নারী এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে ৯ উইকেটে হারালো পাকিস্তান। সোমবার (৩ অক্টোবর) সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুই নম্বর গ্রাউন্ডে টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় পাকিস্তান। পাকিস্তানের বোলিংয়ের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণে মাত্র ৭০ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের নাজুক ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে হতাশ দর্শকরা। বাংলাদেশের দেওয়া ৭১ রানের টার্গেট অনায়াসেই টপকে যান বিসমাহ মারুফরা। বাংলাদেশের বোলারদের নখদন্তহীন বোলিং ও বাজে ফিল্ডিংয়ের সুযোগ নিয়ে ৪৬ বল আগেই ৯ উইকেটে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাকিস্তান।
সহজ লক্ষ্যে খেলতে নেমে পাওয়ার প্লেতেই পাকিস্তান বিনা উইকেটে ৪০ রান তুলে নেয়। যে নাহিদা-সালমার বোলিংয়ে প্রতিপক্ষ ব্যাটাররা চুপসে যান, তাদের বিপক্ষেই কিনা পাকিস্তানের দুই ওপেনার অবলিলায় ব্যাটিং করলেন। মুনিবা আলী ও সিদ্রা আমিন মিলে ৪৯ রানের জুটি গড়েন। সালমার বলে ১৯ বলে ১৪ রান করে মুনিবা উইকেট কিপার শামীমার তালুবন্দি হন। বাকি পথটুকু বিসমাহ মারুফকে নিয়ে সহজেই পেরিয়ে যান সিদ্রা আমিন। ৩৫ বলে ৪ চারে ৩৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন মুনিবা। বিসমাহ ২০ বলে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন।
বেশ কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশের সাফল্যের মূল কারিগর স্পিনাররা। সোমবার তারাই ছন্দছাড়া বোলিং করছেন। সালমা খাতুন, নাহিদা আক্তার, সানজিদা আক্তার, রুমানা আহমেদ কেউই নিজের সামর্থ দেখাতে পারেননি। পাকিস্তানের একমাত্র উইকেটটি শিকার করেন অফস্পিনার সালমা।
ম্যাচের আগের রাত থেকেই সিলেটে বৃষ্টি হওয়ায় ভেজা মাঠে আগে ব্যাটিং করতে নেমে পরিকল্পনাহীন ব্যাটিং করে টিম বাংলাদেশ। অবশ্য এতে পাকিস্তানের বোলারদের কৃতিত্বের চেয়ে বাংলাদেশের ব্যাটারদের দায়ই বেশি। নিগার সুলতানা, সালমা খাতুন, লতা মণ্ডলের ডাবল অংকের ফিগারের কারণে কোনোমতে ৭০ রানের সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারে বাংলাদেশ।
থাইল্যান্ডের বিপক্ষে দারুন শুরু করা দুই ওপেনার শামীমা আক্তার ও ফারজানা হক দুই জন পরপর দুই ওভারে ১ রান করে আউট হন। অফস্ট্যাম্পের বরাবর বল কাট করতে গিয়ে শামীমা ক্লিন বোল্ড হন ডায়না বেগের বলে। পরের ওভারে মেডেন উইকেট নেন সাদিয়া ইকবাল। সুইপ করতে গিয়ে পিংকিও ক্লিন বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন।
চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা রুমানা আহমেদও ভূমিকা রাখতে পারেননি। ৭ বলে ১ রান করে ডায়ানার বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন এই অলরাউন্ডার। সবমিলিয়ে প্রথম ৬ ওভারে বাংলাদেশ দল ১২ রান তুলতেই হারিয়ে ফেলে ৩ উইকেট। পঞ্চম ওভারে পর পর দুই বলে নিগার চার না মারলে রান দাঁড়াতো ৬ ওভারে ৪! প্রথম পাওয়ার প্লের তিন ওভারে কোন রানই নিতে পারেনি লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। লতা মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে অধিনায়ক নিগার সুলতানা শুরুর এই চাপ থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা লতাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন নিদা দার। ১৯ বলে ১২ রান করেন এই ব্যাটার।
এরপর পঞ্চম উইকেটে সালমাকে সঙ্গে নিয়ে নিগার ১৫ রানের জুটি গড়েন। দলের হয়ে ১৭ রানের ইনিংস খেলা নিগার নিদা দারের শিকার হন। ৩০ বলে ২ চারে অধিনায়ক নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৪ রানের ইনিংস খেলেন সালমা। ২৯ বলে ২ চারে নিজের ইনিংসটি সাজান এই ব্যাটার। সবমিলিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৭০ রান করতে পারে বাংলাদেশের মেয়েরা। এনিয়ে বাংলাদেশকে একশ রানের নিচে চার বার আউট করলো পাকিস্তান। লাল-সবুজ জার্সিধারীদের সর্বনিম্ন স্কোর ৩০। পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৮ সালে কক্সবাজারে ৩০ রানে আউট হয়েছিল মেয়েরা।
পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে ডায়না বেগ ১১ রানে ২টি এবং নিদা দার ১৯ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন। সাদিয়া ও সোহেলী একটি করে উইকেট নেন।