নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের অন্যতম সংগঠক মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী। দেশের আলোচিত সংগঠন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমিরও তিনি। নেজামে ইসলাম পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বছরতিনেক আগ থেকে ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের চেয়ারম্যান হিসেবে চট্টগ্রামে কাজ শুরু করেন। ভিন্নমতের কারণে ইসলামী ঐক্যজোটের মূল দলে বেশি দিন টিকতে না পেরে তাকে বেরিয়ে আসতে হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাকিস্তানভিক্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা ও আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে তার। পাশাপাশি ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে হামলার পরিকল্পনাসহ আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে তার ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। তার প্রতিষ্ঠিত নগরীর লালখান বাজারের মাদ্রাসাকে ঘিরেও রয়েছে নানা রহস্য। এ মাদ্রাসা থেকে নাশকতার পরিকল্পনা এবং জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএমপির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ‘বিতর্কিত ভূমিকার কারণে দীর্ঘ দিন ধরে লালখান বাজার মাদ্রাসাটি প্রশাসনের নজরদারিতে ছিল। কিন্তু প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এ মাদ্রাসা থেকে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করা হয়। বোমা বিস্ফোরণের পর ওই মাদ্রাসা থেকে বেশ কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া আলামত থেকে নাশকতার পরিকল্পনার বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ।’
মুফতি ইজহারুল ইসলাম লালখান বাজার এলাকায় পাহাড়ে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে যখন দেশে হুজির তৎপরতা শুরু হয় তখন থেকেই এ মাদ্রাসাটি হুজির সদস্য সংগ্রহের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এখানে জঙ্গিদের শারীরিক ও ডামি অস্ত্র দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক জঙ্গি আফগানিস্তান, ইরাক, কাশ্মীর ও মিয়ানমারে গিয়ে যুদ্ধ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০০৯ সালের ৫ নভেম্বর মার্কিন দূতাবাসে হামলা পরিকল্পনার অভিযোগে মুফতি ইজহারের ছেলে হারুন ইজহার ও লস্কর-ই-তৈয়বার দুই সদস্য শহিদুল ইসলাম ওরফে সুজন এবং আল আমিন ওরফে সাইফুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জঙ্গি মদদদানের অভিযোগে ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর মুফতি ইজহারকে গ্রেফতার করে র্যাব। এর আগের দিন র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া হুজির পাঁচ সদস্যকে নিজ নেতা-কর্মী দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেন মুফতি ইজহার।
