ঢাকারবিবার , ১৫ নভেম্বর ২০২০
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হেফাজত ইসলামের সন্মেলন শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিতঃ নতুন কমিটির নাম ঘোষনা।নতুন আমীর বাবুনগরী, মহাসচিব কাসেমী

ইউনুস মিয়া,চট্টগ্রাম
নভেম্বর ১৫, ২০২০ ৭:২৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন বলে দাবিদার এবং নানা ঘটনায় বহুল আলোচিত হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর সদর দপ্তর হিসেবে পরিচিত হাটহাজারী দারুল উলুম মাদ্রাসায় রবিবার প্রথম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সন্মেলনে হেফাজতে ইসলামের আমীর নির্বাচিত হয়েছেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, সংগঠনটির মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী এবং সাংগঠনিক পদে আল্লামা মাহফুজুল হক ইসলামাবাদী।

হেফাজতের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং কেল্লা হিসাবে পরিচিত দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসার মিলনায়তনে রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় এ প্রতিনিধি সন্মেলন শুরু হয় এবং জুহুরের আগেই প্রথম অধিবেশন শেষ হয়। পরে বাদে জোহর দ্বিতীয় অধিবেশনে হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষনা করা হয়।

এ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সন্মেলন আল্লামা মহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এ সন্মেলনে দেশের ৬৪ জেলা থেকে প্রতিনিধিরা স্বতস্ফূর্ত ভাবে অংশ গ্রহণ করেন। দীর্ঘ তিন ঘন্টা ব্যাপী অনুষ্ঠিত এ সন্মেলনে প্রতিনিধি ছাড়াও শত শত নেতা-কর্মী ওই মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে সমবেত হন।

বেলা ২ টায় দ্বিতীয় অধিবেশনে ঢাকা থেকে আগত হেফাজতের প্রতিনিধি মাওলানা মুফতি মাহফুজুল হক নতুন এ কমিটির ঘোষনা দেন। এ ঘোষনার পর শত শত নেতা-কর্মী আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। অনুষ্ঠিত হেফাজতের এ সম্মেলনে ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া,আল্লামা মহিব্বুল্লাহ বাবু নগরীকে প্রধান উপদেষ্টা করে ২৪ সদস্য বিশিষ্ঠ হেফাজতের উপদেষ্টা কমিটির নামও ঘোষনা করা হয়।
সন্মেলনের শুরুতেই সাবেক কমিটি বিলুপ্তির ঘোষনা করা হয়।

তবে এই সম্মেলনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রয়াত আল্লামা আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীর সমর্থকরা। তারা বলছেন, সম্মেলনের পুরো প্রক্রিয়াটিই অবৈধ। তাদের সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলেও জানিয়েছিলেন তারা।

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই হেফাজতের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। শাপলা চত্ত্বরের ঘটনার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেসময় তাঁকে দীর্ঘ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে জামিনে মুক্তি পান তিনি।

সংগঠনটির প্রয়াত আমির আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর পর এ সম্মেলনকে ঘিরে সংগঠনটিতে দেখা দেয় চরম টানাপোড়েন। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়কালে কে বা কারা হাটহাজারী মাদ্রাসার মূল ফটকের বাইরে নানা ধরনের রহস্যময় লিফলেট ছাড়ে।

জানা গেছে, যখন মুসল্লিরা জুমার নামাজ আদায় করে মাদ্রাসার বাইরে বের হচ্ছিলেন ; ঠিক ওই মুহূর্তে চোখে পড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নানা ধরনের রঙিন লিফলেট। লিফলেটে কারো নাম ঠিকানা না থাকলেও এসব লিফলেট গুলোতে জুনায়েদ বাবুনগরী ও দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর পুত্র শামীম বিন সাঈদীর একটি ছবি দিয়ে হাটহাজারী মাদ্রাসায় মানবতাবিরোধী সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাঈদীপুত্র শামীম সাঈদীর আনাগোনা কিসের ইঙ্গিত বলে প্রশ্ন তুলে।

এছাড়াও হেফাজতে ইসলামকে হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রভাবমুক্ত করতে আল্লামা শফীর ঘনিষ্ঠদের বাদ দিয়ে হেফাজতের কমিটি করতে জামায়াত-শিবির ষড়যন্ত্র করছে বলেও এসব লিফলেটে দাবি করা হয়। অন্য একটি লিফলেটে লেখা হয়েছে, ধর্মপ্রাণ ও অরাজনৈতিক হেফাজতকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের ষড়যন্ত্রে মরিয়া জামায়াত-বিএনপি।

এ ব্যাপারে জানতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, অতীতে যারা হেফাজত নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে, হেফাজতকে বিলীন করার চেষ্টা করেছে এটা তাদেরই কাজ। তৌহিদী জনতা এখন সব বুঝে, কোন ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না।

এদিকে, জুনায়েদ বাবুনগরী ও দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর পুত্র শামীম বিন সাঈদীর ‘বৈঠক’ প্রসঙ্গে এর আগে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছিলেন, সেটা আদৌ জামামাত-শিবিরের কোন মিটিং ছিল না। এটা ছিল এসএমএম কুরিয়ার সার্ভিস নামের একটি কোম্পানির ইফতার মাহফিল, যেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের অনেক রাজনৈতিক নেতাও সেখানে ছিলেন।

জুনায়েদ বাবুনগরী দাবি করেন, ওই ইফতার মাহফিলে শামীম সাঈদীর উপস্থিতিতে তিনি বিব্রতবোধ করেছিলেন। মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীও শামীম সাঈদী উপস্থিত হওয়ায় বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন।

তিনি ওই সময় বাবুনগরী পায়ের কাছে বসেন। তিনি পাশে বসা অবস্থায় ওনার এক সহকারী সকলের অজান্তে দুজনের একটি ছবি তুলে ফেলেন। বিষয়টা জানতে পেরে বাবুনগরী প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হন এবং ছবিটি মুছে ফেলতে বলেন। কিন্তু শামীম সাঈদী বললেন, ছবিটা শুধু স্মৃতি হয়ে থাকবে, অন্য কিছু না।

অন্যদিকে, শুক্রবার বিকালে এ ব্যাপারে হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সম্মেলন (কাউন্সিল) বাস্তবায়ন কমিটির অন্যতম সদস্য মাওলানা মীর ইদরিস এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি কুচক্রি মহল হেফাজতকে বিতর্কিত করতে উঠে পরে লেগেছে। তারাই হেফাজতের কাউন্সিল বানচাল করতে নানা যড়ষন্ত্রে করেছিল ।

হেফাজতে ইসলামের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে যে সম্মেলন আহ্বান করা হয়েছে, তার কোনো বৈধতা নেই বলে দাবি করছেন আনাস মাদানী পক্ষের অনুসারীরা ।এতে হেফাজতে ইসলামের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম আর থাকবে না বলে মনে করছেন প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর পক্ষীয়রা।

আহুত সন্মেলন প্রাণবন্ত ও অবাধ করার জন্য সারাদেশের জেলা প্রতিনিধিসহ প্রায় পাঁচশ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এতে প্রয়াত আমির আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানিসহ অনুসারীরা কাউন্সিলের দাওয়াত পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।

হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাঈনুদ্দীন রুহী বলেন, “যিনি (মহিবুল্লাহ বাবুনগরী) কাউন্সিল আহ্বান করেছেন, তিনি হেফাজতের কেউ নন। তিনি তো হেফাজত থেকে পদত্যাগ করেছেন। হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির শাহ আহমদ শফীর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন, এমনকি হেফাজতের বিরুদ্ধেও বক্তব্য দিয়েছেন।”

সম্মেলনে আনাস মাদানীসহ তার অনুসারীরা দাওয়াত না দিলেও প্রয়াত শফীর বড় ছেলে মোহাম্মদ ইউসুফকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।