প্রায় চার বছর আগে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল মারণ ভাইরাস কোভিড-১৯। চিন থেকেই ছড়িয়ে ছিল সেই ভাইরাস। এবার সেই ড্রাগনের দেশেই চোখ রাঙাচ্ছে নয়া অজানা নিউমোনিয়া। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ও অজানা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে চিনা শিশুরা। বেজিং সহ দেশের বিভিন্ন শহরের হাসপাতালে শিশু রোগীদের ভিড় উপচে পড়ছে। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিনের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। উত্তরে কী জানাল চিন?
কোভিডের পর এবার চিনে নতুন ত্রাস রহস্যজনক নিউমোনিয়া। বিশেষজ্ঞরা নতুন রোগকে এমনটাই আখ্যা দিয়েছেন। রহস্যজনক নিউমোনিয়ার মূল শিকার হচ্ছে শিশুরা, আর তাতেই বাড়ছে উদ্বেগ। সংক্রমণে জেরে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশু রোগীর সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
তবে শিশুদের মধ্যে রহস্যজনক নিউমোনিয়া সংক্রমণের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে চিন। চিনের তরফে জানানো হয়েছে, শিশুরা যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে তা অজানা ভাইরাস বা প্যাথোজোনসের কারণে নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য় সংস্থার তরফে চিনকে এই সংক্রমণের যাবতীয় তথ্য প্রকাশ করতে বলা হয়েছিল। আর তারপরেই চিন জানিয়েছে শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া সংক্রমণে কোনও নতুন ভাইরাস বা নতুন প্যাথোজেন সনাক্ত করা যায়নি। চিনের দাবি, করোনা সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়া ও সাধারণ কিছু ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবেই শিশুদের মধ্যে এই ধরনের রোগ বাড়ছে। এতে বিশেষ উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।
চলতি বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় উত্তর চিনে শিশুদের মধ্যে শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রকোপ বাড়তে দেখা যায়। বিষয়টিতে নজর রেখেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তথা WHO। রিপোর্ট বলছে, উত্তর চিনে সম্প্রতি স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এক রহস্যজনক রোগ। এই রোগের উপসর্গ কতকটা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো। জানা গিয়েছে, আক্রান্ত শিশুদের নিশ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে। রোগটিকে ‘অজানা নিউমোনিয়া’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই ‘অজানা নিউমোনিয়া’ সম্বন্ধে চিনের থেকে রিপোর্ট চেয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য় সংস্থা। WHO-এর তরফে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন এবং জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ প্রশাসনের সহায়তায় ‘চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ এবং বেজিং চিলড্রেনস হাসপাতালের সঙ্গে টেলিকমিউনিকেশনের মাধ্যমে কথা হয়েছে।
WHO একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘চিনের তরফে জানানো হয়েছে, বেজিং এবং লিয়াওনিংয়ে কোনও অস্বাভাবিক বা অভিনব প্যাথোজেন সনাক্ত করা যায়নি। বরং পরিচিত ভাইরাসেই শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এমনকী শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে মাত্রাতিরিক্ত রোগী ভর্তি হওয়ার বিষয়টিও অস্বীকার করা হয়েছে চিনের তরফে।
জানা গিয়েছে, অজানা রোগে আক্রান্তদের জ্বর হচ্ছে, সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে ফুসফুসে, শ্বাসকষ্টও হচ্ছে। তবে মূলত শিশুরাই আক্রান্ত হচ্ছে এই রোগে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এখনও এই রোগটি ছড়ায়নি। এখনও পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত কোনও রোগীর মৃত্যুর খবর মেলেনি। WHO বলছে, গত তিন বছরের তুলনায় এই বছর চিনে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগ কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে না।