ফিলিস্তিনের ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের সামরিক শাখা ‘আল-কুদস ব্রিগেডসের’ যোদ্ধারা গতরাতে গাজার খুব কাছেই ইসরাইলের ভেতরে ইহুদি বসতি লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালিয়েছে। ইসরাইলি সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, গাজার কাছে ইহুদি বসতিতে রকেট আঘাত হানলে সাইরেন বাজার শব্দ শোনা গেছে।
‘আল-কুদস ব্রিগেডসের’ প্রতিরোধ যোদ্ধারা এমন সময় ইহুদি বসতি লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালিয়েছে যখন সম্প্রতি খোদ ইসরাইলি সামরিক ও গোয়েন্দা তথ্যে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে যেসব অস্ত্র ব্যবহার করছে তার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ ইসরাইলের এবং ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা এসব অস্ত্র যুদ্ধের গণিমত হিসাবে পেয়েছিল। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দাবি অনুযায়ী, তাদের অনেক অস্ত্র হামাসের ভূগর্ভস্থ টানেল দিয়ে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কাছে পৌঁছেছে।
যুদ্ধ পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, ইসরাইলিরা শুধু যে হামাসের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও কৌশল ধরতে ব্যর্থ হয়েছে তাই নয় একই সাথে ফিলিস্তিনিদের অস্ত্রের সক্ষমতা নিয়েও তারা ভুলের মধ্যে রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দখলদার ইসরাইলি বাহিনী গত ১৭ বছর ধরে গাজা অবরোধের জন্য যেসব অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করেছিল এখন সেইসব অস্ত্রই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়করণ বিভাগের সাবেক ডেপুটি মাইকেল করদশ বলেছেন, অবিস্ফোরিত অস্ত্রই হামাসের অস্ত্রের প্রধান উৎস। তারা ইসরায়েলি বোমা নিয়ে যায় এবং এগুলো তারা বিস্ফোরক ও ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে কাজে লাগায়।
ইসরাইলের অস্ত্র দিয়েই ইসরাইলকে ঘায়েল করছে হামাস- সম্প্রতি এমনই এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকা। এতে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বাহিনীর পরিত্যক্ত ও অকেজো অস্ত্র সংগ্রহ করে ইসরাইলের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করছে গাজা-ভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। পত্রিকাটিতে বলা হয়েছে, গাজায় যেসব গোলা বর্ষণ করছে ইসরাইল, সেগুলোর বেশ কিছু সংখ্যক বিস্ফোরিত হয় না। ইসরাইলিররা এ বিষয়টি এত দিন বুঝতে পারেনি।
পাশ্চাত্যের এক সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, হামাসের বেশিরভাগ বিস্ফোরক আসছে অবিস্ফোরিত ইসরাইলি গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র থেকে। ইসরাইলের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেন, গাজায় নিক্ষেপ করা ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর অবিস্ফোরিত গোলার সংখ্যা প্রায় ১৫ ভাগ। হামাসের অস্ত্র সংগ্রহের আরেকটি উৎস হলো ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর ঘাঁটিগুলোতে চুরি। সিনাই মরুভূমির মাধ্যমে এসব অস্ত্র পশ্চিম তীর বা গাজায় চলে যাচ্ছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, হামাস প্রমাণ করেছে যে তারা দুই হাজার পাউন্ড ওজনের গোলা বানাতে পারে। তারা অবিস্ফোরিত বারুদ থেকেই এসব গোলা বানিয়ে থাকে। #
পার্সটুডে