ঢাকামঙ্গলবার , ৪ মে ২০২১
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আনভী‌র’‌কে বাঁচা‌তে মু‌নিয়ার চ‌রিত্র ব্যবচ্ছেদ, বসুন্ধরার সা‌থে কো‌টি টাকার বা‌ণি‌জ্যে সংবাদ মাধ্যম।

নিজস্ব প্রতিবেদক
মে ৪, ২০২১ ৭:২৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বহুল আলো‌চিত মােসাররাত জাহান মুনিয়ার মৃত্যু নি‌য়ে বসুন্ধরা গ্রু‌পের টাকার হো‌লি খেলা শুরু হ‌য়ে গে‌ছে। আর সে খেলার খে‌লোয়ার হ‌লো গনমাধ্যম। নি‌জের কর্ম কা‌হিনী গোপন কর‌তে খেলার আম্পেয়া‌রের ভূ‌মিকায় মামলার আসামী ও বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সােবহান আনভীর। নি‌জের অর্থ জো‌রে নিয়ন্ত্রন কর‌ছেন বল‌তে গে‌লে দে‌শের পু‌রো গনমাধ্যম‌কে। অ‌র্থের কা‌ছে বি‌ক্রি হ‌য়ে যাওয়া গনমাধ্যম এখন মু‌নিয়া‌কে অপরা‌ধের আস‌নে ব‌সি‌য়ে আনভীর’‌কে ফে‌রেস্তা বানা‌তে ব্যাস্ত।

গুলশানের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট থেকে মােসাররাত জাহান মুনিয়ার ডেডবডি উদ্ধারের ঘটনায় বােন নুসরাত জাহানের দায়েরকৃত মামলায় প্ররােচনার দায়ে অভিযুক্ত করা হয় বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সােবহান আনভীরকে। এই ঘটনায় সার্বিকভাবে বাংলাদেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যমের মুখােশ উন্মােচিত হয়ে যায়।

ঘটনার পরপর ট্রান্সকম গ্রুপের মালিকানাধীন ‘ডেইলি স্টার পত্রিকা’য় প্রশ্নবিদ্ধ কাভারেজ লক্ষ্য করা গেলেও পরে পত্রিকাটি তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে এবং তাদের ইউটিউব চ্যানেলে সার্বিক মিডিয়া কভারেজ নিয়ে একটি পর্যালােচনা প্রচার করে।

এ ঘটনায় গত ২৯ এপ্রিল থেকে আজ পর্যন্ত ক্রমাগত কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে মুনিয়াকে নিয়ে নেতিবাচক তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, মূলতঃ একটি প্রতিবেদনই শিরােনাম পরিবর্তন করে এবং কিছু সম্পাদনা করে একাধিক সংবাদমাধ্যমে একযােগে প্রকাশিত হয়েছে; যাকে ‘সিন্ডিকেটেড রিপাের্টিং’ হিসেবে অভিহিত করা যায়।

একইসাথে সাংবাদিক ও ব্লগার আরিফ জেবতিকও তার নিজস্ব সূত্রের বরাতে জানিয়েছেন, বসুন্ধরা গ্রুপ ৫০ কোটি টাকা ঢেলেছে ফরমায়েশি প্রতিবেদন করার পেছনে। আর যেসব মিডিয়া বসুন্ধরার বিপক্ষে লিখবে, সেসব প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরার বিজ্ঞাপন পাবে না বলে ঘােষণা দিয়েছে।

মু‌নিয়ার মৃত্যু ও মামলা পরব‌র্তি সম‌য়ে বসুন্ধরা এম‌ডি আনভী‌রের প‌ক্ষে কথা বলা শীর্ষ ক‌য়েক‌টি সংবাদমাধ্য‌মের অপসাংবা‌দিকতার নমুনা-

রুপায়ন গ্রু‌পের মা‌লিকানাধী ‘‌দৈ‌নিক দেশরূপান্তর’: ‘”বো‌নের লো‌ভে লোভী মু‌নিয়া”,
আ‌মিন মোহাম্মদ গ্রু‌পের মা‌লিকানাধীন ‘দৈনিক সম‌য়ের আ‌লো’: ‌”পোশা‌কের ম‌তো প্রে‌মিক বদ‌লা‌তেন মু‌নিয়া”,
আহসা‌নিয়া মিশনারীর মা‌লিকানাধীন ‘দৈ‌নিক আলো‌কিত বাংলা‌দেশ’: “মু‌নিয়া সম্প‌র্কে বে‌রি‌য়ে আস‌ছে চাঞ্চল্যকর তথ্য”,
না‌সিমা খান ম‌ন্টি সম্পা‌দিত ‘আমা‌দের সম‌য় ডটকম’, “‌‌পোষা‌কের ম‌তো প্রে‌মিক পাল্টা‌তে মোসারাত জাহান মুনিয়া”,
‘পূর্বপ‌শ্চিম বি‌ডি’ তে শি‌রোনাম: “মু‌নিয়ার একের পর এক পুরুষ শিকার ছি‌লো পেশা”,
‌দেশবন্ধু গ্রু‌পের মা‌লিকানাধীন ‘দৈ‌নিক আজকা‌লের খবর’: ‘”পোশা‌কের ম‌তোই প্রে‌মিক বদলা‌তেন মু‌নিয়া”,
‘ঢাকাটাইম টোয়ে‌ন্টি‌ফোর ডটকম’ এর শি‌রোনা‌মে: “অপ্রাপ্ত বয়‌সে বি‌য়ে ক‌রে‌ছি‌লেন মু‌নিয়া? এসব নি‌য়ে মামলা-‌মোকদ্দমা ক‌রে‌ছিলেন তার বড় বোন?”,
কাজী এর‌তেজা সম্পা‌দিত ‘দৈ‌নিক ভো‌রের পাতা’: “ক্লাশ নাই‌নে দুই বাচ্চার বাবা‌কে বি‌য়ে ক‌রে‌ছিল মু‌নিয়া”,
অনলাই‌নের আরেক‌টি অনলাইন পোর্টাল ‘বাংলা প্র‌তি‌দিন’: “একেরপর এক প্রে‌মিক বদ‌লে অ‌ভিজাত ব‌নে‌ছে মু‌নিয়া। বোন-ভ‌গ্নিপ‌তি‌কে বা‌নি‌য়ে‌ছে ধনাঢ্য”,
এসব অনলাইন প‌ত্রিকাগু‌লোর শি‌রোনা‌মে এক‌টি বিষয়ই স্পষ্ঠ তা হ‌লো মু‌নিয়া‌কে ‘খারাপ মে‌য়ে’ প্রমান ক‌রে আন‌ভি‌রের ‘অপরাধ আড়াল’ করা। আরও অ‌নেক অনলাইন পোর্টা‌লে মু‌নিয়া‌কে অপরা‌ধী ক‌রে একই ধর‌নের খবর প্রকা‌শিত হ‌য়ে‌ছে।

এখানে সংবাদমাধ্যম হিসেবে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিচিত কয়েকটির প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছে। এসব প্রতিবেদন মূলত একটি নির্দিষ্ট প্রতিবেদনেরই আলাদা আলাদা রূপ। শিরােনাম ভিন্ন ভিন্ন, তবে বিষয়বস্তু একই। এমনকি অনেকগুলাে পরস্পর মিলে যায়, কিছু কিছুতে সামান্য এদিক ওদিক করে সম্পাদনা করা হয়েছে।

এগুলাের মধ্যে সর্বপ্রথম গত ২৯ এপ্রিল ‘বাংলা প্রতিদিন পাের্টাল’এ “একের পর এক প্রেমিক বদলে অভিজাত বনেছে মুনিয়া, বােন-ভগ্নিপতিকে বানিয়েছে ধনাঢ্য” শিরােনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। এর পরদিন দেশ রূপান্তর-এর প্রিন্ট ভার্সনে প্রকাশিত হয় “বােনের লােভে লােভী মুনিয়া” শিরােনামের প্রতিবেদন।

লক্ষ্যণীয় হলাে, ‘বাংলা প্রতিদিনে’র প্রতিবেদনটি ‘গল্প আকারে বর্ণিত হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তথ্য হিসেবে দাবি করা বিষয়গুলাে কোনাে সূত্র উল্লেখ ছাড়াই তুলে ধরা হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও কিছু তথ্যের সূত্র হিসেবে জানা যায়’ ‘অনেকেই মনে করেন’ এসব অস্পষ্ট বরাত দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে ‘দেশ রূপান্তর’-এর প্রতিবেদনটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন” আকারে
উপস্থাপিত হয়েছে। যেমন, “বাড়িতে গিয়ে বা এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে”, “এই প্রতিবেদককে বলেন “মুনিয়ার একাধিক আত্মীয় বলেন, “মুনিয়ার সাবেক প্রেমিক দাবি করে দেশ রূপান্তরকে বলেন” ইত্যাদি শব্দগুচ্ছ থেকে যে কেউ ভাববে দেশ রূপান্তর সরেজমিনে অনুসন্ধান করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, বাংলা প্রতিদিন এর “গল্প” এবং দেশ রূপান্তর-এর “অনুসন্ধানী প্রতিবেদন” এর কিছু কিছু প্যারা অস্বাভাবিকভাবে হুবহু মিলে যায়! যেমন- প্রথমে ‘বাংলা প্রতিদিন’-এর নিচের প্যারাটি পড়ুন“ বাবা মা মৃত্যুর পর এই বােন ভগ্নিপতিই ছিল তার একমাত্র অভিভাবক। কিন্তু দুহাতে অঢেল টাকা কামানাের ধান্ধায়, অর্থ বিত্তের লােভে মুনিয়ার জীবন কোথায় পৌঁছে যাচ্ছে সে খবর নেয়ার কোনাে দরকারই তারা মনে করেননি। বরং ছােট বােনকে যথেচ্ছা চলাচল, যার সঙ্গে খুশি দিন রাত যাপনের অবাধ স্বাধীনতা দিয়ে বােন ভগ্নিপতি হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। মুনিয়ার ফ্ল্যাট থেকে ৫০ লাখ টাকা খােয়া যাওয়ার যে অভিযােগ উত্থাপিত হয়েছে কথিত অডিও রেকর্ডে, এ টাকাও মুনিয়ার হাত ঘুরে তার বােন ভগ্নিপতির ঘরে পৌঁছেছে বলেই মনে করছেন অনেকে।”

এবার পড়ুন ‘দেশ রূপান্তর’-এর প্রতিবেদনের নিচের দুটি প্যারা“মুনিয়ার আত্মীয়রা বলছেন, বাবা-মার মৃত্যুর পর এই বােন-ভগ্নিপতিই ছিলেন মুনিয়ার একমাত্র অভিভাবক। টাকার লােভে তারা মুনিয়ার জীবন কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন সেটা একবার জানারও চেষ্টা করেননি। বরং ছােট বােনকে যথেচ্ছাচার করার, যেখানে-সেখানে থাকার স্বাধীনতা দিয়ে বােন ভগ্নিপতি হাতিয়ে নিয়েছেন মােটা অঙ্কের অর্থ। পুলিশ সূত্রের ধারণা, মুনিয়ার ফ্ল্যাট থেকে ৫০ লাখ টাকা খােয়া যাওয়ার যে অভিযােগ উত্থাপিত হয়েছে, সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অডিও রেকর্ডে, এ টাকাও মুনিয়ার হাত ঘুরে তার বােন-ভগ্নিপতির ঘরে পৌঁছে থাকতে পারে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে বলেও ওই সূত্র জানিয়েছে।”

‘বাংলা প্রতিদিন’-এর প্যারার প্রথমাংশকে “মুনিয়ার আত্মীয়রা বলছেন” হিসেবে প্যারাফ্রেইজিংয়ের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে ‘দেশ রূপান্তর’-এর প্রতিবেদনে। কিন্তু প্যারাফ্রেইজিংয়ের পরও উভয় সংবাদমাধ্যমের লেখার মিলটুকু রয়েই গেছে।

‘বাংলা প্রতিদিন’-এর প্যারার শেষাংশকে হুবহু কপিপেস্ট করা হয়েছে ‘দেশ রূপান্তর’এর প্রতিবেদনে। শুধু ‘বাংলা প্রতিদিন’ যেই বক্তব্যকে “বলেই মনে করছেন অনেকে। এর মতাে অস্পষ্ট সূত্রের বরাতে উল্লেখ করেছে, সেখানে ‘দেশ রূপান্তর’ বক্তব্যের বিশ্বস্ততা বৃদ্ধিতে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করেছে পুলিশ সূত্রের ধারণা।
অর্থাৎ, এক্ষেত্রেও সূত্র স্পষ্ট না হলেও সেটিকে আরও বিশেষায়িত করা হলাে। মনে করছেন অনেকে” এর চেয়ে “পুলিশ সূত্রের ধারণা” বেশি আস্থা জন্মাতে পারে পাঠকের মনে।
‘দেশ রূপান্তর’- এর প্রতিবেদনে তাদের নিজেদের প্রতিবেদক এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে” জেনেছেন বলে নিচের প্যারাটি লেখা হয়েছে”মুনিয়ার স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লার কোতােয়ালি থানার মনােহরপুর এলাকার উজির দীঘির দক্ষিণপাড়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার ওই বাড়িতে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে মুনিয়া নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় কুমিল্লা শহরের ৬নং ওয়ার্ডের শুভপুর এলাকার নিলয় নামে এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে যায়। নিলয় বিবাহিত, দুই সন্তানের জনক। কিন্তু মুনিয়ার বড় বােন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতােয়ালি থানায় নিলয়কে আসামি করে মামলা করেন। ঘটনাটি ২০১৪ সালের। ওই সময় মুনিয়ার মা-বাবা জীবিত ছিলেন।
ওই মামলায় বলা হয়, ‘আমার অ-প্রাপ্ত বয়স্ক বােনকে ফুসলিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে তার সম্ভ্রবসহ জানমালের ভয়াবহ ক্ষতির শঙ্কা করছি। অবিলম্বে নিলয়কে গ্রেপ্তারপূর্বক মুনিয়াকে উদ্ধারকল্পে প্রয়ােজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানাচ্ছি।’
ওই মামলার সাড়ে তিন মাস পরে কুমিল্লার কোতােয়ালি থানা পুলিশ ফেনীতে নিলয়ের এক আত্মীয় বাড়িতে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করে আনে মুনিয়াকে। পরে স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় গ্রাম্য বৈঠকে মােটা অঙ্কের জরিমানা আদায়ের মাধ্যমে নিলয় মুনিয়ার ডিভাের্স ঘটানাে হয় এবং যে যার পরিবারে ফিরে যায়। এরপর নুসরাত ঢাকায় পাঠিয়ে দেন মুনিয়াকে।”

এবার পড়ুন একদিন আগে বাংলা প্রতিদিনের প্রতিবেদনে কি প্রকা‌শিত হ‌য়ে‌ছি‌লো-

“কুমিল্লায় নবম শ্রেণীতে পাঠরত অবস্থাতে মোসারাত জাহান মুনিয়া পাশের গ্রামের নিলয় নামের এক যুবকের গলায় ঝুলে পড়েছিলেন। বিবা‌হিত, দুই সন্তা‌নের জনক নিল‌য়ের হাত ধ‌রে বা‌ড়ি ছে‌ড়ে অজানার উদ্দে‌শ্যে পা‌ড়ি জ‌মি‌য়ে‌ছি‌লেন, শুরু ক‌রে‌ছি‌লেন দাম্পত্য জীবন। কিন্তু মু‌নিয়ার বড় বেন নুসরাত জাহান বা‌দী হ‌য়ে কু‌মিল্লা কোতয়ালী থানায় নিল‌য়ের না‌মে মামলা রুজ ক‌রে। মামলায় বলা হয়, মামলায় বলা হয়, ‘আমার অ-প্রাপ্ত বয়স্ক বােনকে ফুসলিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে তার সম্ভ্রবসহ জানমালের ভয়াবহ ক্ষতির শঙ্কা করছি।’ অবিলম্বে নিলয়কে গ্রেপ্তারপূর্বক মুনিয়াকে উদ্ধারকল্পে প্রয়ােজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানান তি‌নি। দীর্ঘ সা‌রে তিন মাস পর কু‌মিল্লার পু‌লিশ ফে‌ণি‌তে নিল‌য়ের এক আত্মী‌য়ের বাসায় অ‌ভিযান চা‌লি‌য়ে উদ্ধার ক‌রে আনে মু‌নিয়া‌কে। কিন্তু তত‌তি‌নে মু‌নিয়া নিলয় বি‌য়ে শাদী ক‌রে ঘর সংসার করা শুরু ক‌রে দি‌য়ে‌ছি‌লো। পরে স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় গ্রাম্য বৈঠকে মােটা অঙ্কের জরিমানা আদায়ের মাধ্যমে নিলয় মুনিয়ার ডিভাের্স ঘটানাে হয় এবং যে যার প‌রিবা‌রে ফি‌রে যায়।

উপ‌রের অনলাইন প‌ত্রিকার নিউজগু‌লো খেয়াল কর‌লে দেখা যা‌বে যে, এক‌টি প‌ত্রিকার প্র‌তি‌বেদক নি‌জে এলাকাবাসীর সা‌থে কথা ব‌লে ‘‌নি‌জের ভাষায়’ সে প্র‌তি‌বেদন লি‌খে‌ছেন। তার লিখার সা‌থে অন্য সংবাদ মাধ্য‌মের প্র‌তি‌বেদ‌নের বর্ণনার ধারাবা‌হিকতা এবং শব্দগুচ্ছ ও বাক্য যেভা‌বে মি‌লে যা‌চ্ছে তা বিষ্ময়কর।

তথা‌পি এ সংবাদ নি‌য়ে আবার অ‌নেক প‌ত্রিকায় এক‌টি ভুল তথ্যও প‌রি‌বেশন করা হ‌য়ে‌ছে। প্র‌তি‌বেদন‌টির এক জায়গায় বলা হ‌য়ে‌ছে “‌নিল‌য়ের স‌ঙ্গে প্রেম বি‌য়ে ভে‌ঙ্গে যাবার পর ২ বছর বড় বো‌নের কা‌ছে থে‌কে পড়া‌শোনা চালা‌লেও এসএস‌সি পরীক্ষা দি‌য়েই মু‌নিয়া পা‌ড়ি জ‌মি‌য়ে‌ছি‌লেন ঢাকার উদ্দে‌শ্যে।”
অর্থাৎ, এখা‌নে দাবী করা হয়ে‌ছে মু‌নিয়া এসএস‌সি পরীক্ষা দি‌য়েই ঢাকায় চ‌লে আসেন। কিন্তু, ইতিম‌ধ্যে মূলধারার সংবাদমাধ্যম গু‌লো‌তে মু‌নিয়ার পড়া‌শোনা সংক্রান্ত যে তথ্য প‌রি‌বেশন করা‌ হ‌য়ে‌ছে, মু‌নিয়া ঢাকার কোন স্কুল থে‌কে এসএস‌সি পরীক্ষা দি‌য়ে‌ছি‌লো। ২৭শে এপ্রিল বাংলা ট্রি‌বিউন’র প্রকা‌শিত খব‌রে তেমনটা বলা হ‌য়ে‌ছে। তাদের তথ্যম‌তে রাজধানীর মিরপুর ম‌নিপুরী স্কুল এন্ড ক‌লেজ থে‌কে এসএস‌সি পাশ ক‌রে। এরকম আরও র‌য়ে‌ছে বাংলা ট্রি‌বিউ‌নের আরও অ‌নেক রি‌পো‌র্টে।

‌মু‌নিয়ার মৃত্যুর বিষয়‌টি এখনও তদন্তাধীন, কিন্ত অ‌র্থের কা‌ছে হে‌রে যাওয়া অপসংবা‌দ প‌রি‌বেশ‌নের বেড়া জা‌লে এক‌পে‌শে রহস্যজনক খবর প্রচা‌রে সংবাদমাধ্য‌মের প্র‌তি মানু‌ষের আস্থা হা‌রি‌য়ে যা‌বে ঘটনার প্রেক্ষাপ‌টে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।