ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, প্রধান বিচারপতির কাছে খোলা চিঠিটি লিখেছেন উত্তর প্রদেশের বান্দা জেলার নারী সিভিল জজ। তিনি চিঠিতে অভিযোগ করে বলেছেন, বারাবাঙ্কিতে কর্মরত থাকার সময় তিনি তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকতার মাধ্যমে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। এ বিষয়ে বিচার চেয়েও তিনি পাননি। এ জন্য তিনি এখন মৃত্যুর অনুমতি চান।
নারী বিচাকের লেখা চিঠিটি ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দুই পৃষ্ঠার চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘আমার আর বাঁচার ইচ্ছা নেই। গত দেড় বছরে একটি মৃতদেহ নিয়ে আমি ঘুরে বেড়াচ্ছি। এভাবে প্রাণহীন শরীর নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর কোনও মানে হয় না। দয়া করে আমাকে একটি মর্যাদাপূর্ণ উপায়ে মরার অনুমতি দিন।’
ভারতীয় আরেক সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, প্রায় দেড় বছর আগে এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মাধ্যমে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওই নারী বিচারকের। তাঁর দাবি, একদিন রাতের বেলা ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাঁকে দেখা করতে বলেছিলেন। সেখানে তিনি যৌন হয়রানির শিকার হন। তারপর বিচার চেয়ে দীর্ঘ দিন তিনি বহু জায়গায় ঘুরেছেন। এখন তিনি বিচার পাওয়ার আশাও করেন না। তাই জীবন শেষ করার অনুমতি চেয়ে প্রধান বিচারকের কাছে চিঠি লিখেছেন।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের সেক্রেটারি জেনারেল অতুল এম কুর্হেকার বলেন, প্রধান বিচারপতির নির্দেশে বৃহস্পতিবার বিকেলেই এলাহাবাদ হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে চিঠি লিখে ওই নারীর অভিযোগের তদন্তের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে।
অতুল এম কুর্হেকার আরও জানান, প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যে বিষয়টি আমলে নিয়েছে। এলাহাবাদ হাইকোর্টের কাছ থেকে তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে মন্তব্য জানার জন্য ওই নারী বিচারকের সঙ্গে বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি বলে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
গত ৪ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টে মৃত্যুর অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন ওই নারী বিচারক। এরপর গত বুধবার বিচারপতি হৃষিকেশ রায়ের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চের সামনে বিষয়টি নিয়ে শুনানি হয়। শুনানি শেষে বিচারকদের বেঞ্চ জানায়, আপাতত কোনও বিচারিক আদেশ জারি করার দরকার নেই। যেহেতু এলাহাবাদ হাইকোর্টে অভিযোগটি ইতিমধ্যেই নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, সেহেতু আমাদের অপেক্ষা করা উচিত।