ঢাকামঙ্গলবার , ৫ ডিসেম্বর ২০২৩
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দেশের ২ কোটি মানুষ ফেরারি জীবনযাপন করছে : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ৫, ২০২৩ ৮:২২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘পুলিশ আতঙ্কে দেশের ২ কোটি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন এলাকায় উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে, এরা ফেরারি জীবনযাপন করছে। এলাকায় এলাকায় অপ্রকাশ্যে গড়ে উঠেছে উদ্বাস্তু ক্যাম্প। তিনি বলেন, গত দুই মাসে প্রায় ২০ হাজার মুক্তিকামী জনতাকে কারাগারে বন্দী করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, “৫২ বছর আগের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চেয়েও এই ‘আওয়ামী বাহিনী’ ভীষণ রকম হিংসাশ্রয়ী। তাদেরকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর। তাদের কাছে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যরা মানুষ না। বিএনপির নেতাকর্মী ও তাদের পরিবার এমনকি তাদের আত্মীয়-স্বজনও হামলার লক্ষ্যবস্তু। আর তাদের সম্পদ যেন গণিমতের মাল।

তিনি বলেন, ‘পুলিশ আতঙ্কে দেশের ২ কোটি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন এলাকায় নিমিষে উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে, এরা ফেরারি জীবনযাপন করছে। এলাকায় এলাকায় অপ্রকাশ্যে উদ্বাস্তু ক্যাম্প গড়ে উঠেছে। গত দুই মাসে প্রায় ২০ হাজার মুক্তিকামী জনতাকে কারাগারে বন্দী করা হয়েছে। বন্দী নির্যাতনের নেপথ্যে কাহিনী অবর্ণনীয়, এগুলো হচ্ছে চিকিৎসা না দিয়ে হত্যা, অসুস্থ বন্দীকে হাত-পাঁয়ে শিকল পরিয়ে কারা হাসপাতালে ফেলে রাখা, ছোট্ট সেলে ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ বন্দীকে গ্যাস চেম্বারের ন্যায় নিগৃহীত করা।’ ‘অত্যাচারে কাশিমপুর কারাগারে ছয় দিনের ব্যবধানে বিএনপির দুই নেতার মৃত্যু হয়েছে,’ উল্লেখ করেন রিজভী।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘রাতের গভীরে আওয়ামী দলদাস হানাদার বাহিনী হানা দিচ্ছে গণতন্ত্রকামী মানুষের বাড়ি বাড়ি। বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের না পেলে তাদের ছেলেসন্তান, স্ত্রী, মা-বোন-ভাই-বাবাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ভাংচুর লুটপাট করছে। মুক্তিপণ আদায় করছে। ১৯৭১ সালে রাজাকার, আল বদর, আল শামস, শান্তিবাহিনীর লোকজন পাকিস্তানী বাহিনীকে বিভৎস হত্যার মদদ দিত, ধরিয়ে দিত মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের পরিবারের লোকজনদেরকে। বাড়িঘর, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে আগুন দিত। আওয়ামী লীগ এখন নতুন করে সেই ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে গুপ্ত হামলা চালানো হচ্ছে। গুপ্ত হামলায় এখন পর্যন্ত চারজন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। একই কায়দা- কৌশলে গত এক মাস ধরে দেশে রক্ত ঝরাচ্ছে আওয়ামী সন্ত্রাসবাদী দল। মাথায় হেলমেট, মুখে মুখোশ পরে নম্বর প্লেটবিহীন মাইক্রোবাস অথবা মোটরসাইকেলে রাতের অন্ধকারে এসে গুপ্ত হামলা করছে আওয়ামী গুপ্ত ঘাতকরা। রাতের অন্ধকারে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, বাড়িঘর ভাঙচুর ও ককটেল বোমা মারা হচ্ছে। এসব ঘটনায় থানায় অভিযোগ ও মামলা নেয়া হচ্ছে না। দেশের আইনশৃংখলা বলে কিছুই নেই।’

উদাহরণ হিসেবে রিজভী বলেন, কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ছেলেকে না পেয়ে তার বৃদ্ধা মা আনোয়ারা বেগমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিএনপির খুলনা জেলার যুগ্ম আহবায়ক শামসুল আলম পিন্টুকে তার কপিলমুনির বাসায় রাত আড়াইটায় অভিযান চালিয়ে বাসায় না পেয়ে পুলিশের এসআই সাহাজুল পিন্টুর স্ত্রী এবং সন্তানদের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করেছে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। বাসার আসবাব-টেলিভিশন যা পেয়েছে ভাংচুর করেছে। খাবারের চালের ড্রাম রাস্তায় ফেলে দিয়েছে। এক উচ্ছৃঙ্খল উল্লাসের দৃশ্যপট দেশজুড়েই। এক ভয়াবহ বিভীষিকাময় পরিস্থিতি।’

তিনি বলেন, ‘এতকিছুর পরও প্রবল শক্তিতে আন্দোলনের মাঠে লড়ছে বিএনপিসহ সমস্ত গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলো। বৈপ্লবিক স্তরে প্রবেশ করেছে তারা। একদলীয় তামাশার নির্বাচনের স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে জনগণের মুক্তি মিলবে যেকোন সময়।’ রিজভী বলেন, ‘একতরফা নির্বাচনকে লোক দেখানো বৈধতা দিতে সরকারের প্রস্তুতি ছিল প্রার্থী বেচাকেনার হাট জমিয়ে তোলার। কর্মীবিহীন নামসর্বস্ব দলের নেতাদের পকেটে পুরতে উদয়াস্ত খেটেও সুবিধা করতে পারেনি সরকারি দলের আজ্ঞাবহ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।’ ‘একদিকে যেমন চলেছে বেচাকেনা তেমনি কাজে লাগানো হয়েছে চাপ প্রয়োগের কৌশলও। মামলা, হামলা হুমকি কোনকিছুই বাদ যায়নি এ থেকে। কিন্তু কথিত দু’তিনটি ‘রাজদল’ বা কুইন্স পার্টি নামকাওয়াস্তে গঠন করে বিএনপিসহ সকল জনপ্রিয় দলকে দূরে সরিয়ে তাদের নির্বাচনের পাতানো খেলার মাঠে নামানো হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের আশা দূরাশায় পরিণত হয়েছে এখন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনারদের ন্যায় আধা-রোবটদের দৌলতেই সরকার ভোটার নির্বাচনের বৈতরণী পার হতে চাচ্ছে,’ বলেন তিনি।

রাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবের প্রতিনিয়ত শব্দবাজি ফাটিয়ে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছেন। তিনি এখন বলছেন, ২৯টি নিবন্ধিত দল নিয়ে তারা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করছেন। কিন্তু তাদের এই ২৯ দলের মধ্যে তিন-চারটি বাদে অন্যগুলোর নামও শোনেনি কেউ। স্বগৃহে ইলেকশন থিয়েটারে রঙ্গনাটক মঞ্চস্থ করতে যাদের আনা হয়েছে তারা হলো আওয়ামী লীগের সঙ্গ-অনুসঙ্গ। এটা আসলে বাকশালের নতুন ভার্সন।’

‘এই তথাকথিত বাকশাল সঙ্গীদের নিয়ে ‘সুপার-ইমপোজড’ নির্বাচনের আজব তামাশা করছে সরকার। কিন্তু আওয়ামী লীগের আশা দূরাশায় পরিণত হয়েছে এখন। মনোনয়ন নিয়ে তাদের সাথে কামড়া কামড়ি শুরু হয়েছে। যারা এসব দোকান থেকে মনোনয়ন কিনেছিল তাদের অধিকাংশই জমা দেয়নি। আর যাদের এমপি বানানোর মুলো দেখানো হয়েছিল তারাও ঘুরছে নিরাশায়। আসলেও তাদের আশায় গুড়েবালি। আওয়ামী লীগ যে প্রতারক তা বুঝতে পারছে হাড়ে হাড়ে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।