
এ বিষয়ে মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক শাহিদুল কারিম বলেন, “কোন কিশোর অপরাধ করলে তাদের আদালত থেকে কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের দেশের সরকারী সংশোধন কেন্দ্র গুলোতে কিশোরদের কোন গঠনমূলক কর্মকান্ড নেই। বরং সেখানে অন্য অনেক অপরাধী কিশোরদের সংস্পর্শে কিশোররা বের হয়ে এসে নতুন মাত্রায় অপরাধে লিপ্ত হয়।” এ প্রসঙ্গে তিনি কিশোর অপরাধের শাস্তির বিধান পরিবর্তন করার পক্ষে মতামত দেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় একজন রাজনৈতীক কর্মী বলেন, “এ সব কিশোরদের অপরাধে আনছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। কারন এদের প্রলুদ্ধ করা অনেক সহজ।” কিশোর অপরাধের সাথে যারা সংশ্লিষ্ট সে শেকড়দের আগে শাস্তির আওতায় আনতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।