ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ চায় ১৪টি দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২ ৭:২৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ শুধু ব্রিটেনের রানিই ছিলেন না, তিনি ছিলেন আরো ১৪টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান – যে দেশগুলোর সবই একসময় ছিল ব্রিটেনের উপনিবেশ। কিন্তু নতুন রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজত্বকালের বাস্তবতা হয়তো হবে অন্য রকম।

ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের সাথে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক মোটেও সহজ-সরল নয়, বরং বেশ জটিল।

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যু দেশটিতে রিপাবলিক বা প্রজাতন্ত্র ঘোষণার বিতর্ককে আবারো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে।

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল – একজন কট্টর রিপাবলিকান হলেও – টিভিতে প্রয়াত রানির স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তার চোখে জল আসে। তবে টার্নবুল স্পষ্ট করেই বলেছেন, অস্ট্রেলিয়াকে প্রজাতন্ত্রে পরিণত করার ওপর গণভোট হয়তো শিগগিরই হবে না – কিন্তু একদিন এটা হতেই হবে, এটা অবধারিত।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানিজ বলেছেন, এখন রানির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের সময়, কিন্তু কোন এক সময় এ গণভোট হবে।

এ বছরের শুরুর দিকে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ৭০ বছরপূর্তির এক সপ্তাহ আগে অস্ট্রেলিয়ায় একজন প্রজাতন্ত্র বিষয়ক মন্ত্রী নিয়োগ করা হয় – যার দায়িত্ব অস্ট্রেলিয়াকে একটি প্রজাতন্ত্রে পরিণত করা এবং একজন অস্ট্রেলিয়ানকে রাষ্ট্রপ্রধান করা সংক্রান্ত বিষয়গুলো দেখা।

মনে করা হয়, ২০২৪ বা ২০২৫ সালে অ্যালবানিজ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হলে এ নিয়ে একটি গণভোট হতে পারে।

অস্ট্রেলিয়াকে প্রজাতন্ত্র করা হবে কিনা- এ প্রশ্নে এর আগে ১৯৯৯ সালে একটি গণভোট হয়েছিল। কিন্তু তাতে বেশির ভাগ অস্ট্রেলিয়ানই রানিকে রাষ্ট্রপ্রধান রাখার পক্ষে মত দিয়েছিলেন।

কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন একটা গুরুতর পার্থক্য ঘটে গেছে। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথই ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাথে রাজতন্ত্রের সম্পর্কের সবচেয়ে বড় যোগসূত্র। অনেকে বলেছেন, রানি ছিলেন তাদের পরিবারের সদস্যের মত।

সেই রানিই এখন প্রয়াত । রাজা তৃতীয় চার্লসের জন্য অনেক অস্ট্রেলিয়ানেরই শুভেচ্ছার অভাব নেই, কিন্তু তাদের সেন্টিমেন্ট ঠিক একই রকম নয় – বলছেন বিবিসির সংবাদদাতা শায়মা খলিল।

অস্ট্রেলিয়া্নরা রানিকে যেমন ভালোবাসতেন, তেমনি তাদের স্বাধীন জাতীয় চেতনাও খুব জোরালো। টার্নবুল বলছেন, রানিকে আমরা ভালোবাসি কিন্তু আমরা একটা স্বাধীন দেশ এবং আমাদের রাষ্ট্রপ্রধান আমাদেরই একজনের হওয়া উচিত।

নতুন বাস্তবতা

টার্নবুল একা নন। পৃথিবীর অনেকগুলো দেশ – যারা একসময় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অংশ ছিল – তাদের জনগণের একটা ক্রমবর্ধমান অংশের মধ্যেই কাজ করছে এমন ভাবনা। এসব দেশের অনেক লোকই ব্রিটেনের রাজতন্ত্রকে আর তাদের রাষ্ট্রের শীর্ষে দেখতে চাইছে না।

মাত্র কিছুকাল আগেই বারবাডোজ ব্রিটিশ রাজতন্ত্র এবং ঔপনিবেশিক শাসনের সাথে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। তারা রানি এলিজাবেথকে তাদের রাষ্ট্রপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে পৃথিবীর নবতম প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়াও বহুকাল ধরেই প্রজাতন্ত্রে পরিণত হবার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে আসছেন ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মত আরো কিছু দেশের অনেকে।

বারবাডোজ প্রজাতন্ত্রে পরিণত হবার পর সংবাদমাধ্যমে বিশ্লেষকরা বলেছেন এটা এক ডমিনো এফেক্ট সৃষ্টি করতে পারে – অর্থাৎ অল্প কিছুকালের মধ্যেই হয়তো আরো অনেক দেশই ব্রিটেনের রাজাকে তাদের রাষ্ট্রপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দিতে পারে, বিশেষ করে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে।

এমনকি খোদ ব্রিটেনেও এমন লোকের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে – যারা রাজতন্ত্রের বিলোপ চান, যুক্তরাজ্যকে একটি প্রজাতন্ত্রে পরিণত করতে চান।

বারবাডোজ কীভাবে প্রজাতন্ত্র হলো

গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে এক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বারবাডোজ পৃথিবীর নবতম প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয় এবং রাষ্ট্রপ্রধানের পদ থেকে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে সরিয়ে দেয়। অনুষ্ঠানে রাজকীয় পতাকাকে শেষ বারের মত সালাম দিয়ে তা নামিয়ে বারবাডোজের পতাকা ওড়ানো হয়।

সম্মানিত অতিথি হিসেবে তৎকালীন প্রিন্স অব ওয়েলস যুবরাজ চার্লসও এতে যোগ দিয়েছিলেন, আর শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছিলেন রানি।

বারবাডোজ ছিল ইংল্যান্ডের প্রথম দাস কলোনি। ইংলিশ অভিবাসীরা প্রথম ১৬২৭ সালে দ্বীপটি দখল করে এবং ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণে এটিকে একটি আখ আবাদ ও চিনি উৎপাদনের কেন্দ্রে পরিণত করে। এখানে কাজ করার জন্য আফ্রিকা থেকে দাস হিসেবে লোক নিয়ে আসা হয়।

পরে ১৮৩৪ সালে দেশটিতে দাসপ্রথা বিলোপ করা হয়,আর ১৯৬৬ সালে দেশটি পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করে। তবে সাংবিধানিক রানি হিসেবে বহাল থাকেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। পরে ১৯৯৮ সালে একটি সাংবিধানিক কমিশন দেশটিকে প্রজাতন্ত্রে পরিণত করার সুপারিশ করে।

ঔপনিবেশিক যুগের অবসান

তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে অনেক দেশই ঔপনিবেশিক শাসন ও রাজতন্ত্রের সাথে সম্পর্ক পুরোপুরি ছিন্ন করে প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয় এবং রাষ্ট্রপ্রধান বা প্রেসিডেন্ট হিসেবে একজন নির্বাচিত ব্যক্তিকে গ্রহণ করে। উপমহাদেশে ভারত ১৯৪৭ সালে স্বাধীন হলেও প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয় ১৯৫০ সালে, পাকিস্তান হয় ১৯৫৬ সালে।

ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ১৯৭০-এর দশকে গায়ানা, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো এবং ডমিনিকা তাদের রাষ্ট্রপ্রধানের পদ থেকে ব্রিটেনের রানিকে সরিয়ে দেয়। এছাড়া ফিজি প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয় ১৯৮৭ সালে, আর মরিশাস ১৯৯২ সালে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।