ঢাকাসোমবার , ৩ জুন ২০২৪
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

এবার আসছে ৮ লাখ হাজার কোটি টাকার বাজেট।

অর্থনীতি ডেস্ক
জুন ৩, ২০২৪ ৭:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে এখনো শৃঙ্খলা ফেরেনি। ক্রেতারা অবশ্য খানিকটা স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছেন সবজির দামে। এর বাইরে মাছ, মাংস, মসলা কিংবা চাল-ডাল কোনো পণ্যের দামেই স্বস্তি মিলছে না। নতুন করে ডলারের দাম বৃদ্ধিও প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে নিত্যপণ্যের দামে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের সবশেষ হিসাব বলছে, সার্বিক মূল্যস্ফীতি এখন ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে জীবনযাত্রার খরচ বেড়েছে প্রায় দশ শতাংশ। যদিও ২০২৩ সালের জুনে ঘোষিত চলতি অর্থবছরের বাজেটে তখনকার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছিলেন, মূল্যস্ফীতি থাকবে ৬ শতাংশের ঘরে। তবে নানা বাস্তবতায় কথা রাখতে পারেননি সাবেক অর্থমন্ত্রী।

বছরের ব্যবধানে পাল্টেছে অনেক কিছুই। নতুন করে অর্থমন্ত্রী হয়েছেন আবুল হাসান মাহমুদ আলী। যার প্রথম বাজেট ঘোষণা চলতি সপ্তাহের শেষ দিন অর্থাৎ ৬ জুন। বাজেটের নানা জটিল হিসাব মেলানোর মধ্যেও যিনি ঠিকই টের পেয়েছেন সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা। তাই তো গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখাই হবে আগামী বাজেটের মূল লক্ষ্য।
তিনি বলেন, ‘অর্থনীতিকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা হবে এই বাজেটের অগ্রাধিকার। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে নিত্যপণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা।’ অর্থাৎ আসন্ন বাজেটে থাকছে মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার নানাবিধ চেষ্টা।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার হতে যাচ্ছে ৭ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী এক বছরে সরকার ব্যয় বাড়াতে চায় আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা।
ব্যয় বাড়ানোর আকাঙ্ক্ষা থাকলেও আয়ের সংস্থান নিয়ে এবারও চাপে থাকবে সরকার। বড় বাজেট, তাই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাও থাকছে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ কোটি টাকা।
এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরের মাধ্যমে সরকারের আদায়ের লক্ষ্য থাকবে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। বাকিটা মিলবে রাজস্ব বোর্ডবহির্ভূত খাত থেকে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় হলেও বড় অঙ্কের ঘাটতি থাকবে আসছে বাজেটে। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ২ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি পূরণে সরকার ঋণ নিতে চায় অভ্যন্তরীণ ব্যাংক ও বৈদিশিক খাত থেকে। তবে এবারই প্রথম সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোনো ঋণ নেবে না সরকার।

সম্প্রতি গণভবনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তুতি-বিষয়ক এক বৈঠকে চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরের বাজেটকেও ব্যয় সংকোচনমুখী করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী বাজেটেও যাতে বিলাসী পণ্য আমদানি না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে বলেছেন তিনি।
জানা গেছে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে বাজেটে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।

অর্থনীতিবিদরাও মনে করছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই তা হবে বাজেটের সবচেয়ে বড় অর্জন।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই সম্ভব। তবে তা শুধু মুখে বললে হবে না, এ জন্য পলিসি পরিবর্তন করতে হবে।’ অবশ্য তিনি সাধুবাদ জানান ডলারের এক্সচেঞ্জ রেট বাজারভিত্তিক করে দেওয়াকে। বলেন, এতে অল্প সময়ের জন্য ডলারের দাম বাড়লেও দীর্ঘ মেয়াদে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে।
তবে আরেক অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ মনে করেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে বেড়ে যাওয়া সুদহার কাজে আসছে না। ‘পৃথিবীর অনেক দেশে এটা কাজে আসলেও বাংলাদেশের জন্য কাজ হচ্ছে না, এখানে বাজার নিয়ন্ত্রণ হয় দুষ্টচক্র দ্বারা, তাদের সবার আগে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে’ যোগ করেন ড. খলীকুজ্জমান।

আসছে বাজেটের প্রতিপাদ্য হতে যাচ্ছে ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার’। নানা অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও অর্থমন্ত্রী স্বপ্ন দেখছেন স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের।
আর সে জন্য তিনি দেশের অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় করতে চান ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপিতে বরাদ্দ থাকছে এ অর্থ। যদিও চলতি অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে ব্যয় হয়নি বরাদ্দ দেওয়া এডিপির অর্ধেকটাও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভালো প্রকল্প বাছাই ও ব্যয় করার ক্ষেত্রে আরও দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে সরকারকে। উন্নয়ন প্রকল্প মানেই দেশের জিডিপিতে সরাসরি ভূমিকা রাখা, তাই এ জায়গায় বরাদ্দ কমানো উচিত নয় বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘শুধু বরাদ্দ নয় এ জায়গায় বাস্তবায়নে নানা জটিলতা রয়েছে, সময়মতো অর্থছাড় না হওয়া কিংবা যোগসাজশে প্রকল্প নেওয়ার মতো বিষয় রয়েছে। এগুলো থেকে বের হতে হবে। তাহলে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তা কমে আসবে।’

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রতিবছরের মতো এবারও রাজস্ব আদায় হবে বাজেটের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের জায়গা। ‘আমাদের রাজস্ব আদায়ে করের হার নেপাল কিংবা পাকিস্তানের চেয়েও কম, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই’ অভিমত দিয়ে ড. খলীকুজ্জমান বলেন, রাজস্ব বাড়াতে যে পরিমাণ সংস্কার প্রয়োজন তা এখনো হয়নি। বাজেট বাস্তবায়নে রাজস্ব সংস্কারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন তিনি। আরেক অর্থনীতিবিদ ড. মনসুর মনে করেন, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হতে পারে ৩ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা, যা এবারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা কম।’ এ অবস্থান থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কীভাবে সম্ভব আমার জানা নেই, তবে বাড়তি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকা মন্দ নয়’ যোগ করেন তিনি।

আগামী বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য কমিয়ে আনবে সরকার। চলতি অর্থবছরের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রবৃদ্ধির চেয়ে বেশি নজর দেওয়া উচিত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।