ময়মনসিংহ সংবাদ
জন উন্নয়ন কাজে দুর্ণীতি নতুন কিছু না। রাস্তার ঢালাই কাজে রডের পরিবর্তে বাঁশের ব্যবহার, ২৬ ফুট খালে ১৬ ফুট ব্রিজ এমন বহু কিছু খুবই সাধারন কিছু। কিন্তু রেল লাইনে পাথরের পরিবর্তে ইটের সুড়কি কথা কি এ যাবৎ কালে শুনেছেন, তাও আবার দুই নম্বর ইটের সুড়কি!? না বোধ হয়। কিন্তু এবার ময়মনসিংহে রেললাইনে পাথরের পরিবর্তে ইটের সুড়কি দিয়ে কাজ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, জেলার কেওয়াটখালি লোকোসেড থেকে শুরু করে রেলওয়ে স্টেশনের মেইন লাইনের সংযোগ পর্যন্ত ২ কিলোমিটার লাইনের কাজ হচ্ছে দুই নম্বর সুড়কি দিয়ে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হাসান বলেন, “সরকারিভাবে পাথর কেনার কোনো বরাদ্দ নেই। টেন্ডার করে পাথর কিনে নিয়ে আসতে অনেক সময়ের ব্যাপার। কিন্তু ওই জায়গাটি অনেক নিচু। দুই কিলোমিটার রেললাইনের সম্পূর্ণ অংশে কাঠের স্লিপার লাগানো। পানি জমে সেগুলো যেন পঁচে নষ্ট না হয় সেজন্য আপদকালীন সময়ে এই ব্যবস্থা করেছি।” কিন্তু রেলের মতো স্পর্শকাতর লেইনে এ ভাবে সুড়কি ঢেলে রক্ষনাবেক্ষন কতটা বিপদজনক হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটি রেললাইনের মেইন লাইন না। তবুও পাথর দিয়ে কাজ করার দরকার ছিল। ইট, বালি দিয়ে এই কাজটি করার ফলে ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার সম্ভবনার কথা স্বীকার করেন তিনি। তবে যখন বরাদ্দ আসবে তখন পাথর দিয়েই এই রেললাইনের কাজ করা হবে।”
সুশাসনের জন্য নাগরিক ময়মনসিংহের সাধারণ সম্পাদক আলী ইউসুফ বলেন, রেললাইনে ইট দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। কেউ কখনো এমন অবস্থা কোন দিন দেখেছে বলে আমার মনে হয় না।
দৈনিক অপরাজিত বাংলাকে সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আরও জানান, “বরাদ্দ না থাকলে আমি কী করব? তাই পাথরের পরিবর্তে অল্প টাকায় ইট দিয়ে মেরামত করার চেষ্টা করেছি। সবাই ভাবছে আমি পাথরের পরিবর্তে ইট দিয়ে কাজ করে হয়তো টাকা আত্মসাৎ করেছি। তবে তারা জানে না এই কাজে আমার কোনো গাফিলতি নেই।”
বিষয়টি ইতিমধ্যে জানাজানি হয়ে যায় সব মহলে। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বইছে নিন্দার ঝড়। এর জন্য ময়মনসিংহ রেলওয়ের গাফিলতি আর দুর্নীতিকেই দায়ী করছেন অনেকে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রেললাইনে বিছানো সুড়কিগুলো নিম্নমানের। জমিয়ে রাখা হয়েছে আরও অনেক সুড়কি। দেখলে যে কেউ বুঝতে পারবে দুই নম্বর।স্থানীয়রা বলছেন, ইটের সুড়কি দিয়ে রেললাইন মেরামতের বিষয়টি দুঃখজনক। এটা কোনো যৌক্তিক কাজ হতে পারে না। কারণ এর আগেও কয়েকবার এই লাইনটিতে ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়েছে। মাঝখানে কয়েক বছর আগে একবার রেললাইনটি মেরামত করা হয়েছিল।
তবে বর্তমানে লাইনটিতে পাথরের পরিবর্তে ইটের সুড়কি ব্যবহারে পরবর্তীতে আরও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।