ফেনীতে জুমার নামাজ শেষে সদ্য প্রয়াত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য দোয়া চাওয়ায়
ছাত্রলীগ নেতার হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন মসজিদের খতিব ও ইমাম মাওলানা মো. সলিমুল্লাহ।
শুক্রবার দুপুরে ফেনী সদর উপজেলার ফকিরহাট বাজার মাদরাসা জামে মসজিদে জুমার নামাজের পর শত শত
মুসল্লির সামনে এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে।
পরে মসজিদের খতিব পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে জানান নির্যাতিত মাওলানা মো. সলিমুল্লাহ।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম তাদের নেতা সাঈদীর মৃত্যুতে দুদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করছিলো।
তার মধ্যে শুক্রবার বাদ জুমা মসজিদে মসজিদে সাঈদীর জন্য দোয়ার কর্মসূচি ছিল।
ফকিরহাট বাজার মাদরাসা জামে মসজিদের মুসল্লি আবদুল ওহাব জানান, জুমার নামাজ শেষে খতিব
মাওলানা মো. সলিমুল্লাহ মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে ইসলামে বিশেষ অবদানের কারণে সাঈদীসহ অন্যান্য
আলেম-ওলামার জন্য দোয়া করতে বলেন।
এ সময় মসজিদে উপস্থিত উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর শুক্কুর মানিকের নেতৃত্বে
কয়েকজন যুবক ইমামকে থামিয়ে মেহরাব থেকে ঘাড় ধরে টেনে মসজিদের বাইরে নিয়ে যায়।
একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করা হয়। ঘটনার পর এ নিয়ে এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান
সোহাগ বলেন, ইমাম সাহেব একজন দেশদ্রোহীর জন্য
দোয়া করায় উপস্থিত মুসল্লিরা উত্তেজিত হয়ে যায়।
পরবর্তীতে উদ্ভূত ঘটনার জন্য তিনি সকলের কাছে মাফ চাইলে তাঁকে রেহাই দেওয়া হয়।
এসময় তাঁকে মসজিদের খতিব পদ থেকে সম্মানের সঙ্গে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে খতিবকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে সদর
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর
শুক্কুর মানিক বলেন, ‘জুমার নামাজ শেষে বিতর্কিত একজন ব্যক্তির জন্য দোয়া চাইলে মুসল্লিরা ক্ষেপে যান।
তখন আমি তাঁকে মসজিদ থেকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করেছি।
সেসময় মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি।’
সাঈদীসহ অন্যান্য আলেমদের জন্য দোয়া চাওয়ার
বিষয়টি স্বীকার করে মাওলানা মো. সলিমুল্লাহ বলেন, ‘আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে আমি আল্লাহর
কাছে বিচার দিয়েছি, তিনিই ন্যায় বিচার করবেন।
আমার আর কিছু বলার নেই।’
ছাত্রলীগ নেতা আব্দুর শুক্কুর মানিক এর বড় ভাই স্থানীয়
ওয়ার্ড মেম্বার ও মসজিদ কমিটির সভাপতি শেখ ফরিদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক
কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।’
ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, এ ব্যাপারে শুক্রবার রাত পর্যন্ত
থানায় কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে।