গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কারাগার থেকে বের হন মামুনুল।
মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৩৭টি মামলা রয়েছে।
২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের মাদরাসা থেকে মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপরেই প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে মামুনুল হকের যৌন কেলেঙ্কারির সমস্ত খবর।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও খেলাফত মজলিশের সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হকের স্ত্রী ও উপপত্নীর সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে। বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ ও ফাঁস হওয়া ফোনালাপ থেকে বোঝা যায়, অনেক নারীর সাথে সম্পর্ক ছিল তার। এদের কাউকে কাউকে তিনি বিয়েও করেছিলেন। অনেককে বিয়ে না করেই সম্পর্কিত ছিলেন এবং আছেন।
২০২১ সালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত রয়েল রিসোর্টের ৫০১ নং কক্ষে জান্নাত আরা নামে এক নারীকে নিয়ে যান তিনি। সেই সময় মামুনুল জানান, সাথের নারীটি তার স্ত্রী, নাম আমেনা তৈয়েবা। বাড়ি খুলনায়, শ্বশুরের নাম জাহিদুল ইসলাম। অন্যদিকে, সেই নারী জানান, তার নাম জান্নাত আরা, বাবার নাম অলিয়র, গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায়।
পরে অন্য স্ত্রী আমেনা তৈয়েবার সাথে মোবাইল কথোপকথনে মামুনুল বলেন, সেই নারী তার পরিচিত শহীদুল ইসলামের স্ত্রী। ঘটনার কারণে চাপে পড়ে স্ত্রী বলতে বাধ্য হয়েছেন।
জান্নাত আরা ও আমেনা তৈয়েবা ছাড়াও আরো নারীদের সাথে মামুনুলের সম্পর্ক ছিলো। কাপাসিয়ার জনৈক মাদ্রাসা শিক্ষিকার সাথে মামুনুলের ফোনালাপ অনলাইনে পাওয়া যায়।
শুধু নারী নয়, পুরুষের সাথেও মামুনুলের যৌন সম্পর্ক ছিল। ২০২০ সালে ঢাকার জামেয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসার শায়খুল হাদিস মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে ধরে ১১ বছর বয়সের এক মাদ্রাসা ছাত্র আদালতে জবানবন্দি দেয়।
এর আগে ২০০৩ সালে ধর্ষণের অভিযোগে মামুনুল হক ১৫ দিন কারাগারে ছিলেন। শুধু তাই নয়, ১৯৯২ সালে বিএনপি সরকারের সময়ে মামুনুলের পিতা মাওলানা আজিজুল হকও ধর্ষণের দায়ে ৩ মাস জেল খাটেন।
তবে এসব স্ত্রী, উপপত্নী, অনৈতিক যৌন সম্পর্ক ও ছাত্র ধর্ষণ ছাপিয়ে আলোচনার তুঙ্গে মামুনুল হকের প্রথম স্ত্রী ফারহানা। মামুনুল হক গ্রেপ্তার হওয়ার পরে আমেরিকা থেকে ফেসবুক লাইভে আসেন তিনি। নিজেকে মামুনুলের সাবেক স্ত্রী দাবি করা এই নারী মামুনুলের পিতা খেলাফত নেতা আজিজুল হকেরও স্ত্রী ছিলেন। তবে আজিজুল পরে তাকে তালাক দেন। এরপর মামুনুল তাকে বিয়ে করেন। পিতার মতো মামুনুলও তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করেননি, আনুষ্ঠানিকভাবে তালাকও দেননি।