ভারতের পার্লামেন্টে শীতকালীন অধিবেশন চলাকালে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) লোকসভা ও রাজ্যসভা থেকে বিরোধী দলের অন্তত ৭৮ এমপিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সংসদের ভেতর নিরাপত্তা ইস্যুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতি চেয়ে বিক্ষোভের জেরে তারা বরখাস্ত হন।
এর আগে, গত সপ্তাহে ১৪ এমপিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। এর ফলে বরখাস্ত হওয়া এমপির সংখ্যা এখন ৯২।
ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, লোকসভার ৩৩ জন এমপিকে বাকি সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশেষ কমিটি আচরণের বিষয়ে প্রতিবেদন জমা না দেয়া পর্যন্ত তিনজন বরখাস্ত থাকবেন। এ ছাড়া রাজ্যসভার ৪৬ জনকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৫ জন অধিবেশনের বাকি সময়ে অংশ নিতে পারবেন না এবং ১১ জনের বিষয়ে প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত বরখাস্ত থাকবেন।
এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তৃতার মাঝেই নতুন পার্লামেন্ট ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সরব হন বিরোধী দলের এমপিরা। তুমুল চিৎকার শুরু হয় পার্লামেন্টে। প্রথমে স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে ও পরে ৩টা পর্যন্ত সভার কাজ মুলতবি করে দেন স্পিকার। তারপরও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় ৩০ জনের বেশি এমপিকে সাময়িক বরখাস্ত করেন স্পিকার।
বরখাস্ত হওয়া লোকসভা এমপিদের মধ্যে রয়েছেন, কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী, হাউজে দলের উপনেতা গৌরব গগৈ। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, স্বাগত রায়, শতাব্দী রায় ও ডিএমকে সদস্য এ রাজা ও দয়ানিধি মারানের নামও তালিকায় রয়েছে। রাজ্যসভায় কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ ও রণদ্বীপ সিং, ডিএমকের কানিমোঝি ও আরজেডির মনোজ কুমার ঝা-ও এ তালিকায় রয়েছেন।
গগৈ বলেন, বিজেপি সরকার বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে এবং তিনি দাবি করেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যাপক নিরাপত্তা লঙ্ঘনের দায় নিতে ভয় পাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, তারা লোকসভার বাইরে তাদের বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন।
হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, গত ১৩ ডিসেম্বর ২২ বছর আগের সংসদ হামলার স্মৃতি উসকে দিয়ে বর্তমান সংসদের কক্ষে সভা চলাকালীন হামলা চালায় দুই যুবক। বাইরে তাদের সমর্থনে তখন স্লোগান দিচ্ছিলেন কয়েকজন। এই ভয়াবহ ঘটনা আবারও একবার প্রশ্ন তৈরি করে দেশের সংদের নিরাপত্তা নিয়ে। বৃহস্পতিবার সংসদে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। তারা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতি দাবি করেন।