সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম শিপন হত্যার ঘটনায় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার আবদুল্লাহ আল মামুনের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ফারুক মোল্লা। ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলামের আদালতে এ রিমান্ড শুনানিতে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ উপকমিশনার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মঙ্গলবার আবদুল্লাহ আল মামুনকে তাঁর বাসা থেকে গ্রেপ্তারের কথা জানান। তবে চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল মামুনের সহকর্মীরা জানান, এর আগেরদিন সোমবার রাতে সাদা পোশাকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাসা থেকে রেজিস্ট্রার আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে আদারব থানা–পুলিশ।
আনিসুল করিম হত্যায় চারজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁরা আদালতকে বলেছেন, আনিসুল করিমকে যখন মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়, তখন আবদুল্লাহ আল মামুন তাঁকে ভর্তি না করে ঢাকার আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালের ম্যানেজারকে ফোনে বলেন, ‘রোগী পাঠালাম’। সেখানে আনিসুল করিমকে নেওয়া হয়। আনিসুল করিম ওয়াশরুমে যেতে চাইলে ১০ থেকে ১২ জন মিলে তাঁকে মারধর করে হত্যা করেন।
পুলিশের এই কর্মকতা বলেন, আবদুল্লাহ আল মামুন সরকারি প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক হলেও আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতাল, মাইন্ড রয়েল, টাঙ্গাইলের ঢাকা ক্লিনিকে প্র্যাকটিস করতেন। মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ধনাঢ্য রোগী এলে তিনি চুক্তিবদ্ধ হাসপাতালে পাঠাতেন। সেখান থেকে ৩০ শতাংশ কমিশন পেতেন।
এ মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ১৫ জন। তাঁদের মধ্যে গ্রেপ্তার ১২ জন। একজন বিদেশে পালিয়ে গেছেন আর দুজন পলাতক। পলাতক ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
আনিসুল করিম শিপন ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। সর্বশেষ তিনি বরিশাল মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি এক সন্তানের জনক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।