বেশ কিছুদিন ধরেই একটি গ্রুপের ছিনতায়ের ঘটনা প্রশাসনকে ভাবিয়ে তুলেছিলো। পুলিশের ডিবি পরিচয়ে অভিনব কায়দায় গ্রুপটি চালাচ্ছিলো ছিনতাই ডাকাতির ঘটনা।
গত ১৭ আগস্ট ডিবি পরিচয়ে একদল দুর্বৃত্ত এক কাপড় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫৫ হাজার টাকা ছিনতাই করলে ঘটনার সূত্রপাত হয়। নড়ে চড়ে বসে বসে প্রশাসন। এ সূত্র ধরেই দলটিকে শনাক্ত ও দলের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ডিবি পরিচয়ে দলটির ছিনতাই ডাকাতির ঘটনা এটিই প্রথম না, এ পরিচয়ে ১১ জনের একটি দল নিয়মিত ছিনতাই–লুটপাটের ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে জানা যায় কোতোয়ালি থানায় করা মামলার এজাহার সূত্রে।
গ্রেপ্তার কৃত ভূয়া ডিবি পরিচয়ের ১১ জন হলোঃ মো: রমজান (২৭), মো: সরোয়ার হোসেন ওরফে সরোয়ার খাঁ (৪৩), ইমন ওরফে কাজল কুমার দে (২৮), মো: দুলাল (৩৮), মো: আমির (৩৮), মোঃ নাছির হাওলাদার (২৮), মোঃ ইকবাল (৩৪), মোঃ সোহাগ খান (২৩), মোঃ জাকির হোসেন (৩৮), মোঃ সুমন (৩০) ও মো: আনোয়ার গুলদার (৪২)।
সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) মো. সাইফুল আলম মুজাহিদ জানান, “এরা ১১ জন গ্রুপ তৈরি করে প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলায় ঠিক করে নিত, কোন এলাকায় ছিনতাই করবে। সে অনুযায়ী নির্দিষ্ট এলাকায় অবস্থান নিয়ে টার্গেটকে অনুসরণ করত। তারপর ডিবির পরিচয় দিয়ে টার্গেটের দেহ তল্লাশি করার নাম করে টাকাপয়সা ও মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নিত।” এভাবেই চলতো তাদের অপরাধের কার্যক্রম।
ছিনতাইকারী সদস্যের মধ্যে প্রথম গ্রেফতার হয় মোঃ সোহাগ। কাপড় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে যে জায়গায় ছিনতাই হয়েছিল তার আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে সংগ্রহ করে রায়সাহেব বাজার মোড় থেকে ১৯ শে আগস্ট মোঃ সোহাগ-কে গ্রেফতার করা হয়। পরে সোহাগের দেয়া তথ্য মতে পুলিশ ঐ দিনই গাজীপুর জেলার টঙ্গী থানার দত্তপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের অন্য সদস্য ইকবাল, জাকির ও সুমনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ২০ আগস্ট ভোরে টঙ্গীর চেরাগ আলী থেকে সরোয়ার খাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সরোয়ারকে নিয়ে পল্টন ও নর্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের অনান্য সদস্য দুলাল, আনোয়ার, আমির, নাসির, ইমন ও রমজানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেফতার করার সময় তাঁদের কাছ থেকে দুটি ডিবি জ্যাকেট, এক জোড়া হাতকড়া ও ছিনতাইকৃত নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।
ইতিমধ্যে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সোহাগ, ইকবাল ও দুলাল আদালতে নিজেদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অন্য আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।