কারাবন্দি আসামীর চিকিৎসার একটা বিধান আছে, সেটা সাধারন কারাবন্দি হোক আর অসাধারন তিন চার বারের কারাবন্দি হোক কিচ্ছু যায় আসে না। নিয়মের বাহিরে কেউ না। রাষ্ট মান্য করলে, আইন মান্য করলে বিধি বিধান মান্য করতে হবে।
আসেন মুল বিষয়ে, এতিমের টাকা মেরে খাওয়ার মামলায় খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেল খানায় যাওয়ার পর থেকে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে যতোটা না, তার চেয়ে বেশি বিএনপির পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করে কারাবিধি নিয়ম অনুযায়ী সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দির চিকিৎসা সরকারী হাসপাতালে সরকারী ডাক্তার বা সরকার কতৃক নির্ধারিত ডাক্তারী বোর্ডের নির্দেশ অনুযায়ী সম্পুর্ন হবে এটাই নিয়ম। সেই অনুযায়ী কারাবন্দি খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য নির্ধারন করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ হাসপাতালে।
খালেদা জিয়া ইচ্ছা বা অনিচ্ছা বা প্রয়োজনে বা দরকারে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালে টেষ্ট চিকিৎসা সেবাও নিয়েছে। খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠিত হয়েছিলো। মোট কথা কারাবিধি সরকারী নিয়ম অনুযায়ী যা যা প্রয়োজনীয় সকল কিছু হওয়ার পরে, খালেদা জিয়ার মতামত কি ছিলো সেটা ভালো করে না জানলেও এটা জেনেছি দেখেছি শুনেছি বিএনপির নেতা ও বিএনপি পন্থী ডাক্তারদের আচার আচরন। তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল মানবে না, খালেদার চিকিৎসার জন্য গঠিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বোর্ড মানবে না, কারাবিধি নিয়মকানুন আইন কিচ্ছু তারা মানবে না। তাদের সাফ কথা খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হবে বেসরকারী হাসপাতালে, সরকার খরচ পে না করলেও সমস্যা নেই, খালেদা জিয়ার দল বিএনপির ডাক্তারেরা খালেদার চিকিৎসা করবে।
এক অবস্থায় খালেদা জিয়ার আত্মীয় স্বজনদের আবেদনে প্রেক্ষিতে মানবিক দৃষ্টিতে সরকার কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে গুলশানে খালেদার বাসভবনে থাকার ব্যবস্থা করে দিলো। তারপর থেকে…
খালেদা জিয়া মুক্ত হলেও সাজামুক্ত হয়নি, কারামুক্তি পায়নি…
এমন একটা সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার চিকিৎসা যদি সরকারী হাসপাতালে না হয়ে খালেদা জিয়া যেখানে চায় বা বিএনপির নেতারা যেভাবে চায় সেভাবে হয় সেক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে অগ্রগতি বা সকল কিছু খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত বোর্ডকে জানানো বিএনপির জন্য ফরজ ছিল। বাস্তবতা কি ?
আগের গল্প বাদ দিলাম। এইবার এই যে বলা হচ্ছে খালেদা জিয়ার করোনা হয়েছে, বসুন্ধরার এভারকেয়ারে চিকিৎসা হচ্ছে। যেখানে কারাবন্দি খালেদা জিয়া চিকিৎসার বিষয়ে কারাবিধি অনুযায়ী সরকারের আন্তরিকতার কোন কমতি নেই। সেখানে শুধু আসা যাওয়া যাওয়া ছাড়া আজ পর্যন্ত খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে কারাবন্দি খালেদার চিকিৎসার জন্য গঠিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বোর্ডের একজন ডাক্তারকে অবহিত করা হয়নি, পরামর্শ দুরের কথা বিএনপি এই চিকিৎসক বোর্ড কে দুই আনার মুল্য দেয়নি। এমন অবস্থায় কেবল মাত্র কারাবন্দি খালেদা জিয়ার বা বিএনপির ইচ্ছায় যেই হাসপাতালে খালেদার চিকিৎসা চলছে সেইখানের বিএনপির ডাক্তার কতৃক গঠিত খালেদা জিয়ার চিকিৎসক বোর্ডের সুপারিশে সরকার কোন ভাবেই খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে না। সম্ভব না।
এইখানে কোন রাজনীতি নাই। ব্যস এইটুকুই।