আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম এ এ খান বলেছেন,
রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও নিপীড়নের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে আইসিসি।
রোহিঙ্গাদের ওপর যে নিপীড়ন-নির্যাতন হয়েছে আমরা তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইসিসির প্রসিকিউটর এসা ফাল ও আইসিসির প্রধান কৌঁসুলির আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা সান্তাল ডেনিয়েলস।
চার দিন বাংলাদেশ সফর শেষে সংবাদ সম্মেলনে আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি বলেন, আমরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে দেখেছি।
সেখানে রোহিঙ্গারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
গত মার্চ মাস থেকে আন্তর্জাতিক সহায়তা কমেছে রোহিঙ্গাদের। জনপ্রতি একজন রোহিঙ্গা দিনে ৯ টাকা করে সহায়তা পাচ্ছেন।
এখন একটি ডিমের দাম ১২ টাকা।
তাহলে এ অর্থ দিয়ে তারা কীভাবে খাদ্য সহায়তা মেটাবে?
এটা একটি মানবিক সমস্যা। এখানে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের নজর দেয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছি।
১৯৭১ সালে ভারতে বাংলাদেশের মানুষও আশ্রয় নিয়েছিলেন।
সে কারণে মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের এখানে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।
আমি মনে করি, এ ভূমিকার জন্য বাংলাদেশের অবশ্যই প্রশংসা পাওয়া উচিত।
রোহিঙ্গা শিশুদের রাখাইন ভাষায় শিক্ষাদান করা হচ্ছে। তবে তারা কবে নাগাদ দেশে ফিরতে পারবে, সেটা অনিশ্চিত।
তাই এসব শিশুর ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত।
বাংলাদেশের পাঠ্যক্রম অনুযায়ী শিক্ষা নিশ্চিত করা উচিত কিনা? জানতে চাইলে আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি বলেন, আমি কোনো ডোনার এজেন্সি নই।
তাদের শিক্ষাদানের পদ্ধতি নিয়ে আমি কথা বলতে পারি না।
আমি এখানে এসেছি তাদের ওপর নির্যাতনের তথ্য সংগ্রহ করতে।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে পাইলট প্রকল্প নেয়া হয়েছে।
তাদের সেখানে প্রত্যাবাসন উদ্যোগকে কীভাবে দেখেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এখানে ইউএনএইচসিআরর প্রতিনিধি নই।
তাই এ বিষয়ে আমার মন্তব্য করা সমীচীন হবে না।
রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচারের সমাপ্তি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিচার নিয়ে চূড়ান্ত তারিখ বলা সম্ভব নয়।
আমরা রোহিঙ্গা নির্যাতনের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছি।
এ বিচারে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
তিনি বলেন, আমি এবার দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ সফর করলাম।
এ দেশের আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ।
আশা করি, আগামী বছর আবার আসব।
উল্লেখ্য, গত ৪ জুলাই থেকে আইসিসির প্রধান কৌঁসুলির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করছে।
প্রতিনিধিদলটি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পও সফর করে। সফরের শেষ দিন গতকাল শুক্রবার এ নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
