ঢাকাসোমবার , ৬ নভেম্বর ২০২৩
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পতন্মুখ ফ্যাসিস্ট সরকার শেষ তাণ্ডব শুরু করেছে: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ৬, ২০২৩ ৯:৪৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সরকার গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের দিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী পুরনো কৌশল অবলম্বন করে গণমাধ্যমকে হুমকি দিয়ে ও কতিপয় সাংবাদিককে হাতের মুঠোয় নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে ঢালাও অপপ্রচার করে যাচ্ছে।’

সোমবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, ‘বিএনপি ঘোষিত ও গণতন্ত্রকামী সমমনা দলগুলো সমর্থিত অবরোধ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসী ক্যাডারদের যৌথ আক্রমণে দেশের সর্বত্র আতঙ্ক ও ভয় বিরাজ করছে। জনসমাজে এক ভয়াল আতঙ্ক, যেন ছায়াঘন নীরব নিস্তব্দতায় ঝিমিয়ে থাকা পরিবেশ বিরাজ করছে। গ্রেফতার ও বাড়ি-ঘরে হামলা চলছে নিরন্তরভাবে। বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গ্রেফতারের আতঙ্ক, নিরুদ্দেশ হওয়া সন্তানের জন্য মা-বাবার আহাজারি এবং হামলা, ভাঙচুর ও আক্রমণের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘গোয়েন্দা পুলিশ নেতাদের তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু বারবার পুলিশের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা অস্বীকার করছে। এটা এক ভয়ানক অস্বীকৃতি পুলিশের। এভাবে অসংখ্য ছাত্রদল, যুবদল, বিএনপি, সাবেক এমপি, জনপ্রতিনিধিদের গুম করা হয়েছে এই সরকারের আমলে।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘বিএনপি গণতন্ত্রের, সুষ্ঠু ভোটাধিকার আদায়ের আন্দোলনে থাকলেই সরকারের শুরু হয় গুম ও ক্রসফায়ারের উৎসবের ঋতু। তারা শুরু করে আগুন নিয়ে খেলা। বাসে আগুন দিয়ে দায় চাপায় গণতন্ত্রের স্বপক্ষের বিপ্লবী কর্মীদের নামে। যার অসংখ্য প্রমাণ এখন মানুষের হাতে হাতে। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ করে বিএনপি। ওই সমাবেশ থেকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি করা হয়। লাখ লাখ মানুষ সমাবেশে জমায়েত হয়। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে পুলিশ রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে সমাবেশকে ভণ্ডুল করে দেয়। বিএনপির এক নেতা পুলিশের গুলিতে শহীদ হন।’

সমাবেশের দিন পুলিশ নিহতে আওয়ামী লীগকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘পুলিশ ও আওয়ামী ক্যাডারদের যৌথ সহিংসতায় পুলিশের একজন সদস্য নিহত হন। প্রকৃত সন্ত্রাসীদেরকে আড়াল করে দলের মহাসচিবসহ জাতীয় নেতাদের ওপর দায় চাপিয়ে কয়েক হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।’

আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাব নাশকতা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সহিংসতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সশস্ত্র ক্যাডারদের যৌথ আক্রমণের ভিডিও চিত্র ও স্থির চিত্র শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু তারা বিএনপির নেতাদেরকে গ্রেফতার করে অসংখ্য নেতাকর্মীকে ঘর ছাড়া করে। তারা পরিকল্পিত নাশকতা করে বিএনপির বিরুদ্ধে একতরফা দায় চাপাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে। গত ৪ তারিখে রাত সাড়ে ৯টায় দক্ষিণ গেটের সামনে বাসে আগুন লাগানো হয়। সেখানে অনেকেই দেখেছে যারা বাসে আগুন দিয়েছে তারা দৌড়ে আওয়ামী লীগ অফিসের ভেতরে ঢুকেছে। নানা ঘটনায় এ ধরনের দৃশ্য নিয়মিত দেখা যাচ্ছে। শুধুমাত্র নাগরিক স্বাধীনতাসহ গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে কালিমা লেপন করার জন্য আবারো বিএনপির বিরুদ্ধে অগ্নি সন্ত্রাসের কাহিনী সাজানো হচ্ছে। কারণ মিডিয়া তাদের হাতে, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাদের হাতে, আদালত তাদের কব্জায়। এ কারণে সহজেই বিএনপির কোনো নেতার নামে পরিকল্পিত নাশকতার ঘটনায় মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা অত্যন্ত সহজ। কারণ গ্রেফতারের ইন্সট্রুমেন্ট সরকারের হাতে।’

রিজভী বলেন, ‘কারাগারগুলোতে মানবিক বিপর্যয় চলছে। কেরানীগঞ্জ কারাগারে যাদের আটক রাখা হয়েছে, ওই সকল নেতাকর্মীকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাদের আইনজীবী ও আত্মীয়-স্বজনরা জানতে পারছে না। কারাগারের ভেতর প্রতিটি ভবনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে নেতাকর্মীদের ঠেসে ঠেসে রাখা হয়েছে। যে ওয়ার্ডে ১০ থেকে ১৫ জনের বেশি বন্দীকে রাখা যায় না সেখানে ৪০ থেকে ৫০ জনকে রাখা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, “তারা ২০০৮ সালে গণতন্ত্রের কথা বলে ক্ষমতায় এসে হীন উদ্দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে। জনগণের ভোটের অধিকার ও নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে নিষ্ঠুর ফ্যাসিজম কায়েম করেছে। জনগণ তাদের একতরফা নির্বাচনের পায়তারার সুযোগ আর দেবে না। দেশের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও বিদ্বান বদরুদ্দীন ওমর সম্প্রতি একটি লেখায় বলেছিলেন, ‘নির্বাচন বর্জন যথেষ্ট নয়, নির্বাচন হতে দেয়া হবে না এটাই লক্ষ্য হওয়া উচিৎ।’ এবার একদলীয় নির্বাচনের কোনো তামাশা হতে দেবে না দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ।”

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান গণবিরোধী সরকার সবকিছু ধ্বংস করেছে। দেশের অর্থনীতি, সামাজিক ভারসাম্য, সার্বভৌমের শক্তি, বৈদেশিক সম্পর্ক। এখন গোটা জাতির প্রতিটি নাগরিকের ওপর লক্ষাধিক টাকার উপরে ঋণ রয়েছে। অর্থনৈতিক টানাপোড়েন চলছে তীব্র মাত্রায়। প্রতিমাসে ১০০ কোটি ডলার রিজার্ভ কমছে। মুদ্রাস্ফীতি ডাবল ডিজিটের কাছাকাছি। চিরকালীন সস্তা খাদ্যপণ্য কিনতেও মধ্যম আয়ের মানুষগুলো হিমশিম খাচ্ছে। এদিকে ১২ দেশে বাংলাদেশের পোশাক প্রত্যাহার করা হয়েছে। সারাদেশকে মাদকের স্বর্গরাজ্য বানানো হয়েছে। মাদককারবারিরা হয় সরকারি দলের সংসদ সদস্য। সমাজে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে যুবলীগ, ছাত্রলীগের বেপরোয়া যৌথ বাহিনীর দাপট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে তাদেরকে জুড়ে দিয়ে যৌথভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ করছে। শিক্ষাকে সর্বজনীন না করে দলীয়করণ করে জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে ফেলা হয়েছে। দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী যর্থাথই বলেছেন যে শিক্ষার সর্বনাশের জন্য রাষ্ট্র দায়ী।’

সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, “সরকার শেষ তাণ্ডব শুরু করেছে। আমি শাসকগোষ্ঠীর সংশ্লিষ্ট সকলকে বলতে চাই, ‘সূর্যের আলো হাত দিয়ে বলো রুধীতে পারে কি কেউ, আমাদের ধরে ঠেকানো যাবে না গণ-জোয়ারের ঢেউ।”

ভার্চুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলনে সারাদেশে হামলা, মামলা ও গ্রেফতারের বিবরণ তুলে ধরেন রিজভী।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।