বাংলা ভাষার গানের অমর গীতিকার, সুরকার, কন্ঠশিল্পী ও ভাষা সৈনিক আব্দুল লতিফ।
তিনি ছিলেন, এদেশের ভাষা সংগ্রাম, ঊনসত্তুরের গণঅভূত্থান ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধসহ স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সকল সংগ্রামে লড়াকু ছাত্রজনতার অকুতোভয় শক্তি ও সাহসের এক অফুরন্ত উৎস।
অমর গীতিকার ভাষা সৈনিক আব্দুল লতিফ ১৯৩৫ সালের ৭ মার্চ বরিশালের রায়পাশা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর পিতার নাম আমিনুদ্দিন। উচ্চবিদ্যালয় থেকে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর তিনি উচ্চ শিক্ষাতর্থে কলকাতায় যান। এখানে বছর তিনেক উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম নিয়েছেন ওস্তাদ সুরেন্দ্রনাথ দাসের কাছে।
সেখানে ১৬ বছর বয়স থেকে কংগ্রেস সাহিত্য সংঘে গান গাইতে শুরু করেন তিনি। তবে প্রতিনিয়ত দরিদ্রতার সাথে সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে।
১৯৪৮-৪৯ সালের দিকে উপোস করে দিন কেটেছে। কলকাতার জীবনে এআরপিতে চাকরি যাওয়ার পর তাঁবু সেলাইয়ের কাজ করে দিন কাটিয়েছেন। তবু সঙ্গীত চর্চা বাদ দিতে পারেননি।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন ও ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান কোন সময়েই আব্দুল লতিফ নীরব দর্শক ছিলেন না।
তিনি সবসময়ই গণমানুষের কাতারে দাঁড়িয়েছেন, কলম ধরেছেন, গানের ভাষায় স্বৈরাচারী শাসকদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
তাঁর রচিত ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’ গানটিতে আমাদের মাতৃভাষা বাংলা এবং বাঙালী জাতিসত্বা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে তৎকালীন শাষকগোষ্ঠীসহ সর্বকালের শত্রু ও ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিরোধ করার শক্তি ও সাহসের চিরন্তন বানী।
এছাড়াও তিনি ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত জনপ্রিয় গান আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো এর প্রথম সুরকার।
২০০৫ সালের ভাষার মাসের আজকের দিনে মৃত্যুবরণ করেন গীতিকার, সুরকার আব্দুল লতিফ। বাংলাদেশের বিভিন্ন জনপ্রিয় গানের রচয়িতা এই মহান শিল্পীর ১৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। মৃত্যুদিনে তাঁর প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।