করোনা মহামারিতে অর্থনীতি যখন বিপর্যস্থ ঠিক তখনই ভালো সংবাদ শোনালো পাট খাত। ২০২০-২০২১ নতুন অর্থবছরের প্রথম মাসেই (জুলাই) পাট ও পাটজাত দ্রব্য রপ্তানি করে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫.৪৪ শতাংশ বেশি আয় করেছে বাংলাদেশ। এক মাসে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ডলার আয় হয়েছে, যা গত অর্থবছরের জুলাই মাসের চেয়ে ৩৮.২৩ শতাংশ বেশি।
গত মাসে পাট সুতা (জুট ইয়ার্ন) রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের; প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৬ শতাংশ। কাঁচাপাট রপ্তানি হয়েছে ১ কোটি ৩ লাখ ৭০ হাজার ডলার; আয় বেড়েছে ৫৮.৫৬ শতাংশ। পাটের তৈরি বস্তা, চট ও থলে রপ্তানি হয়েছে ১ কোটি ২২ লাখ ডলারের। আয় বেড়েছে ৪৬.১৬ শতাংশ। এ ছাড়া পাটের তৈরি অন্যান্য পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৮০ লাখ ডলারের।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৩৯১ কোটি (৩.৯১ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে দেশ।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, এই খাত থেকে মহামারির পর থেকে পাটপণ্য রপ্তানি বেড়ে যাওয়ার মধ্যে গত জুলাই মাসে সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬টি পাটকলে উৎপাদন বন্ধ করে ২৪ হাজার ৮৮৬ জন স্থায়ী শ্রমিককে অবসরে পাঠায়। বিজেএমসি’র আওতাধীন এই রপ্তানি বাড়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর অভাব অনুভব করছেন এই খাত সংশ্লিষ্টরা। পাটকলগুলোতে উৎপাদিত চট, বস্তা, থলে বিদেশে রপ্তানি হতো।
গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ মোট ৮৮ কোটি ২৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার আয় করেছে। ওই অঙ্ক ছিল আগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে ৮.১০ শতাংশ বেশি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেশি এসেছিল ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরে পাট সুতা রপ্তানি থেকে ৫৬ কোটি ৪৬ লাখ ডলার আয় হয়েছিল। অর্থাৎ মোট রপ্তানি ৬৪ শতাংশই এসেছিল পাট সুতা রপ্তানি থেকে। কাঁচাপাট রপ্তানি থেকে আয় হয়েছিল ১৩ কোটি ডলার। পাটের তৈরি বস্তা, চট ও থলে রপ্তানি হয়েছিল ১০ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের। এ ছাড়া পাটের তৈরি বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ১৯ কোটি ডলারের।
সার্বিক হিসেবে পাট রপ্তানি থেকে আয় ৩ শতাংশের নিচে হলেও আগের বছরগুলোর তুলনায় এই অঙ্কে আশা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর মধ্য দিয়ে সাম্প্রতিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে চামড়াকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে পাট খাত।
শুধু বস্তা, চট ও থলে নয়, পাট সুতাসহ পাটের তৈরি নানা ধরনের পণ্য বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হচ্ছে। সুষ্ঠু তদারকির মাধ্যমে পাট খাতে আবারো সুদিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে এ খাতের বিশ্লেষকরা মনে করেন।