আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক নীতিমালা সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যমকর্মী ও
অন্যান্য অংশীজনদের মতামত এবং আন্তর্জাতিক চর্চার আলোকে নীতিমালাটি সংশোধন করার আহ্বান
জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
গতকাল রোববার (২০ আগস্ট) টিআইবির আউটরিচ
অ্যান্ড কমিউনিকেশন পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানায় সংস্থাটি।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভিসা জটিলতার কারণে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বল্প সংখ্যক
উপস্থিতি ও বিতর্কিত ভূমিকা নির্বাচন-প্রক্রিয়াকে কলুষিত করেছিল উল্লেখ করে বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী
পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “বিদ্যমান নীতিমালাটি অবশ্যই সংশোধন করতে হবে, কারণ একটি
সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অবাধ উপস্থিতি ও
স্বাধীনভাবে বিচরণ করার সুযোগ অপরিহার্য।
এক্ষেত্রে শুধুমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতামত-নির্ভর সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিধি-নিষেধমূলক নীতিমালা প্রণীত
হলে, একদিকে যেমন নির্বাচন কমিশনের চলমান আস্থার সংকট আরও গভীর হবে, অন্যদিকে তা বিদেশি
পর্যবেক্ষকদের আবারও নিরুৎসাহিত করবে”।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ২০১৮ সালে একটি নীতিমালা করে নির্বাচন কমিশন
(ইসি)।
এই নীতিমালা অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে হবে, পর্যবেক্ষক দল
(কোনো মিশন) আনুষ্ঠানিকভবে বক্তব্য দেওয়ার আগে পর্যবেক্ষকদের কেউ ব্যক্তিগতভাবে গণমাধ্যমে মন্তব্য
করতে পারেন না।
তারা ভোটকেন্দ্র থেকে ফেসবুক, টুইটার বা এ ধরনের কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি কিছু সম্প্রচার করতে পারেন না।
নীতিমালাটি যুগোপযোগী করার ক্ষেত্রে বিদেশি
পর্যবেক্ষকদের অবাধ উপস্থিতিকে লেভেল-প্লেইং ফিল্ড বা সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নিশ্চিতের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম
হিসেবে বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলছেন, “নির্বাচন সুষ্ঠু করার দায় এককভাবে যেমন
নির্বাচন কমিশনের নয়, তেমনি একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করাও যে কমিশনের সাংবিধানিক
দায়িত্ব ও বাধ্যবাধকতা, তাও ভুলে গেলে চলবে না।
তাই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দল-নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও অন্যান্য অংশীজনদের মতামত এবং এক্ষেত্রে বিগত দিনে বাংলাদেশের ইতিবাচক ও নেতিবাচক
অভিজ্ঞতাসহ আন্তর্জাতিক চর্চার আলোকে নীতিমালাটি ঢেলে সাজাতে হবে”।
২০১৮ সালে তৎকালীন নির্বাচন কমিশন সচিব
পর্যবেক্ষকদের ভোটকেন্দ্রে মূর্তির মতো থাকতে হবে’ বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, এই নীতিমালাটি সংশোধনের
ক্ষেত্রে সেই একই মানসিকতার প্রতিফলন যেন না ঘটে, সেদিকটা বর্তমান কমিশন ও সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষকে সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করার আহ্বান জানায় টিআইবি।
