ঢাকাসোমবার , ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ক্ষমতায় আসার ছক আগেই করে রেখেছেন সিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ১১, ২০২৩ ২:০৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

আরব বসন্তের গণবিক্ষোভে মিশরের দীর্ঘকালের শাসক হোসনি মোবারকের পতন হলে, ২০১২ সালে বিপুল ভোটে দেশটির প্রথম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হন মুসলিম ব্রাদারহুড নেতা মোহাম্মদ মুরসি। তবে মাত্র এক বছর ক্ষমতায় থাকাতে পেরেছেন তিনি। ২০১৩ সালে সেনা অভ্যুত্থানে পতন ঘটে মুরসি সরকারের। ক্ষমতায় আসেন মুরসির পছন্দে বসানো সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। এরপর ২০১৮ সালে কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক নির্বাচনের মধ্যদিয়ে দ্বিতীয় দফায় আবারও নির্বাচিত হন সিসি।

১০ ডিসেম্বর থেকে মিশরে তৃতীয় মেয়াদের নির্বাচন শুরু হয়েছে। প্রতিবেশী গাজায় যুদ্ধ এবং ক্ষয়িষ্ণু অর্থনীতির মধ্য দিয়ে সময় পার করছে মিশর। এরকম পরিস্থিতিতে হতে যাওয়া নির্বাচনে আবারও ক্ষমতায় আসছেন সিসি, তার পূর্বাভাস দেশটির একাধিক জরিপের ফলাফলে এসেছে। কারণ মিশরে প্রবল ক্ষমতাধর সিসিকে চ্যালেঞ্জ করার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এখনো হয়নি।

মিশরে সাধাণরত দুই দফায় মিসরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম দফায় কোনো প্রার্থী যদি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারে, তাহলে আবার ভোটগ্রহণ করা হয়। সরাসরি সর্বজনীন ভোটে ছয় বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এই ছয় বছরের মেয়াদে শুধু একবার এই পদের নবায়ন করা হয়। তবে মিশরের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪০-এর অনুযায়ী, পরপর দুই মেয়াদের বেশি কোনো প্রেসিডেন্টের দেশ শাসনের বিধান ছিল না। কিন্তু ২০১৯ সালে সংবিধান সংশোধন করে সিসি প্রেসিডেন্টের মেয়াদ চার থেকে ছয় বছর বাড়ানোসহ তৃতীয় মেয়াদে কোনো প্রেসিডেন্টকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বৈধতাও সৃষ্টি করেন।

ক্ষমতা দখলের পর সিসির নিষ্ঠুর আচরণ

২০১৩ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে সামরিক বাহিনী মুরসিকে সংকট সমাধানে আল্টিমেটাম দেয়। মুরসি তা মানতে অস্বীকার করেন। এরপর তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এ ঘটনার চার মাস পর মুসলিম ব্রাদারহুড আন্দোলনের আরও ১৪জন ঊর্ধ্বতন নেতার সঙ্গে মোহাম্মদ মুরসির বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। একজন সাংবাদিক ও দুইজন সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীকে হত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয় মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগে কয়েক হাজার মুরসি সমর্থককে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয় সিসি সরকার। কারাগারে বন্দী আছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। মুসলিম ব্রাদারহুডের অস্তিত্ব মুছে ফেলার মিশনে নামেন সিসি। ব্রাদারহুড নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক নিপীড়ন-নির্যাতন নেমে আসলে অনেকে কাতার ও তুরস্কে পালিয়ে যান।

২০১৫ সালের জুন মাসে একটি মামলায় মুরসিকে মৃত্যুদণ্ড দেয় মিশরের নিম্ন আদালত। বিচার প্রক্রিয়ার শুরু থেকে মুরসি আদালতকে বলে আসছিলেন, তিনি সেনা অভ্যুত্থানের শিকার এবং তার বিচার করার বৈধতা এ আদালতের নেই। পরে হত্যার অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়, কিন্তু বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার ও দমনের অভিযোগে তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। পরবর্তীতে মুরসির বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ আনা হয়, এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। যদিও পরে সে রায় বাতিল করা হয়েছিল। ২০১৯ সালের ১৭ জুন মিসরের একটি আদালতের এজলাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ৬৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন মো. মুরসি।

ইসরায়েলের সঙ্গে সিসির সখ্যতা

মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি ইসরাইলের সঙ্গে সিনাই উপদ্বীপে গভীর নিরাপত্তা সহযোগিতার কথা স্বীকার করে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। ২০১৯ সালে মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিবিএস’র সিক্সটি মিনিট অনুষ্ঠানে তিনি এ সাক্ষাতকার দেন। সিসি বলেছিলেন, যেকোনো সময়ের চেয়ে ইসরাইলের সঙ্গে মিশরের সম্পর্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও গোলযোগপূর্ণ সিনাই উপদ্বীপে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানে মিশরের সেনাদের সঙ্গে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী সহযোগিতা করছে বলেও স্বীকার করেন নেন তিনি।

দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে মিশর সরকার সাধারণত গোপনীয়তা রক্ষা করে চলে। তবে সিসির শাসনামলে সিনাই উপদ্বীপে মিসরের সেনাবাহিনী যে ইসরাইলি সেনাদের সহযোগিতা নিচ্ছে, তা অনেকটা প্রকাশ্য বিষয়।

মাঝেমধ্যে মিশরীয় বিমান বাহিনীকে অভিযানের জন্য ইসরাইলের আকাশসীমায় প্রবেশ করেতে হয়। এজন্য ইসরাইলের সঙ্গে মিশরের সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা করতে হয়েছে বলে জানান সিসি। ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করা তার দেশের জন্য খুবই স্পর্শকাতর ও বিধ্বংসী ইস্যু।

গত দশ বছরের মধ্যে প্রথমবার ২০২১ সালে সরকারি আমন্ত্রণে মিশর যান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি’র সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও ফিলিস্তিনের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়। মিশর কয়েক দশকের শত্রুতা শেষে ১৯৭৯ সালে ইসরাইলের সঙ্গে প্রথম কোনো আরব দেশ হিসেবে শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করে।

নির্বাচন

রাজধানী কায়রোয় প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির ছবিযুক্ত বিলবোর্ড-পোস্টারে রাস্তা ছেয়ে গেছে। রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত অনুষ্ঠিত নির্বাচনের প্রচারে অন্য কোনো প্রার্থীর উপস্থিতি টের পাওয়া দুষ্কর। ৬৯ বছর বয়সী সাবেক এই সেনাপ্রধান ‘বিরোধীশূন্য’ মাঠে আরেক মেয়াদে ক্ষমতায় যাবার যাবতীয় বন্দোবস্তই পাকা করেছেন। তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, সিসির প্রচারের এসব ব্যানার-ফেস্টুনের অর্থ জোর করে সংগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে।

এবারের নির্বাচনে সিসি ছাড়াও লড়ছেন আরও তিনজন। তারা হলেন- ওয়াফদ পার্টির নেতা আবদেল সানাদ ইয়ামামা এবং মিসরীয় সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা ফরিদ জাহরান এবং রিপাবলিকান পিপল পার্টির নেতা হাজেম ওমর। তবে এসব নেতাদের কেউ মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেননি।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।