ঢাকামঙ্গলবার , ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হামলার ভয়ে সারা দেশের সকল কারাগারে ‘রেড অ্যালার্ট’, স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ ১৮ নির্দেশনা জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০ ১:৪০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

দেশের কারাগারগুলোতে দ্রুত নিরাপত্তা বাড়াতে ও সবোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে সংশ্লিষ্ট কারাকর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছেন আইজি প্রিজন্স ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশা। একই সঙ্গে এসব কারাগারে থাকা বন্দি শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি ও বিভিন্ন ভয়ংকর অপরাধীদের ওপর কঠোর নজরদারির নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) দেশের কারাগারগুলোতে এ বিষয়ে একটি চিঠি দেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মোস্তফা কামাল পাশা। ওই চিঠিতে সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে ১৮টি নির্দেশনা দেন তিনি। এছাড়া সদর দপ্তর থেকে ইতিমধ্যে দেশের সব ডিআইজি প্রিজনের সঙ্গে এ ব্যাপারে ফোনে কথা বলা হয়েছে।

চিঠিতে কারা মহাপরিদর্শক উল্লেখ করেন, ‘কিছু দুষ্কৃতিকারী ব্যক্তি কারাগারে বন্দি জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে, টেলিফোনও করেছে। কারাগার একটি স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠান। দুষ্কৃতকারীদের অপতৎপরতা নস্যাৎ করে বন্দির পলায়নসহ যে কোনো দুর্ঘটনায় কঠোর হওয়া কারাগারের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রধানত দায়িত্ব। সম্প্রতি কিছু কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় শৈথিল্যের প্রমাণ পাওয়া গেছে। দেশের সকল কারাগার কর্তৃক যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে পূর্ব থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। এমতাবস্থায় কারাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিম্নোক্ত কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘কারাগারের অস্ত্রাগার থেকে থেকে প্রয়োজনীয় মুহূর্তে যেন দ্রুত অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করা যায় সেজন্য প্রয়োজনীয় মহড়া আয়োজন করতে হবে। কারাগারের চারপাশের সীমানাপ্রাচীর সুরক্ষিত রেখে এবং অ্যালার্ম সিস্টেম পরীক্ষা করে প্রস্তুত করে রাখতে হবে।

সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এ চিঠি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম ,তিনি বলেন সাম্প্রতিক সময়ে টেলিফোনে ও উড়ো চিঠিতে অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা জঙ্গিসহ ভয়ংকর অপরাধীদের ছিনিয়ে নেয়ার বেশ কয়েকটি হুমকি এসেছে। এছাড়া কারাগার থেকে বন্দি পালানোর ঘটনা ঘটেছে। সেজন্যই এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।

সম্প্রতি কিছু কারাগারে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় শৈথিল্যের প্রমাণ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে পত্রে বলা হয়েছে, দেশের সকল কারা কর্তৃপক্ষের যেকোনাে অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরােধে শূন্য থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। এমতাবস্থায় কারাগারে নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করার লক্ষ্যে নিম্নোক্ত কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো-

১. দুষ্কৃতিকারীদের সম্ভাব্য তৎপরতা এবং বন্দি ছিনিয়ে নেয়া বা যেকোনাে ঘটনা রোধে কারাগার নিরাপত্তার জন্য জেলারের নেতৃত্বে ১ জন ডেপুটি জেলার, ১ জন প্রধান কারারক্ষী ও ৫ কারারক্ষীর সমন্বয়ে একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিরোধে বা দাঙ্গা দমনে সদা প্রস্তুত থাকবে। এক্ষেত্রে পূর্বে শাস্তিপ্রাপ্ত হননি এমন সদস্যদের দিয়ে ফোর্স গঠন করতে হবে।

২. সকল কারা কর্মকর্তা/কর্মচারীকে সবার সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

৩. কারাগারের আরপি গেটে আবশ্যিকভাবে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিধান ও হ্যান্ডহেল্ড মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহারসহ যথাযথ তল্লাশী কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

৪. প্রয়োজনীয় সকল ক্ষেত্রে আগতদের পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে।

৫. প্রয়োজনীয় সংখ্যক সশস্ত্র সেন্ট্রি ডিউটির ব্যবস্থা করতে হবে।

৬. অস্ত্র ও অস্ত্রাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

৭. প্রয়ােজনীয় মূহুর্তে অস্ত্রাগার হতে দ্রুত অস্ত্র ও গােলাবারুদ সংগ্রহ নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় মহড়া পরিচালনা করতে হবে।

৮. কারা প্রাঙ্গনে বহিরাগত যানবাহন প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।

৯. কারাগারে নিষিদ্ধ কোন পণ্য প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।

১০. আরপি গেটসহ প্রধান গেটে সিসিটিভি মনিটরিং নিশ্চিত করতে হবে।

১১. কারাগারে পেরিমিটার ওয়াল ও সীমানা প্রাচীর সুরক্ষিত রাখতে হবে।

১২. কারা এলাকায় ও ব্যারাকে সকল কারারক্ষীর উপস্থিতি নিশ্চিন্ত করতে হবে।

১৩. কারাগারে এলার্ম ব্যবস্থা পরীক্ষা করে প্রস্তুত রাখতে হবে।

১৪. কারাগারে কর্মরত পি আই উ সদস্যবৃন্দকে অধিকতর দায়িত্বশীল হতে হবে।

১৫. কারাগারে আটক জঙ্গি, আইএস, শীর্ষ সন্ত্রাসী, বিডিআর ও বিভিন্ন সংবেদনশীল মামলায় আটক বন্দিদের চলাচল ও গতিবিধি কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে।

১৬. যে সকল কারাগারে এ ধরনের জেএমবি/জঙ্গি বন্দি আটক রয়েছে সেসব এলাকায় পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করাসহ তাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে হবে।

১৭. কারাগারে নিরাপত্তা সম্পর্কিত তথ্য সংশ্লিষ্ট নানা কর্তৃপক্ষকে যথাসময়ে অবহিত করতে হবে।

১৮. সর্বোপরি, কারাগারের অভ্যন্তরের ন্যায় বহির্বিভাগেও নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখতে হবে।

উপরােল্লিখিত নির্দেশনার বিষয়ে কোনো কারা কর্মকর্তা/কর্মচারীর দায়িত্ব পালনে ন্যূনতম ব্যাতায় বা শৈথিল্যর প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, চিঠি পেয়ে ইতিমধ্যে আমরা ৮ সদস্যের স্ট্রাইকিং ফোর্স গঠন করেছি। যেখানে একজন ডেপুটি জেলার, একজন প্রধান কারারক্ষী ও পাঁচজন কারারক্ষী রয়েছে।

আইজি প্রিজন্সের দেয়া ১৮ দফা নির্দেশনায় রয়েছে কারাগারের বাইরের গেটে দায়িত্বপালনকারীদের বুলেট প্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট নিশ্চিত করা, আগতদের মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করা, ডিউটিতে সশস্ত্র সেন্ট্রি নিয়োগ দেয়া, অস্ত্র ও অস্ত্রাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পাশাপাশ কারাগারগুলোতে নিয়মিত মহড়া দেয়া, কারাগারের চারপাশের সীমানাপ্রাচীর সুরক্ষিত রাখা এবং অ্যালার্ম সিস্টেম পরীক্ষা করার নিদেশ দেয়া হয়েছে চিঠিতে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।