দীর্ঘদিনের রাষ্ট্রায়াত্ত পাটকল কারখানা খুলে দেওয়া ও শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ সহ ১৪ দফা দাবিতে খুলনায় শ্রমিকদের পূর্বঘোষিত কফিন মিছিল পুলিশি বাধায় বন্ধ হয়ে গেছে। মিছিলটির আয়োজন করেছিল পাটকল রক্ষা শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য পরিষদ নামের একটি সংগঠন।
আজ রোববার বিকেলে পাটকল রক্ষা শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য পরিষদের এ কফিন মিছিল হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু দুপুরেই পুলিশ আয়োজক সংগঠনের ৩ জনকে আটক করে।
কেন তাদের আটক করা হয়েছে জানতে চাইলে পুলিশ জানায়, “ওই মিছিল করার জন্য খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। ওই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।”
আটক তিনজন হলেন~
পাটকল রক্ষা শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক রুহুল আমিন,
বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিফ অনিক ও
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) আহ্বায়ক সুজয় বিশ্বাস।
তাঁরা কফিন মিছিল আয়োজনের জন্য ক্রিসেন্ট জুট মিলের সামনে শ্রমিকদের জড়ো করছিলেন।
কিন্তু খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অনুমতি ছিলো এমন অভিযোগের বিপরীতে আয়োজক সংগঠনের কর্মী নিয়াজ মুর্শিদ বলেন, ২ অক্টোবর খালিশপুরের ক্রিসেন্ট জুট মিল এলাকায় শ্রমিক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশ থেকেই ৪ অক্টোবর কফিন মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। পরদিন মিছিলের জন্য খুলনা মহানগর পুলিশ সদর দপ্তরে অবহিতকরণ চিঠি দেওয়া হয়। সব আয়োজনই ঠিক ছিল। কিন্তু পুলিশের তৎপর তা ও বাধার কারণে তা বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলের সামনে সকাল থেকেই ওই এলাকায় জড়ো হতে থাকেন খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। দলের কয়েক শ নেতা–কর্মী দফায় দফায় শিল্পাঞ্চল এলাকায় বিআইডিসি সড়কে মহড়া দেন।
জানতে চাইলে খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সানাউল্লাহ নান্নু দাবি করেছেন, “শ্রমিকদের সব পাওনা পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তাঁদের ফরম পূরণের কাজও চলছে। শিগগিরই তাঁরা টাকা পাবেন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে এলাকায় আনন্দ মিছিল করেছেন তাঁরা।”
প্রত্যক্ষদর্শী ও আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার সকালে খালিশপুর শিল্পাঞ্চল এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে নতুন রাস্তা মোড় এলাকার বিআইডিসি সড়কের প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এ ছাড়া প্রতিটি মিলগেটে বিপুলসংখ্যক শিল্প পুলিশ ও সাধারণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়। খালিশপুর এলাকায় দুজনকে একসঙ্গে দেখলেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
খালিশপুর এলাকাটি কেএমপির উত্তর জোনের আওতায়। জানতে চাইলে ওই জোনের উপকমিশনার মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন প্রতিবেদককে বলেন, “আটক ওই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আগে কোনো মামলা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া শ্রমিকদের মিছিলের জন্য কোন রকম অনুমতি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে কোন অনুমতি দেয়া হয়নি। মিল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”