ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৯ নভেম্বর ২০২৩
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

তোমাদের প্রতিপালক নিজের ওপর রহমতকে অবধারিত করে নিয়েছেন;

নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ৯, ২০২৩ ৬:১৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

আল্লাহ তা’আলা কুরআন কারীমে ইরশাদ করেন : যারা আমার আয়াতসমূহে ঈমান রাখে, তারা যখন তোমার কাছে আসে, (তখন তাদেরকে) বলো, তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। তোমাদের প্রতিপালক নিজের ওপর রহমতকে অবধারিত করে নিয়েছেন; তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অজ্ঞতাবশত কোনো মন্দ কাজ করে, তারপর তাওবা করে এবং নিজেকে সংশোধন করে, তবে আল্লাহ তো অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা আনআম: ৫৪)।
এ আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, ‘তোমাদের প্রতিপালক রহমতকে নিজের ওপর অবধারিত করে নিয়েছেন।’ আল্লাহ তা’আলা তাঁর সৃষ্টিজীবের সাথে সকল ক্ষেত্রে দয়া ও অনুগ্রহের আচরণ করেন। ইহজগতে এবং পরকালে সর্বাবস্থায় বান্দা আল্লাহ তা’আলার সব ধরনের দয়া ও অনুগ্রহের মুখাপেক্ষী। আল্লাহ তা’আলার দয়া ও অনুগ্রহ যদি বান্দার সাথে না থাকে তাহলে তার ইহকালও দুর্বিষহ হবে, আর আখেরাতে সে পুরোপুরি বরবাদ হয়ে যাবে। বান্দা আল্লাহ তা’আলার মর্জি মতো না চললেও আল্লাহ তা’আলা সর্বাবস্থায় বান্দার প্রতি রহমত বর্ষণ করতে থাকেন, সব ধরনের নি’আমত দান করতে থাকেন।

আল্লাহ তা’আলা জুলুম তো করেনই না; উপরন্তু দুনিয়া ও আখেরাতে যদি বান্দার সাথে রহমতের আচরণ না করে ইনসাফের আচরণ করেন, তাহলেও বান্দার আর দুর্দশার শেষ থাকবে না। এজন্য আল্লাহ তা’আলা নিজের জন্য আবশ্যক করে নিয়েছেনÑ তিনি বান্দার সাথে রহমতেরই আচরণ করবেন।

আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন : দুনিয়া ও আখেরাতে তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না হলে তোমরা যে বিষয়ে জড়িয়ে পড়েছিলে তজ্জন্য তোমাদেরকে স্পর্শ করতো কঠিন শাস্তি। (সূরা নূর: ১৪)। আল্লাহ তা’আলার এ অনুগ্রহ সকল সৃষ্টিজীবের ওপরেই ব্যাপ্ত। ইহজগতের কেউই আল্লাহ তা’আলার অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত নয়।
মুসলিমের প্রতি যেমন তাঁর অনুগ্রহ রয়েছে, কাফেরের ওপরেও তাঁর অনুগ্রহ রয়েছে। যারা তাঁর বাধ্য ও অনুগত তাদের প্রতিও তিনি রহমত বর্ষণ করেন, যারা তাঁর অবাধ্যতায় লিপ্ত, তাদেরকেও তিনি নিজ রহমত থেকে বঞ্চিত করেন না। তাঁর এ সর্বব্যাপী রহমত মুমিন ও কাফের এবং পাপিষ্ঠ ও পুণ্যবান সকলেই ভোগ করে। সকলকেই তিনি রিযিক, সুস্থতা, নিরাপত্তাসহ অসংখ্য নি’আমত দান করেন।

আল্লাহ তা’আলা বলেন : আল্লাহ বললেন, আমি আমার শাস্তি যাকে ইচ্ছা করি দিয়ে থাকি আর আমার দয়াÑ সে তো প্রত্যেক বস্তুতে ব্যাপ্ত। (সূরা আ’রাফ: ১৫৬)। কেউ আল্লাহ তা’আলার অপছন্দনীয় কোনো কাজ করে ফেললেই আল্লাহ তাকে শাস্তি দেন না। এটা বান্দার প্রতি আল্লাহ তা’আলার অনেক বড় দয়া ও অনুগ্রহ। এরচেয়েও বড় অনুগ্রহের প্রকাশ ঘটবে আখেরাতে। তিনি সেদিন তাঁর মাগফিরাত ও রহমতের সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটাবেন। তাঁর প্রতি বিশ্বাসী মুমিনদের ব্যাপকভাবে ক্ষমা করবেন। কতোভাবে যে তিনি কতো বান্দাকে ক্ষমা করে দেবেন!

এজন্যই আল্লাহ তা’আলার অন্যতম প্রধান গুণবাচক নাম, আর রহমান (দয়াবান) এবং আর রহীম (পরম দয়ালু)। কুরআন কারীমের অনেক জায়গায় বিভিন্নভাবে আল্লাহ তা’আলার সর্বময় রহম ও রহমতের কথা এসেছে। আল্লাহ তা’আলা কতোভাবে বান্দার ওপরে দয়া ও অনুগ্রহ করেছেনÑ তা শতাধিক আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।

রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন : আল্লাহ যখন সবকিছু সৃষ্টি করেন, তখন তিনি একটি কিতাবে লেখেন, ‘আমার অনুগ্রহ আমার ক্রোধের ওপরে’। সেই কিতাবটি আরশে তাঁর কাছে রয়েছে। (সহীহ বুখারী : ৩১৯৪)। তিনি আরো ইরশাদ করেছেন : আল্লাহ একশ’ ভাগ রহমত সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে নিরানব্বই ভাগ নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। আর এক ভাগ দয়া তাঁর সকল সৃষ্টির মাঝে ভাগ করে দিয়েছেন। (সহীহ বুখারী : ৬৪৬৯)।

পৃথিবীর শুরু থেকে কিয়ামত পর্যন্ত সকল সৃষ্টিজীব সকল ক্ষেত্রে যতো দয়া ও অনুগ্রহের পরিচয় দিয়েছে এবং দেবে, এসবকিছুই সে এক ভাগের অন্তর্ভুক্ত। বাকি নিরানব্বই ভাগ আল্লাহ তা’আলার কাছে রয়েছে। আল্লাহ তা’আলার মহান সত্তা সে নিরানব্বই ভাগ দয়া ও অনুগ্রহের ধারক এবং এর প্রকাশ তিনি সকল ক্ষেত্রে ঘটিয়ে থাকেন।

একবার এক গ্রাম্য লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে এলো। নামাযের সময় সে দু’আ করতে লাগল, ‘হে আল্লাহ, আমার ও মুহাম্মাদের ওপরে অনুগ্রহ করেন। আর কারো ওপরে অনুগ্রহ করবেন না।’ এ দু’আ শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘তুমি তো একটা বিস্তৃত বিষয়কে (অর্থাৎ আল্লাহর অপার অনুগ্রহকে) সংকুচিত করে ফেললে।’ (সহীহ বুখারী : ৬০১০)।
আরো ইরশাদ করেন : মানুষের ওপর যে দয়া করে না, আল্লাহও তার ওপর দয়া করেন না। (সহীহ বুখারী: ৭৩৭৬)। কোনো বান্দা যখন অপর বান্দার প্রতি দয়া করে, আল্লাহ তা’আলা খুশি হন। প্রত্যেক বান্দার জন্য জরুরি, দয়া ও অনুগ্রহের এ বৈশিষ্ট্য নিজের মধ্যে ধারণ করা, এতে আল্লাহ বান্দার প্রতি আরো বেশি রহমত বর্ষণ করবেন।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।