সরকারী ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা খরচ করে এবার ৩০ কর্মকর্তা যাচ্ছেন বিদেশে শুটকি মাছ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরন প্রশিক্ষন নিতে। আর এ বিশাল যঞ্জে অংশগ্রহন করবেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারাই।
জানা গেছে “কক্সবাজার জেলায় শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন” প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
ইতিমধ্যে এ প্রকল্পের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে বিএফডিসি। কিছুদিনের মধ্যে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হবে। উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) বিদেশে ৩০ জন কর্মকর্তার প্রশিক্ষণের জন্য এক কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্প কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে,
~একটি জিপ,
~একটি ডাবল কেবিন পিকআপ,
~একটি মাইক্রোবাস ও
~চারটি মোটরসাইকেল।
ডিপিপিতে এসব বিষয় সংশোধন করতে বলেছে পরিকল্পনা কমিশন।
প্রশিক্ষন নেয়ার জন্য যেসব যেসব দেশ এগিয়ে আছে সে দেশগুলো হচ্ছে,
~জাপান,
~আইসল্যান্ড,
~জার্মানি ও
~ফ্রান্স।
বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে এসব দেশ বেছে নেবে বিএফডিসি।
প্রকল্পের আওতায় ৩৫০টি গ্রিন হাউজ মেকানিক্যাল ড্রায়ার এবং ৩০টি মেকানিক্যাল ড্রায়ার নির্মাণ করা হবে। এসব যন্ত্র পরিচালনার জন্য বিদেশে প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছে বিএফডিসি।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা) মো. শামসুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “শুঁটকি উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ শিখতে ৩০ জন কর্মকর্তা এক প্রকল্পের আওতায় বিদেশে যাবেন। বিদেশ থেকে মেশিন কেনা হবে। এসব মেশিন পরিচালনা শেখা প্রয়োজন।”
জানা গেছে, মাছ আহরণোত্তর অপচয় হ্রাস করে শুঁটকি উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে শুঁটকি উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, প্যাকেজিং ও বিপণনের কাজে জড়িতদের জন্য নিরাপদ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন অন্য কথা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন জীববিজ্ঞান প্রভাষক ডঃ তারিকুল হোসেন বলেন, “এসব প্রক্রিয়া কোন কাজের নয়। বরং আর্থিক ক্ষতি। কেন এধরনের কার্যক্রম সরকার নিচ্ছেন তা বোধগম্য নয়। বাংলাদেশে অনেক ভালোমানের দক্ষ ও মেধাবী মৎস্য বিশেষজ্ঞরা আছেন। প্রতি বছর দেশের নামীদামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মেধাবী প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা বের হচ্ছে। তারো কি কোন অকাজের? দেশের মেধাকে দেশের উন্নয়নের জন্য সরকার কেন কাজে লাগাচ্ছেন না? বিষয়টা বিরক্তিকর।”
বুয়েটের ম্যাকানিক্যাল শেষ বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী মোঃ ইরফান বিন অাজমাইন বলেন, “যে পরিমান টাকা এ প্রকল্পের পিছনে সরকার খরচ করছেন তার চার ভাগের এক ভাগ অর্থও যদি এ দেশের মেধাবি প্রোকৌশলীদের পিছনে খরচ করে তাহলে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরনের জন্য বিদেশ থেকে মেশিন আনার প্রয়োজন হয় না। দেশেই অনেক মেধাবীরা আছেন যারা এধরনের মেশিন তৈরীর যোগ্যতা রাখেন।”