ঢাকামঙ্গলবার , ১ ডিসেম্বর ২০২০
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রক্তস্নাত বিজয়ের ৪৯তম বার্ষিকী, ৫০তম বিজয় দিবসের মাস।

অপরা‌জিত বাংলা প্র‌তি‌বেদন।
ডিসেম্বর ১, ২০২০ ৬:২৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের মুক্তিকামী মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের পর এমা‌সের ১৬ ডি‌সেম্বর আত্মসমর্পণ করে মুক্তিকামী মানুষের কাছে। আর পাকিস্তানি বাহিনীর এই আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে দীর্ঘ দুই যুগের পাকিস্তানি শোষণ আর বঞ্চনার। নির্যাতন, নিষ্পেষণের কবল থেকে মুক্ত হয় বাঙালি জাতি।

নানা ত্যাগ আর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় মহান স্বাধিনতা। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরেই সূচনা হয় বাঙালির নবজীবনের।
৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পরাভূত হয় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী। বিশ্বের বুকে আবির্ভূত হয় একটি জাতি-রাষ্ট্র বাংলাদেশ। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে এই বাংলাদেশের আছে নানা অর্জন, আছে নানা চ্যালেঞ্জ।

শুরুর দিনে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনি ও ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা কর্মীরা। শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মোমবাত্বি প্রজ্জলন করে তারা। এসময় যে কোন মূল্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষদাঁত ভেঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের প্রত্যয় জানান স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতারা। নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করার কথাও বলেন তারা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে জনযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এ দেশের মানুষ।

৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রাম আর ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে আসে জাতীয় মুক্তি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল ১৬ ডিসেম্বর। তবে এই ডিসেম্বর মাসেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর-আল-শামস বাহিনীর সহযোগিতায় জাতির মেধা, শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবী হত্যার নৃশংস যজ্ঞে মেতে উঠেছিল।

একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নামক যে রাষ্ট্রের যাত্রা শুরু করেছিল, আজ তা বিশ্বের কাছে এক অপার বিস্ময়, উন্নয়নের রোল মডেল। প্রতিবছর বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও নানা অনুষ্ঠানে মাসজুড়ে বিজয়ের আনন্দ উদযাপন করে বাংলাদেশ। লাল-সবুজের পতাকা ওড়ে দেশের আনাচকানাচে।

তবে এবার বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে আনুষ্ঠানিক উৎসব আয়োজনে ছেদ পড়েছে। ১৬ই ডিসেম্বর সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বিনম্র শ্রদ্ধা জানানোর আয়োজনটি এবার বাতিল করা হয়েছে।

এবার বিজয় দিবস এসেছে এমন এক সময়ে, যখন দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র। অন্ধকারের শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। অপশক্তিকে মোকাবেলার ডাকও এসেছে।

সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিহত করার আহ্বানে আজ পয়লা ডিসেম্বর শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবন পর্যন্ত মানববন্ধন ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লালিত সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো।

প্রতিবছরের মতো এবারও পদক্ষেপ বাংলাদেশ উদযাপন করবে ‘বিজয় মাসের প্রথম প্রহর’ ও ‘বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত’। এবার অনুষ্ঠান হবে অনলাইনে।

এ মাসেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি পাক হানাদার বাহিনীর এদেশীয় দোসর-রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। একটি জাতিকে মেধাহীন করে দেয়ার এ ধরনের ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের কোন নজির বিশ্বে নেই।

একাত্তরে এ মাসের প্রথম দিন থেকে মুক্তিযোদ্ধারা একের পর এক বিভিন্ন জেলায় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে পরাজিত করে অপ্রতিহত গতিতে এগিয়ে আসতে থাকেন রাজধানীর দিকে। এর পর ১৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাক হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।

এবার ভিন্ন প্রেক্ষাপটে এসেছে বিজয়ের মাস। ইতোমধ্যে একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বেশিরভাগের বিচার কাজ শেষ হয়েছে, অনেকেরই ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে। অনেকের মৃত্যুদন্ড ও আমৃত্যুর রায় নিয়ে কারাগারে আছে।

৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ঐতিহাসিক ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯’র গণ অভ্যুত্থান এ সবই ইতিহাসের বাঁক ঘুরিয়ে দেয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচন সব পরিণতিকে দিয়ে দেয় চূড়ান্ত রূপ। শুরু হয় নতুন অধ্যায়। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে আসে বঙ্গবন্ধুর বজ নিনাদ ঘোষণা ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এই ঘোষণা জাতির মনে বয়ে আনে অন্য এক প্রেরণা, জাগিয়ে তোলে মুক্তির উন্মাদনা। প্রায় ৯০ হাজার পাকিস্তানী বাহিনী আজকের এই দিনে রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণের মধ্যদিয়ে পরাজয় বরণ করে।
মহান বিজয় দিবস পালনে যেন নতুন সাজে সেজেছে বাংলাদেশ। সারা দেশ ছেয়ে গেছে লাল-সবুজ পতাকায়।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।