ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৬ নভেম্বর ২০২৩
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

অহঙ্কার হেদায়েত লাভের পথে অন্তরায়

নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ১৬, ২০২৩ ৩:১৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

অবশ্যই আমি আমার নিদর্শনাবলি থেকে তাদেরকে বিমুখ করে রাখব, যারা পৃথিবীতে অহংকার করে বেড়ায়, যার অধিকার তাদের নেই। তারা সব রকমের নিদর্শন দেখলেও তাতে ঈমান আনবে না। তারা যদি হেদায়েতের সরল পথ দেখতে পায়, তবে তাকে নিজের পথ হিসেবে গ্রহণ করবে না, আর যদি গোমরাহীর পথ দেখতে পায়, তাকে নিজের পথ বানাবে। কারণ তারা আমার নিদর্শনসমূহ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং তা থেকে বিলকুল গাফেল হয়ে গেছে। (সূরা আ’রাফ : ১৪৬)।
বিনয় হলো ফেরেশতাদের গুণ। আর শয়তানের স্বভাব হলো অহংকার। অহংকারের কারণে শয়তানকে জান্নাত থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। অতএব অহংকারসহ জান্নাতে কারো থাকার বা প্রবেশের সুযোগ নেই। আল্লাহর কাছে থাকেন যে ফেরেশতা দল তাদের মধ্যে তিল পরিমাণও অহংকার নেই। তাঁর ইবাদত-বন্দেগী করতে, তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলতে তারা কখনো কুণ্ঠাবোধ করেন না; বরং দিন-রাত তাঁর তাসবীহ পাঠেই তারা মগ্ন থাকেন।

‘যারা তোমার রবের সান্নিধ্যে রয়েছে তারা তো তাঁর ইবাদত থেকে অহংকারে মুখ ফেরায় না। তারা তাঁর তাসবীহ পাঠ করে, তাঁকেই সিজদা করে।’ (সূরা আ‘রাফ : ২০৬)। সত্যিকার মুমিন যারা, তাদের মাঝেও থাকে বিনয় ও আদবের এই গুণ। তাই আল্লাহর বিধানের সামনে তারা মাথা নুইয়ে দেয়। যেখানে আল্লাহর যা হুকুম, তা সর্বান্তকরণে মেনে নেয়।

তাঁদের এই গুণের বিবরণ এসেছে কুরআন কারীমের এই আয়াতটিতে : মুমিন তো তারাই, (যাদের সামনে) আল্লাহকে স্মরণ করা হলে তাদের হৃদয় ভীত (ও কম্পিত) হয়, যখন তাদের সামনে তাঁর আয়াতসমূহ পড়া হয়, তখন তা তাদের ঈমানের উন্নতি সাধন করে। আর তারা ভরসা করে শুধুই তাদের প্রতিপালকের ওপর। (সূরা আনফাল : ২)।

পক্ষান্তরে, যারা কাফের, যারা শয়তানের অনুসারী, তাদের মধ্যে অহংকার ও ঔদ্ধত্য থাকে প্রবল। তাদের হেদায়েতের পথে ডাকা হলে অহংকারে তাদের নাক উঁচু হয়ে যায়। পার্থিব উপায়-উপকরণে কিংবা যশ-খ্যাতি ও সামাজিক মর্যাদায় অগ্রগণ্য হওয়ার কারণে সত্যের বাহক নবীদের তারা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে। যেন ভাবখানা এই, সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায় বোঝানোর এরা আবার কে?

আমরা সমাজপতি আমরাই বুঝব, কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল…। এই অহংবোধের কারণেই সব যুগের নেতৃস্থানীয়রা হেদায়েত লাভে বঞ্চিত হয়েছে। আল্লাহ সত্য, রাসূল সত্য, আখেরাত সত্য এবং রাসূল যে দ্বীন ও শরীয়ত নিয়ে এসেছেন তা সত্য… এই স্বীকারোক্তি তাদের নসীব হয়নি…। নবী ও রাসূলের দাওয়াত যে হক, এর পক্ষে তারা প্রমাণ দাবি করেছে। একেক কওম একেক রকম দাবি জানিয়েছে। নবীরা সেই প্রমাণও পেশ করেছেন। কিন্তু তারা প্রমাণ পেয়েও নিজেদের কুফর ও শিরকে অটল থেকেছে। ইসলাম কবুল করেনি।

এই যে সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ার পরও তারা সত্যকে গ্রহণ করতে পারল নাÑ এটা আসলে তাদের অহংবোধের শাস্তি। অহংকারবশত সত্যকে প্রত্যাখ্যানের সাজা। যারা অহংকারবশত সত্যের পয়গাম ও তার বাহককে অস্বীকার করবেÑ হাজারটা নিদর্শন দেখলেও তাদের কপাটবদ্ধ হৃদয় খুলবে না। তাদের ওই অপরাধের কারণে আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর এঁটে দেন। ফলে সত্যের বার্তা সেখানে কোনোক্রমেই পৌঁছাতে পারে না।

চিরদিনের জন্য তাদের অন্তরে তালা পড়ে যায়। কোনো নিদর্শনই তাদের হৃদয়মনকে নাড়া দিতে পারে না। না কুরআনের আয়াত, না চোখের সামনে খোলা জগতের বিশাল পৃষ্ঠা। কোনো কিছুই তাদের মধ্যে রাব্বুল আলামীনের চিন্তা জাগ্রত করে না…। তাদের নীতিই এমন হয়ে যায় যে, হেদায়েতের পথ দেখতে পেলে সেদিকে মোটেও ভ্রুক্ষেপ করে না। আর যে পথ তাদের বিপথগামী করে, তাদেরকে নিয়ে যায় জাহান্নামে, সে পথ দেখামাত্র তাতে পথ চলতে শুরু করে। এটা মূলত তাদের সেই অহংকারেরই সাজা। দম্ভভরে সত্য ও তার বাহককে প্রত্যাখ্যানের পরিণাম।

যুগে যুগে যত নবী ও রাসূল এসেছেন, তাদের কওমের নেতৃস্থানীয় ও গণ্যমান্য লোকেরা এই ব্যাধিরই শিকার ছিল, যার সাজাও তারা পেয়েছে। হেদায়েত তো নসীব হয়ইনি; একসময় কঠিন আযাব দিয়ে তাদের ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা সত্যকে অস্বীকারে তারা যেসব ঔদ্ধত্যপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করেছেÑ কুরআনের বিভিন্ন সূরায় বারবার আল্লাহ তা’আলা তা বিভিন্ন আঙ্গিকে উল্লেখ করেছেন এবং এই ঔদ্ধত্যের কী ভয়াবহ পরিণাম হয়েছিল, তারও বিবরণ দিয়েছেন। সূরা আ’রাফেও আছে এর একটি বিশদ বয়ান।

সূরা আ’রাফের এই আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন তাঁর এক সুন্নাত ও অমোঘ বিধানের কথা। সেটা এই যে, যারা অহংকার ও দম্ভভরে নবীদের মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে, আল্লাহর কিতাব ও শরীয়ত থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে, আল্লাহও তাদের ফিরিয়ে রাখেন তাঁর আয়াত ও সুস্পষ্ট প্রমাণ থেকে। তাঁর নাযিলকৃত কিতাব উপলব্ধির তাওফীক থেকে। তাঁর সৃষ্টিজগতের মাঝে রেখে দেয়া নিদর্শনাবলি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা থেকে। ফলে তারা দেখেও দেখে না, শুনেও শোনে না। সত্য ও তাদের মাঝে তৈরি হয়ে যায় এক অদৃশ্য দেয়াল, যা ডিঙিয়ে তারা সত্য পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।