আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিন লক্ষাধিক সিসি ক্যামেরা থাকবে উল্লেখ করে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক রদবদলেরও ইঙ্গিত দিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান। রবিবার (১৩ নভেম্বর) সাংবাদিকদের কাছে তিনি এমন ইঙ্গিত দেন।
তিনি বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর সবকিছু তো আমাদের নিয়ন্ত্রণেই চলে আসবে। অতীতেও মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক রদবদল করা হয়েছে। কাজেই সময়ই বলে দেবে কখন কী করবো। এখনও যথেষ্ট সময় আছে। আস্থার জায়গাটাও তৈরি করবো।’
নতুন ইভিএম কেনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জানুয়ারির মাঝামাঝি হলেও হবে। বাজেট কাটছাট হবে কি-না জানি না। সরকার যেমন দেবে তেমন সংগ্রহ করবো। সে অনুযায়ী ইভিএম কিনবো। জানুয়ারির মধ্যে না হলে আমাদের হাতে যা আছে তা নিয়েই প্রস্তুতি এগিয়ে নেবো। জটিলতা বলবো না। সরকারি প্রক্রিয়া একটা লম্বা প্রক্রিয়া। এটুকু শুনেছি তারা পিইসি সভার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তার মানে এটা ইতিবাচক। সিগনাগ অনুমোদনের (নতুন ইভিএম প্রকল্প) মতোই মনে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ইভিএমের ব্যাপারে একটা সমস্যা, বিভিন্ন দলের আপত্তি। যারা আপত্তি করেন তারা জেনে করছে এমনটা আমি বলবো না। আমরা ডেকেছিলাম তারা এক্সপার্ট নিয়ে এসে দেখলে এসব বলতেন না। আশা করি ইভিএম নিয়ে আপত্তি কেটে যাবে।’
কখন কোনটা করবো সেটা রোডম্যাপে উল্লেখ করেছি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সে অনুযায়ী আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আইন সংশোধনের যথেষ্ট সময় আছে। না হলে সেভাবেই করবো। আমরা যে সংশোধন চেয়েছি তা হলে আমাদের জন্য হয়তো সহজ হতো। তাই বলে না হলে এমন নয় যে তাতে কাজ করতে পারবো না। কাজ কিন্তু আমরা করছি। গাইবান্ধার নির্বাচন আমরা বন্ধ করেছি। আগে কিন্তু আইনটার প্রয়োগ কোনো কমিশন করেনি। এবারই প্রথম করা হয়েছে। কোনো মহল থেকেই প্রশংসিত হয়নি তা বলা যাবে না। আইন তো ছিল, আইন প্রয়োগটা হচ্ছে বড় কথা। আইন প্রয়োগ করতে গেলে সরকার বাধা হয়ে দাঁড়াবে এটা আমরা বিশ্বাস করি না। সরকার আমাদের সহায়তা দেবে এবং সরকারের সহায়তা নিয়েই আমাদের আইনি সংস্কারটা শেষ করতে পারবো বলে আশা করি।’
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘মিডিয়া বাধার সম্মুখীন হলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা তো করতে হবে। এই রকম কিছু জিনিস ছিল না। এছাড়া শাস্তির কিছু ক্ষেত্রে গড়মিল ছিল, এগুলো একই রকম করার জন্য (আরপিওতে) প্রস্তাব করেছি।’
তিনশ আসনের বাস্তবতায় কী হবে তাহলে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা আমরা ইতোমধ্যে বলেছি সিসি ক্যামেরা থাকবে তিন লক্ষাধিক। টেকনিক্যালি এটা সম্ভব। আবার বাস্তবতাও আছে যে যাকে দায়িত্ব দিলাম তার চোখ যে ফাঁকি দেবে না, তার চোখকে তো আমি বিশ্বাস করতে পারি না। বাস্তবতার বিষয় আছে। ওগুলো বিবেচনায় নিয়েই আমাদের এগোতে হবে। সিসি ক্যামেরা দিলে কিন্তু এমনিতেই সচেতন হয়ে যায়।’
এক সময় তো ভোটে কেউ দায়িত্ব নিতে চাইতো না। এখন কিন্তু এমন পরিস্থিতি নেই। আমাদের সময় এমন হয়েছে। একটা সময় ছিল ৮০ দশকে ভোটের দায়িত্বে কেউ আসতে চাইতেন না। এখন নিয়মের মধ্যে এসেছে। দু এক তো এদিক সেদিক হবেই। তবে আশাকরি সবাই নিষ্ঠার সঙ্গেই দায়িত্ব পালন করবে।’