কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কয়া মহাবিদ্যালয়ে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ যুবলীগ নেতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিছুর রহমান, সবুজ হোসেন ও হৃদয় আহম্মেদ।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, রাত থেকে অভিযান পরিচালনা করে কুমারখালীর বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে মোট চারজন জড়িত রয়েছে বলে গ্রেফতারকৃতরা স্বীকার করেছেন। অপরজনের নাম বাচ্চু। সে এখনও পলাতক রয়েছে। অধিকতর তদন্ত চলছে। এর পেছনে যারা জড়িত আছে তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
ঘটনার পর গেল রাতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছে কয়া মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ। এতে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবর রহমান জানিয়েছেন, অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অন্যদেরও দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।
উল্লেখ্য যে, গত ১৭ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় উপজেলার কয়া মহাবিদ্যালয়ে স্থাপিত ভাস্কর্যটির নাক ও ডান গালের কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হয়। ১৮ ডিসেম্বর, শুক্রবার সকালে বিষয়টি নজরে আসে।
জানা যায়, মাত্র ৩৬ বছর বয়সে ১৯১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ইংরেজ পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে নিহত হন বিপ্লবী বাঘা যতীন। কয়া গ্রামে বাঘা যতীনের বাস্তুভিটায় কয়া মহাবিদ্যালয়ে কয়েক বছর আগে স্থাপন করা হয় তার আবক্ষ ভাস্কর্যটি।
এর আগে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঢাকার ধোলাইড়পাড়ে বঙ্গবন্ধুর একটি বড় আকৃতির ভাস্কর্য স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সরকার। কিন্তু এর বিরোধিতা শুরু করেন কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক বিভিন্ন সংগঠনের জোট হেফাজতে ইসলামের নেতারা। এরপর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন, লেখক-অধ্যাপক, শিল্পী-সাহিত্যিকরা।