বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীন দলের সাম্প্রতিক হামলা ও তিনজন নেতাকে গুলি করে হত্যার সার্বিক চিত্র ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসনকে জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল দুপুরে হাইকমিশনে রবার্ট ডিকসনের সাথে বৈঠকে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল সাম্প্রতিক এসব হামলার কথা তুলে ধরে বলে জানা গেছে।
বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও তাবিথ আওয়াল।
জানা গেছে, ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিএনপির নেতারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাদের কর্মসূচিতে হামলার বিষয়টি তুলে ধরেন। তারা হাইকমিশনারকে জানান, বিএনপি জনসম্পৃক্ততামূলক ইস্যুতে কর্মসূচি পালন করছে। কিন্তু সরকারি দলের নেতাকর্মীরা এসব কর্মসূচিতে বিনা উসকানিতে হামলা চালাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও এই হামলায় অংশ নিচ্ছে।
বৈঠকের পরে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশন এক ফেসবুক বার্তায় সাম্প্রতিক সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে।
এতে বলা হয়, ‘বিএনপি নেতাদের সাথে বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাজ্য রাজনৈতিক দলগুলো ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সাম্প্রতিক সহিংসতায় বিশেষ করে ভোলা ও নারায়ণগঞ্জে বিএনপি কর্মীদের হত্যায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে সংযত থাকার এবং সহিংসতার বদলে সংলাপকে বেছে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি জানায়, গত ২২ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, নরসিংদী, ঢাকা, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, যশোর, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইল, খুলনা, বাগেরহাট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, জামালপুর ও ময়মনসিংহে দলীয় কর্মসূচি পালনের সময়ে ক্ষমতাসীন দল ও পুলিশি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ পর্যন্ত সারা দেশে নিহত হয়েছে তিনজন, আহত হয়েছে দুই হাজারের অধিক নেতাকর্মী। গ্রেফতারের সংখ্যা ২০০ জনের অধিক। সারা দেশে নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে প্রায় চার হাজার ৮১ জনের অধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে এবং অজ্ঞাত আসামি প্রায় ২০ হাজার। ১৪৪ ধারা জারি করা হঢেছে ২০-২৫টি স্থানে ও বাড়িঘর, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে ৫০টি স্থানে।