চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানা পুলিশে হেফাজতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপপরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
তবে পরিবারের দাবি, পুলিশে হেফাজতে নিয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে থানা থেকে অসুস্থ অবস্থায় বেসরকারি হাসপাতাল পার্কভিউ নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ দাবি করেন, দুদকের সাবেক কর্মকর্তা একটি মামলায় গ্রেপ্তার করে আনা হলে তিনি থানায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন।
পরে তার পরিবারের লোকজনকে ডেকে এনে তাৎক্ষনিক পার্কভিউ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে তার মুত্যু হয়েছে।
নিহতের পরিবার জানায়, গতকাল ১১টার দিকে মামলা রয়েছে বলে চান্দগাঁও থানার দুইজন সহকারী উপপরিদর্শক গিয়ে সৈয়দ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহকে থানায় নিয়ে যান।
তার সাথে ওনার এক ভাইও থানায় যান। উনি হার্টের পেশেন্ট, ওনার ইনহেলার আর মেডিসিন লাগে সবসময়।
থানায় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মূল ফটক বন্ধ করে দেয় পুলিশ। ইনহেলার ও মেডিসিনও ওনার কাছে পৌঁছাতে দেয়নি।
পরে ১২টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেছে পুলিশ।’
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল রাতে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সৈয়দ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ নামে সাবেক সরকারি কর্মকর্তা থানায় আনা হয়।
পরে ওনি যেহেতু সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ওনাকে আমার রুমে বসানো হয়।
আমার রুমে বসে থাকা অবস্থায় তিনি ইনহেলার ও মেডিসিনও নেন। এগুলো তিনি সাথে করে এনেছেন।
পরে একটু বেশি খারাপ লাগলে ওনার পরিবারকে খবর দিয়ে থানায় ডেকে আনা হলে তাৎক্ষনিক পার্কভিউ হাসপাতালে নিয়ে যান পুলিশ।
সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে শহিদুল্লাহ’র শ্যালক কায়ছার বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে চকবাজার থেকে বাসায় ফেরার পথে চেয়ারম্যানঘাটা এলাকায় এএসআই ইউসুফ আলী ও সোহেল সিভিল ড্রেসে এসে শহিদ ভাইকে কলার ধরে টানাহেঁছড়া করেন।
এসময় তিনি সম্মানিত লোক পরিচয় দিয়ে জানান, আমাকে খবর পাঠালেই থানায় যেতাম।
পরে পুলিশ সদস্যরা কোনো ধরণের কথা না শুনে তাকে নিয়ে যান।
এর আগে এক ব্যক্তি শহিদ ভাইকে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন বলে খবর দেন আমাকে।
আমি দ্রুত সেখানে গেলে শহিদ ভাই বলেন, আমি কায়ছারকে দেখিনি।
কারণ সেই মামলায় আমার নামেও ওয়ারেন্ট রয়েছে। তার কথা শুনে আমিও সতর্ক অবস্থানে চলে গেলাম।
থানায় নিয়ে যাওয়ার আধা ঘণ্টার মধ্যে তিনি মুমূর্ষু হয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে কি করেছে জানি না।
তবে পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি সুস্থই ছিলেন।
কায়ছার বলেন, রনি আক্তার তানিয়া নামে অজ্ঞাত এক নারীর মাধ্যমে কথিত যুবলীগ নেতা জসিম আমিসহ আমার দুলাভাই শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে হুমকি-ধামকি ও মারধরের মিথ্যা মামলা করান।
সেই মামলায় গতকাল ওয়ারেন্টও জারি হয়।
আজ (বুধবার) সকালে চট্টগ্রাম ৬ষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরিফুল ইসলামের আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসি।
এই কথিত যুবলীগ নেতা আমার দুলাভাইয়ের চাকরি জীবনের শেষ সম্বলটুকু দখলে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দাবি করে আসছিল।
এনিয়ে যুবলীগের এই কথিত নেতা জসিমসহ তার চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আমাদের করা চাঁদাবাজিসহ দুটি মামলা রয়েছে। সূত্রঃ চট্টগ্রাম প্রতিদিন।
